মোটা সঞ্চয়ের জন্য সবচেয়ে জরুরি শর্ত ভাল রোজগার। আবার প্রতিটি পদক্ষেপে অপচয় আটকানোও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিদ্যুৎ কিংবা তেলের অপচয় বন্ধ করে কী ভাবে টাকা বাঁচানো সম্ভব, খরুচে স্বভাবের মোকাবিলাই বা কী ভাবে করবেন, তা নিয়ে অতীতে আমরা আলোচনা করেছি। মনে রাখবেন, মোবাইল ফোনও এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তাই তা কেনার সময়েও সচেতনতা জরুরি।
শোরুমে গিয়ে হাজারো মোবাইল ফোনের মধ্যে থেকে যাচাই করে পছন্দেরটি হাতে তুলে নেওয়ার উত্তেজনাই আলাদা। আর বাজারে স্মার্টফোন আসার পর থেকে তো এই উত্তেজনা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ফিচার কেমন, স্ক্রিনের দৈর্ঘ কত, সহজে ব্যবহারের উপযোগী কি না, ওয়্যারান্টি কত দিনের, এক্সটেন্ডেড ওয়্যারান্টির সুবিধা রয়েছে কি না— এ সবের খোঁজখবর নেওয়া তো আছেই। সেই সঙ্গে পছন্দের ফোনটি বাজেটের মধ্যে আসছে কি না, কিংবা না এলেও অন্তত কিস্তিতে দাম মিটিয়ে স্বপ্নপূরণ সম্ভব কি না, তা-ও এখন হয়ে উঠেছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
এত সতর্কতার পরেও কিন্তু একটি বিষয় এত দিন ক্রেতার হাতের বাইরে ছিল। কোনও মোবাইল ফোন আইনি ভাবে তৈরি নাকি জাল, কেনার আগে তা বোঝার উপায় কয়েক দিন আগে পর্যন্তও তাঁর হাতে ছিল না। ফলে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা এবং দাম দেখেই মোবাইল ফোন কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হত। সম্প্রতি নতুন মোবাইল ফোনটির ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বর ব্যবহার করে তার আসল পরিচয় যাচাইয়ের সুবিধা এনেছে টেলিকম দফতর (ডট)। অন্য যে কোনও মোবাইল থেকে এসএমএস করে বা অ্যাপের মাধ্যমেও কিন্তু এই সুবিধা নেওয়া যেতে পারে।
ডটের তদন্তে দেখা গিয়েছে, অনেক সময়ে চোরাই বা অবৈধ ভাবে তৈরি মোবাইলে স্বীকৃত ফোনের আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করা হয়। ডটের নিয়ম অনুযায়ী, তা জাল করা কিংবা জেনেবুঝে সেই বেআইনি ফোন ব্যবহার করা, দু’টিই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলে ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ক্রেতা উভয়েরই শাস্তি হওয়ার কথা। অনেক ক্ষেত্রেই আবার ক্রেতা সস্তার ফোন কিনতে গিয়ে অজান্তে এই ধরনের ফোন কিনে ফেলেন। সে ক্ষেত্রে তাঁরও ঝঞ্ঝাটে পড়ার আশঙ্কা থাকে। নতুন ব্যবস্থায় এই সব সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
গোড়ার কথা
আইএমইআই কী?
• ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি।
• সিম ভিত্তিক মোবাইল পরিষেবা যন্ত্রের (মোবাইল ফোন, ট্যাব) পরিচয় জানার হাতিয়ার।
• কাজ, আইনি ভাবে তৈরি ও স্বীকৃত যন্ত্রগুলিকে চিহ্নিত করা।
• নম্বরটি দেয় মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলির আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএমএ।
• ১৫ সংখ্যার ওই নম্বরের মধ্যে নির্মাতা সংস্থার নাম, মডেল, সিরিয়াল নম্বর-সহ বিভিন্ন তথ্য থাকে।
• কখনও দু’টি যন্ত্রের নম্বর এক হয় না।
• তবে একই মোবাইলে দু’টি সিম থাকলে সেই দু’টির আলাদা আইএমইআই নম্বর হবে।
যাচাইয়ের পদ্ধতি
• যাচাই করা যাবে যে কোনও ফোনে।
• যে মোবাইলটির সম্পর্কে তথ্য দরকার সেটির আইএমইআই নম্বর এসএমএস করতে হবে। অ্যাপ ব্যবহার করে আগাম যাচাইয়ের ব্যবস্থাও (নো ইওর মোবাইল পরিষেবা) চালু করা যেতে পারে।
• ফোন কেনার আগে তা যাচাই করতে হলে ফোনের বাক্সের গায়ে লেখা আইএমইআই নম্বরটি দেখে নিন। সেই নম্বরের সাহায্যেই সেটটি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
• মোবাইলে দু’টি সিম থাকলে আইএমইআই নম্বরও দু’টি থাকবে।
• যে কোনও একটি আইএমইআই নম্বরের সাহায্যেই মোবাইলটির সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
• একই তথ্য মিলবে দু’টি সিমের ক্ষেত্রে। (বিস্তারিত তথ্য সারণিতে)
মাথায় রাখুন
মোবাইল ফোনের ব্যবহার এখন সর্বব্যাপী। কথা বলা বা নেট ঘাঁটা তো আছেই। কেন্দ্র চাইছে এর মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং আর্থিক লেনদেনের প্রক্রিয়াকেই হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে আসতে। সেই সঙ্গে গ্যাস বুক করা, ট্রেনের টিকিট কেনা-সহ আরও বিভিন্ন বিষয় তো আছেই। সুতরাং এমন জরুরি যন্ত্র বাছাইয়ে ঝুঁকি নেওয়াও তো অর্থহীন! অতএব কেনার আগেই সেটটির যাবতীয় তথ্য যাচাই করে নিন। যতটা সম্ভব।
ভোটার কার্ড আগেই এসেছে। রয়েছে প্যান কার্ড। বায়োমেট্রিক আধার পদ্ধতিকে শক্তিশালী করারও চেষ্টা চলছে। ধরে নেওয়া যেতে পারে, মোবাইল ফোনে আইএমইআই নম্বর একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। অতএব তার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে মোবাইল সম্পর্কে ঝুঁকি কমানো যেতেই পারে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy