Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

আয়কর কমার জল্পনা, লাভ নিয়ে প্রশ্ন

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ বার আয়করের বোঝা কমবে বলে প্রত্যাশা তুঙ্গে।

নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র

নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৩১
Share: Save:

একটি প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যই বাজেটের দিকে তাকিয়ে থাকে আমজনতা। আয়করে কি কিছু সুরাহা মিলল?

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ বার আয়করের বোঝা কমবে বলে প্রত্যাশা তুঙ্গে। কারণ ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সদ্য কর্পোরেট করের হার কমিয়েছে মোদী সরকার। সেই পথ ধরে বাজেটে আয়করের বোঝাও কমবে বলে অনেকের আশা।

কিন্তু কী বলছে অর্থ মন্ত্রক? মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের খবর, আয়কর কমানোর সম্ভাবনার সব দিক খতিয়ে দেখছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং অর্থ মন্ত্রক। মূলত দু’টি প্রশ্ন নিয়েই ভাবনাচিন্তা চলছে। এক, আয়করের হার কমিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে বাড়তি কিছু নগদ টাকা তুলে দিলে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি চাঙ্গা হবে কি না! দুই, আয়করের বোঝা কমানোর ফলে রাজস্বের যে-ক্ষতি হবে, তার জেরে রাজকোষের ঘাটতি নাগালের বাইরে চলে যাবে কি না!

অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, আয়করের হার কমানোর পক্ষে আশার কথা হল, প্রত্যক্ষ কর বিধি সম্পর্কিত টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ। তারা কর কাঠামো পাল্টে আয়করের বোঝা কমানোর কথাই বলেছে।

এখন আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লক্ষ টাকা। আড়াই থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর ৫ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২০ শতাংশ। টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ, ২.৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করের হার ১০ শতাংশ করা হোক। এখন ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ, ১০ থেকে ২০ লক্ষ টাকা আয়ে ২০ শতাংশ, ২০ লক্ষ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত আয়ে ৩০ শতাংশ এবং তার উপরে ৩৫ শতাংশ আয়কর আদায় হোক। সরকার এই সুপারিশ পুরোপুরি মানলে মধ্যবিত্ত মানুষের বেশ খানিকটা সুরাহা হবে।

বণিকসভা ফিকি আবার সুপারিশ করেছে, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ৩ লক্ষ টাকা করা হোক।

কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ছাড় দিলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে কি? মোদী সরকারেরই প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের মতে, আয়করের হার কমিয়ে কোনও লাভ হবে না। কারণ দেশের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ আয়কর দেন। (সরকারি হিসেব বলছে, ২০১৮-১৯ সালে দেশের ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৮.৪৫ কোটি আয়কর দিয়েছেন) তাঁদের হাতে নগদের পরিমাণ সামান্য বেশি হলেও বাজারে কেনাকাটা বাড়বে না। কেনাকাটার পরিমাণ বাড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাইলে একশো দিনের কাজ বা অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে আমজনতার হাতে আরও বেশি টাকা তুলে দিতে হবে।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষের বিশ্লেষণ, আইএমএফ বলছে, আয়করের হার কমিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যাবে না। এ দেশে আয়করে ছাড়ের ফলে অনেক বেশি সুরাহা মিলবে ধনীদের। কিন্তু ধনীদের হাতে নগদ বেশি গেলেও তাঁদের কেনাকাটা বাড়বে না।

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রয়োজনের পাশাপাশি রাজকোষের টানাটানিও চিন্তায় রাখছে অর্থ মন্ত্রককে। কারণ, কর্পোরেট করের হার কমাতে গিয়ে ১.৪৫ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘চলতি বছরে আয়করে যে পরিমাণ আয়ের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তা পূরণ হবে কি না সন্দেহ। ফলে আগামী বছর আয়করে কাটছাঁট করতে গেলে সেই ঘাটতি কোথা থেকে পূরণ হবে, তার উত্তরও খুঁজতে হবে সরকারকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmala Sitharaman Income Tax Budget
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy