কিছু দিন হল সেনসেক্স ফের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন ঘোরাফেরা করছে ৬০ হাজারের চৌহদ্দিতে। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত সূচকটির অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। দেশে অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগায় এবং সেই কারণে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ফের ভারতে শেয়ার কিনতে শুরু করায় অগস্টে আবার ঊর্ধ্বমুখী বাজার। গত শুক্রবার সেনসেক্স ছিল ৫৯,৭৯৩ অঙ্কে। বিএসই-তে সব শেয়ারের মোট মূল্য দাঁড়ায় রেকর্ড ২৮৩ লক্ষ কোটি টাকায়। মাথা তুলেছে ঝিমিয়ে পড়া একুইটি বা শেয়ার ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ডের ন্যাভও। তবে মূল্যবৃদ্ধি এখনও লগ্নিকারীদের পথের কাঁটা। এর হার আরও বাড়লেই সুদ চড়বে। যা আর্থিক বৃদ্ধির রাস্তা আটকাবে। অগস্টে দেশের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার কত ছিল, তা জানা যেতে পারে আজ বিকেলে। সকলে সে দিকে চোখ রেখে বসে।
১৭ জুন ৫১,৩৬০-এ নেমেছিল সেনসেক্স। একুইটি ফান্ডগুলির ন্যাভও পড়ে। রিটার্নের সম্ভাবনা কমায় হারাতে শুরু করে আকর্ষণ। ফলে অগস্টে তাতে লগ্নি দাঁড়ায় ১০ মাসে সর্বনিম্ন, ৬১২০ কোটি টাকা। জুলাইতে ছিল ৮৮৯৮ কোটি। অথচ গত এক বছরে ফান্ডে নিয়মিত মোটা লগ্নি শেয়ার সূচককে উত্থানের শক্তি জুগিয়েছে।
কেন্দ্র এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, ভারতীয় অর্থনীতির ভিত মজবুত। সেই আশাতেই ১৮ অগস্ট সেনসেক্স ফের ৬০,২৯৮ অঙ্কে ওঠে। আশা, উৎসবের মরসুমে পণ্যের চাহিদা বাড়বে। তার প্রতিফলন ঘটবে সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে সংস্থার আর্থিক ফলে। তা ভাল হলে সূচক চাঙ্গা থাকবে। বাড়বে একুইটি ফান্ডে লগ্নি। যা শক্তি জোগাবে বাজারে। আচমকা বিদেশ থেকে বড় ধাক্কা না এলে সূচক ও ফান্ডের ন্যাভে রেকর্ড উচ্চতা দেখা যেতে পারে।
গত সপ্তাহে অর্থনীতির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি ছিল—
- অগস্টে পরিষেবা শিল্পে অগ্রগতি।জুলাইয়ের ৫৫.৫ থেকে বেড়ে তার পিএমআই সূচক হয়েছে ৫৭.২ অঙ্ক।
- সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ কর আদায় ৩৫.৪৬% বৃদ্ধি। তা পৌঁছেছে ৬.৪৮ লক্ষ কোটি টাকায়।
- দেশে ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের সংখ্যার ১০ কোটি ছাড়ানো। অগস্টেই খুলেছে ২২ লক্ষ। কোভিড হানার আগে ছিল ৪ কোটি। লগ্নিকারীরা যে বাজারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন, তা স্পষ্ট।
- গরম এবং ধান উৎপাদনকারী অঞ্চলে স্বল্প বৃষ্টির কারণে দেশে চাল উৎপাদন কমবে বলে আশঙ্কা। দেশীয় বাজারে জোগান ঠিক রেখে দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই কয়েক ধরনের চাল রফতানিতে বসেছে শুল্ক।
- সপ্তাহ শেষে বন্ডের ইল্ড কমে হয়েছে ৭.১৬%। মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা কমায় ও বন্ড ইল্ড মাথা নামানোয় ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার বাড়ার আশা রইল না। বরং অগস্টের মূল্যবৃদ্ধি নীচে নামলে সুদ কমার আশঙ্কা।
(মতামত ব্যক্তিগত)