প্রতীকী ছবি।
অস্থির আর অনিশ্চিত শেয়ার বাজারে এখন মূল্যবৃদ্ধির ভ্রুকুটি। খুচরো বাজারে তার হার হুহু করে বাড়ছে। রুজি-রোজগার ধাক্কা খাওয়া বহু মানুষ বাজারে গিয়ে আনাজ, মাছ-মাংসের দাম দেখে থতমত খাচ্ছেন। মূল্যবৃদ্ধি আরও চড়লে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দ্রুত সুদ কমিয়ে চাহিদায় জ্বালানি ঢালতে পারবে না আঁচ করে লগ্নিকারীরা অস্থির। তবে জুলাইয়ে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি দেখে অনেকেই অবাক। কারণ, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি যেখানে বেড়ে হয়েছে ৬.৯৩%, সেখানে পাইকারি বাজারে দর কমেছে ০.৫৮%।
পাইকারি দর যা-ই বলুক, মানুষ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কেন্দ্র— সকলেই চিন্তিত। কারণ, শীর্ষ ব্যাঙ্কের যেখানে লক্ষ্য খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশের (+/-২%) মধ্যে বেঁধে রাখা, সেখানে তা জুনের ৬.২৩% থেকে লাফিয়ে বেড়ে জুলাইয়ে পৌছেছে ৭ শতাংশের দোরগোড়ায় (লকডাউনের জেরে এপ্রিল ও মে মাসে আংশিক তথ্য প্রকাশ হয়েছিল)। কিছু খাদ্যপণ্যে হাত দিলেই ছেঁকা লাগছে। জুলাইয়ে মাছ ও মাংসের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ১৮.৮১%, ভোজ্য তেলের ১২.৪১% ও আনাজের ১১.২৯%। তবে খুচরোর মতোই চিন্তায় রাখছে খাদ্যপণ্যের পাইকারি দর। জুলাইয়ে যা দাঁড়িয়েছে ৪.০৮%। চার মাসে সর্বাধিক। আনাজের দাম যেখানে জুনে ৯.২১% কমেছিল, সেখানে গত মাসে বেড়েছে ৮.২০%। বেড়েছে ডাল, আলু ও মাছ-মাংস-ডিম। তবে কমেছে পেঁয়াজ, ফলের দর।
তার উপরে সরকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজকোষ ঘাটতি। ইতিমধ্যে যা ৬.৬২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। পুরো অর্থবর্ষের লক্ষ্যমাত্রার ৮৩.২%। করোনা যুঝতে খরচ দ্রুত বাড়ছে। অথচ রাজস্ব আয় নিম্নমুখী। এরই মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের জন্য ডিভিডেন্ড বাবদ কেন্দ্রকে ৫৭,১২৮ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে তাতে লাভ হবে না বলে মনে করছে সরকারি মহলের একাংশই। তাদের মতে, সঙ্কটের এই সময় ডিভিডেন্ড যখন বেশি হলে ভাল হত, তখন তা ২০১৮-১৯ সালের (১.২৩ লক্ষ কোটি) অর্ধেকেরও কম।
মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলায় অগস্টে সুদ কমায়নি আরবিআই। সুদ নির্ভর মানুষের আশা, বছরের বাকি ক’মাসও হয়ত আর তা কমবে না। দেশের প্রথম সারির ব্যাঙ্কগুলিতে এরই মধ্যে জমায় সুদের হার নেমেছে ৫.৫ শতাংশের আশেপাশে। প্রবীণদের ক্ষেত্রে বড়জোর ৬.৩%। করদাতাদের প্রকৃত সুদ অনেকটাই কমবে কর বাদ দেওয়ার পরে। কয়েকটি ছোট ও নতুন প্রজন্মের ব্যাঙ্ক অবশ্য এখনও মেয়াদি জমায় তুলনায় ১%-১.৫% বেশি সুদ দিচ্ছে।
সুদ কমার সম্ভাবনা কমায় মুখ ভার বন্ড বাজারের। সুদ কমার সম্ভাবনা দেখা দিলে বন্ডের দাম বাড়ে। উল্টোটা হয় সুদ বাড়লে। এই অবস্থায় সোম ও মঙ্গলবার সেনসেক্স যথাক্রমে ১৪২ এবং ২২৫ পয়েন্ট উঠে ৩৮,৪০০ পার করলেও, বাকি তিন দিন তা নেমেছে। এপ্রিলের পর থেকে লগ্নি কমতে শুরু করেছে ইকুইটি (শেয়ার নির্ভর) ফান্ডে। মার্চে যেখানে লগ্নি এসেছিল ১১,৭২৩ কোটি টাকা, সেখানে এপ্রিলে ছিল ৬৩১৩ কোটি, মে মাসে ৫২৫৭ কোটি, জুনে ২৪১ কোটি। আর জুলাইয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে ২৪৮০ কোটি টাকা।
নাগাড়ে বাড়ার পরে সোনার দৌড় থমকেছে গত বুধবার। ওই দিন পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ২৮৬০ টাকা কমে হয় ৫৩,৩১০ টাকা। পরের দু’দিন অবশ্য দাম একটু করে বাড়ে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy