ফ্লিপকার্টের সঙ্গে নিজের ব্যবসাকে দাঁড় করিয়েছেন শিবাজী
প্রত্যেকেরই স্বপ্ন থাকে বড় হওয়ার। দশটা-পাঁচটার অফিসের বাঁধনমুক্ত হয়ে নিজেই নিজের বস হওয়ার। শিবাজী সরকারও এর ব্যতিক্রম নন। নিজের জন্য এবং সমাজের জন্য তাঁর কিছু করার চেষ্টা, তাঁকে সাধারণের মধ্যে অসাধারণ করে তুলেছে। অথচ, তাঁর মতে, ফ্লিপকার্টের সাহায্য ছাড়া তিনি কোনওভাবেই এই সব করতে পারতেন না। ফ্লিপকার্টের সঙ্গে তাঁর পথ চলা কীভাবে শুরু হয়েছে, এবং কী ভাবে এমন সাফল্য অর্জন, সেই গল্পই আপনাকে শোনাব।
শিবাজীর বেড়ে ওঠা থেকে পথ চলার শুরু, সবটাই কলকাতায়। ন্যশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন ডিজাইনিং থেকে স্নাতক হওয়ার পরে সুরাটের একটি সংস্থায় টেক্সটাইল ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। সেই সময় তাঁর কারুকাজ করা পোশাকগুলি সারা দেশে বিক্রি হত। প্রায় ছয় বছর কাজ করার পরে, হঠাতই তাঁর মনে হয়, যদি এই একই কাজ সে নিজের জন্য করে। কিন্তু প্রশ্ন ছিল কী ভাবে তিনি গোটা দেশের কাছে পৌঁছবেন? তাঁর প্রশ্নের সেই উত্তর ছিল ফ্লিপকার্ট। এর পরেই তিনি তাঁর নিজের ব্র্যান্ড শুরু করেন। নাম দেন — ‘কারিগরি ডিজাইন’।
প্রাথমিক পর্যায়ে নকশা থেকে প্যাকেজিং সবটা একা হাতেই সামলাতেন শিবাজী। পরবর্তী সময়ে তিনি দু’জন কর্মচারী নিয়োগ করেন। বর্তমানে তাঁর সংস্থায় কাজ করেন প্রায় ৬৫-৭০ জন কর্মীদের। শুরুটা ধীরে হলেও, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তাঁর সংস্থা নূন্যতম ১০০০টি অর্ডার পায়।
ফ্লিপকার্ট কী ভাবে সাহায্য করেছিল?
প্রথম দিনগুলিতে, অভিজ্ঞতার অভাবে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন শিবাজি। সেই সঙ্গে খুচরো ব্যবসায় এবং ই-কমার্স সাইটে নতুন। এই দুই সমাধানে তাঁকে পথ দেখিয়েছে ফ্লিপকার্ট। ফ্লিপকার্টের সেলার সাপোর্ট সিস্টেমের উপরে চোখ বন্ধ করে ভরসা রেখেছিলেন শিবাজী। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান। “অনলাইনে ব্যবসা চালানোর বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। ফ্লিপকার্টের সেলার টিমের সহযোগীতার কারণেই আমি এই উদ্যোগটি সফলভাবে চালাতে পারছি। যা যা তথ্য আমার প্রয়োজন পড়েছে, সবটাই আমি পেয়েছি তাদের থেকে। আমি তো এটাও জানতাম যে কী ভাবে প্রোডাক্টগুলি তালিকাভূক্ত করতে হয়। প্রথম দিকে আমি অন্তত ৮-৯ বার ফোন করতাম। সত্যি বলতে, ফ্লিপকার্ট না থাকলে আমার পক্ষে এই ব্যবসা শুরুই করতে পারতাম না।”
ফ্লিপকার্ট কীভাবে কারিগারি ডিজাইনের পাশে দাঁড়িয়েছে?
গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী অর্ডার সম্পূর্ণ করতে শিবাজীকে বিশেষভাবে সাপোর্ট করেছে ফ্লিপকার্টের লজিস্টিক টিম। ২ লক্ষ টাকা বাজেট নিয়ে শিবাজী কারিগরি ডিজাইন শুরু করেন। একটা সময় এমন এসেছিল যখন তাঁর তৈরি প্রোডাক্টগুলি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এবং যোগান দেওয়ার জন্য তাঁকে উৎপাদন বাড়াতেই হত। সেই সময় ফ্লিপকার্ট তাদের গ্রোথ ক্যাপিটাল স্কিমের মাধ্যমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিবাজী বলেন, “এই স্কিমের আওতায় আমি ২.৫ লক্ষ টাকার লোন পেয়েছিলাম। কোনও রকম সমস্যা ছাড়াই এই লোন আমি পাই। ঋণ পরিশোধের সময়ে আমার মাসিক পেমেন্ট থেকে ওই টাকা কেটে নেয়।”
আরও একটি বড় সমস্যার মুখে পড়েছিলেন শিবাজী, যখন তাঁর প্রোডাক্টগুলির অনুকরণ করা শুরু হয়। সেই সময় ফ্লিপকার্টের অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট টিমের কাউন্সিল তাঁকে তাঁর নিজস্ব প্রোডাক্টের ট্রেডমার্ক পেতে সাহায্য করেছিল।
অন্যান্য সুবিধা
শুরুতে রোজগার ছিল ২৫,০০০ টাকা। গত তিন বছরে ৪০,০০০ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে তাঁর। তাঁর অনন্য এবং প্রশংসনীয় নকশার কারণেই তিনি এত কম সময়ে সাফল্যের মুখ দেখেছেন। বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে সাহায্য করার জন্য তিনি তাঁর অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারেরও ভূয়ষী প্রশংসা করেছেন।
একই সঙ্গে শিবাজী বিগ বিলিয়ন ডে-রও উল্লেখ করেছেন। বিগত সিজনে তাঁর ব্যবসার ৬০ শতাংশই এই বিগ বিলিয়ন ডে-থেকেই হয়েছিল। এই সময়ে প্রতিদিন ২,৫০০-৩,০০০ অর্ডান পান তিনি। বিবিডি সেলের সময় কলকাতা থেকে সেরা পারফরম্যান্স করা সত্যিই কৃতিত্বের। আর তিনি নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন যে ফ্লিপকার্টের সাহায্য না থাকলে এত কিছু সম্ভব হতো না।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
ফ্লিপকার্টের সঙ্গে ই-কমার্স যাত্রা শুরু করার পরে তিনি বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করাও শুরু করেছেন। তাঁর ব্র্যান্ড দক্ষিণাঞ্চলের গ্রাহকদের কাছেও পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। এখন শিবাজী তাঁর ব্র্যান্ডের আওতায় মহিলাদের পোশাক বানানোর পরিকল্পনাও করছেন। এখন তাঁর লক্ষ্য দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে তাঁর তৈরি কাজগুলি পৌঁছে দেওয়া। এবং তিনি জানেন, ফ্লিপকার্টের সহযোগিতায় তা অবশ্যই সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy