নজর: চোখ বাজেটে। বিএসই-র সামনে লগ্নিকারীরা। রয়টার্স
বাজেটে খুশি হল শেয়ার বাজার। বুধবার এক সময় প্রায় ১২০০ পয়েন্টেরও বেশি লাফাল সেনসেক্স। কিন্তু সেখানে থিতু হতে পারল না। ৬০,৭৭৩.৪৪ অঙ্ক থেকে দিনের শেষে নামল ৫৯,৭০৮.০৮-এ। সোমবারের থেকে যা মাত্র ১৫৮ বেশি। তার পরেই মাথা তুলল প্রশ্ন, তা হলে কি বাজেট বিশ্লেষণ করতে বসে প্রাথমিক উৎসাহ নিভে যাওয়ার মতো কিছু চোখে পড়েছে লগ্নিকারীদের? নাকি অনিশ্চিত বিশ্ব বাজারের আবহে মুনাফা ঘরে তুলতে দেরি করতে চাননি কেউ?
বিশেষজ্ঞদের দাবি, অনেকে মুনাফা ফেলে রাখার ঝুঁকি নিতে চাননি ঠিকই। তবে বাজেটের কারণে সূচক নামেনি। তাঁদের একাংশ বরং আঙুল তুলছে আদানি গোষ্ঠীর মুখ থুবড়ে পড়া শেয়ারের দিকে। এ দিনও সেগুলিতে কার্যত ধস নামিয়েছে আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের তোলা প্রতারণার অভিযোগ। আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের শেয়ার দর নামে ২৮%। বাকি সংস্থাগুলিরও কমবেশি একই হাল ছিল। এই নিয়ে পাঁচ দিনে ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার সম্পদ হারালেন আদানির সংস্থায় লগ্নিকারীরা। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় আগরওয়াল বলেন, ‘‘তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারে কারচুপির অভিযোগই ভারতীয় লগ্নিকারীদের অস্থির করছে। আদানি গোষ্ঠী একাই পুরো বাজারকে নড়বড়ে করে তুলেছে। বন্ধক হিসেবে সংস্থার শেয়ার নিতে অস্বীকার করেছে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ব্যাঙ্ক।’’
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, সূচকের নামার অন্য কারণও আছে। যেমন আশিস নন্দীর মতে, সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে আমেরিকা, জাপান, ব্রিটেন-সহ উন্নত দুনিয়ার শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলির সিদ্ধান্ত শীঘ্রই জানা যাবে। এর উপর অনেকখানি নির্ভর করছে বাজারের গতিপ্রকৃতি। তারা ফের চড়া হারে সুদ বাড়ালে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাই লগ্নিকারীরা বেশি সময় শেয়ার ধরে রাখার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। তার উপরে ভারতে শেয়ারের দাম অনেক দেশের থেকে বেশি। এটাও তড়িঘড়ি লাভ ঘরে তোলার কারণ।
তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, বাজেটের হাত ধরে আগামী দিনে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হবে। বণিকসভা ভারত চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নরেশ পাচিসিয়া বলেন, লগ্নিকারীর পক্ষে ক্ষতিকারক কোনও প্রস্তাব দেননি অর্থমন্ত্রী। উল্টে দীর্ঘ মেয়াদে লাভের রসদ জুগিয়েছেন। আর্থিক সংস্থা পিয়ারলেসের এমডি জয়ন্ত রায়ের কথায়, ‘‘পরিকাঠামো উন্নয়নে ১০ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নি ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৬৬% বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে আবাসন-সহ পরিকাঠামো শিল্প চাঙ্গাহবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। যা অর্থনীতি ও লগ্নিকারীদের জন্য সুখবর। আয়কর সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও করদাতার হাতে খরচের জন্য অর্থের জোগান বাড়বে। যার একাংশ শেয়ারে আসবে।’’
যদিও ত্রস্ত বিমা শিল্প। আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলছেন, ‘‘যে নতুন কর কাঠামোয় জোর দিচ্ছে কেন্দ্র, তাতে করছাড়ের সুবিধা পাবেন না করদাতারা। ফলে বিমার প্রিমিয়ামে করছাড় পেতে প্রকল্প কেনার উৎসাহে ভাটা পড়তে পারে। একই কারণে মার খেতে পারে গৃহঋণের বাজার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy