ছবি এএফপি।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের বার্ষিক মানবসম্পদ সূচকে ১৭৪টি দেশের মধ্যে ১১৬তম স্থানে রয়েছে ভারত। ২০১৮ সালের নিরিখে নম্বর সামান্য বাড়লেও (০.৪৪ থেকে ০.৪৯) ক্রমতালিকায় ভারত এক ধাপ পিছিয়েছে। সে বছর ১৫৭টি দেশের মধ্যে তার স্থান ছিল ১১৫ নম্বরে। বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, কেন্দ্রের নেতা-মন্ত্রীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যতই উন্নয়নের দাবি করুন না কেন, আন্তর্জাতিক, বেসরকারি, এমনকি সরকারি বিভিন্ন তথ্য ও পরিসংখ্যানে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তা সে জিডিপির হিসেবই হোক বা কর্মসংস্থানের অথবা হোক অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিশ্বের ৯৮% মানুষকে নিয়ে মানবসম্পদ সূচকের রিপোর্টের কাজ বিশ্ব ব্যাঙ্ক শেষ করেছে মার্চে। তখনও করোনা সংক্রমণ বিশ্বকে এতটা ঝাঁকুনি দিতে পারেনি। আর এখন সংক্রমণের নিরিখে ব্রাজিলকে ছাপিয়ে ভারত উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। ফলে ঝুঁকি বেড়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের বক্তব্য, অতিমারির আগের কয়েক বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে যথেষ্ট উন্নতি করেছিল উন্নয়নশীল দেশগুলি। কিন্তু সেই অগ্রগতিকে অতিমারি পুরোপুরি চুরমার করে দিয়েছে। মানবসম্পদ সূচক তৈরির কাজ করোনার আক্রমণের গোড়ার দিকে শেষ হলেও রিপোর্টে জানানো হয়েছে, অতিমারির সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে। কমবে সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কাজ। ঠিক যে বিষয়টি সম্প্রতি বারবার বলা হয়েছে পরামর্শদাতা সংস্থা সিএমআইই-র কর্মসংস্থান সংক্রান্ত রিপোর্টে। দেখানো হয়েছে করোনার প্রভাবে শহর ও গ্রামে কাজ যাওয়ার কঠিন ছবি। বেকারত্বের অবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবারও মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী।
ম্যালপাসের কথায়, ‘‘গত কয়েক দশকে স্বাস্থ্য, স্কুল শিক্ষা, আয়ু-সহ মানবসম্পদের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলিতে যে উন্নতি হয়েছিল, অতিমারি তাকে অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আর্থিক ভাবে সবচেয়ে সমস্যার মধ্যে পড়েছে বিশেষ করে মহিলারা এবং নিম্ন আয়ের পরিবারগুলি। বেড়েছে খাদ্যের অনিশ্চয়তা এবং দারিদ্র বৃদ্ধির আশঙ্কা।’’ তিনি জানান, এতে দু’ধরনের বৈষম্যের আশঙ্কা বাড়ছে বিশ্বে। প্রথমত, উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে আর্থিক ফারাক আরও বাড়বে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে আর্থিক বৈষম্য বাড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যেই।
মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচক
• নাগরিকদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা দিয়ে রাষ্ট্র ভবিষ্যতে আর্থিক ভাবে কতটা লাভবান হতে পারে, তার সূচক।
• ২০১৮ সাল থেকে এই নিয়ে দেশগুলির ক্রমতালিকা তৈরি করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
• দেশগুলিকে ০ থেকে ১-এর মধ্যে নম্বর দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে তৈরি হয় তালিকা।
• বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষার মানের উপর।
• ২০২০ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাঝারি আয়ের দেশে জন্মানো এক শিশুর সর্বোচ্চ সম্ভাবনার ৫৬% স্ফূরণ হতে পারে।
ভারতের অবস্থান
• ২০১৮ সালে ১৫৭টি দেশের মধ্যে ১১৫তম।
• ২০২০ সালে ১৭৪টি দেশের মধ্যে ১১৬তম।
• নম্বর ০.৪৪ থেকে বেড়ে ০.৪৯।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, করোনার জেরে সারা বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটি পড়ুয়ার স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়েছে। তাদের স্কুলশিক্ষার মেয়াদ কমেছে প্রায় ছ’মাস। বহু শিশুর প্রয়োজনীয় টিকাকরণ হয়নি। এ সবের সামগ্রিক প্রভাব হিসেবে সারা বিশ্ব স্থায়ী ভাবে ১০ লক্ষ কোটি ডলার আয় হারাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy