Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
GDP

দুঃসংবাদ সর্বত্র, আশা শুধু কৃষি

অর্থনীতির অবস্থা যে যথেষ্ট নড়বড়ে তা বোঝা গিয়েছিল করোনার আগেই। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি সঙ্কোচন নিশ্চিত ছিল। তবে তার ২৩.৯ শতাংশে নামা অনেককে ঘাবড়ে দিয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৬
Share: Save:

আশঙ্কা ছিলই। তাকে কিছুটা ছাপিয়েই জিডিপির পরিসংখ্যানে প্রকট হল ভারতীয় অর্থনীতির রুগ্‌ণ দশা।

অর্থনীতির অবস্থা যে যথেষ্ট নড়বড়ে তা বোঝা গিয়েছিল করোনার আগেই। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি সঙ্কোচন নিশ্চিত ছিল। তবে তার ২৩.৯ শতাংশে নামা অনেককে ঘাবড়ে দিয়েছে। খারাপ খবর ছিল আরও। এপ্রিল-জুলাই, এই চার মাসেই রাজকোষ ঘাটতি পৌঁছে গিয়েছে ৮.২১ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থাৎ, ছাপিয়ে গিয়েছে সারা বছরের ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রাকে। অথচ গত বছর একই সময়ে ঘাটতি ছুঁয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৭৭.৮%। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দেশ জুড়ে লম্বা লকডাউনের কারণে এক দিকে কর ও অন্যান্য সূত্র থেকে আয় হ্রাস এবং অন্য দিকে করোনা পরিস্থিতিতে নানান খাতে খরচ বৃদ্ধিই এর কারণ। ওই একই দিনে খবর আসে, জুলাইয়ে দেশের আটটি প্রধান পরিকাঠামো শিল্পের উৎপাদন কমেছে ৯.৬%। কিছুটা স্বস্তির খবর, টানা পাঁচ মাস ওই সমস্ত শিল্পের উৎপাদন কমলেও এপ্রিলের তুলনায় কিন্তু সেগুলি অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এপ্রিলে ৩৮% কমেছিল। সপ্তাহের আর একটি দুঃসংবাদ হল পরিষেবা শিল্পেও অগস্ট পর্যন্ত টানা ছ’মাস সঙ্কোচন। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতি কিন্তু যথেষ্ট বিপাকে।

জিডিপির পরিসংখ্যান বলছে, কৃষি ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রই টেনে নামিয়েছে জাতীয় উৎপাদনকে। সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে নির্মাণ শিল্প (৫০.৩%), হোটেল ও পরিবহণ (৪৭%) এবং উৎপাদন, খনি ও খাদান শিল্পের (২৩.৩%)। তবে এই সঙ্কটের সময়ে দেশ স্বাভাবিক বর্ষা পাওয়ায় কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উৎপাদন বেড়েছে ৩.৪%। অতিমারির শুরুতে দেশ জুড়ে লম্বা লকডাউনকেই জাতীয় উৎপাদনের এতটা পতনের জন্য দুষছেন অনেকে। তুলনায় বেশ কিছুটা কম হারে জিডিপি সঙ্কুচিত হয়েছে কয়েকটি বড় মাপের অর্থনীতির।

এত দিন হাজার প্রতিকূল খবরও দমাতে পারছিল না শেয়ার বাজারকে। গত সপ্তাহে ধরাশায়ী না-হলেও অবশেষে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে সূচক। সপ্তাহের শুরু এবং শেষ দিনে সেনসেক্স পড়েছে যথাক্রমে ৮৩৯ এবং ৬৩৪ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে গোটা সপ্তাহে মুম্বইয়ের সূচক ১১১০ পয়েন্ট খুইয়ে নেমেছে ৩৮,৩৫৭ অঙ্কে।

পরিস্থিতি সব দিক থেকে খারাপ হলেও বাজারকে এত দিন চাঙ্গা রেখেছিল বিদেশি লগ্নির জোয়ার। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির ধারণা, ঘুরে দাঁড়ানোর দৌঁড়ে অনেক দেশকেই টেক্কা দেবে ভারতের অর্থনীতি। এখনকার পরিস্থিতি দেখে নয়, এরা লগ্নি করছে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে। চার পর্যায়ে লকডাউন অনেকটা শিথিল হলেও বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক লকডাউন চলতে থাকায় ব্যবসা এবং পণ্য পরিবহণ স্বাভাবিক হতে পারছে না বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী মহলের। এর ফলে মার খাচ্ছে উৎপাদন এবং বিক্রি। ফলে শিল্পের ঘুরে দাঁড়াতে আরও সময় লাগবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তত দিন পর্যন্ত শেয়ার বাজার অস্থির থাকতে পারে। তবে বিদেশি লগ্নি জারি থাকলে বড় পতনের আশঙ্কা কমবে। এই পরিস্থিতিতে নজর রাখতে হবে করোনা সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির উপরে। খবর রাখতে হবে করোনার প্রতিষেধক কবে নাগাদ হাতে আসতে পারে। টিকাকরণ শুরু হলে বাজার আবার গতি পেতে পারে।
(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

GDP Economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy