Advertisement
০৮ অক্টোবর ২০২৪
Automobile Sale Decreased

উৎসবে আঁধার, দেশ জুড়ে কমল গাড়ি বিক্রি

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধি অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার অন্যতম ইঙ্গিত। ফলে বিক্রিবাটা নিম্নমুখী হওয়া চিন্তার।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪০
Share: Save:

উৎসবের মরসুমে ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠার আশায় ছিল গাড়ি শিল্প। কিন্তু হল উল্টোটা। বিক্রেতাদের (ডিলার) সংগঠন ফাডার পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে দেশের খুচরো বাজারে প্রায় সব রকম গাড়ির বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চোখে পড়ার মতো কমেছে। সেই তালিকায় যাত্রিবাহী ছাড়াও রয়েছে দু’চাকা ও বাণিজ্যিক। ফলে সামগ্রিক ভাবে সেপ্টেম্বরে বিক্রি কমেছে ৯.২৬%। শিল্প সূত্রের দাবি, কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে ছাড়ের সুবিধা দিয়ে চাহিদা বাড়াতে তৎপর হয়েছে অনেকে।

কোভিডের কোপে দীর্ঘ দিন ধরে চাহিদা তলিয়ে যেতে দেখেছিল গাড়ি শিল্প। পরে একটু একটু করে বাড়ে। কিন্তু সোমবার প্রকাশিত ফাডার হিসাবে প্রকাশ, সেপ্টেম্বরে যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি কমেছে ১৮.৮১%। বাণিজ্যিক ও দু’চাকার ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ১০.৪৫% এবং ৮.৫১%। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এর কারণ মূলত দেশের বিভিন্ন জায়গায় অতিবৃষ্টি।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, গাড়ি বিক্রি বৃদ্ধি অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার অন্যতম ইঙ্গিত। ফলে বিক্রিবাটা নিম্নমুখী হওয়া চিন্তার। কারণ যাত্রিবাহী গাড়ি কম বিকোনোর মানে হতে পারে, বহু মানুষের হাতে তা কেনার মতো টাকা থাকছে না। যে কারণে কোভিডের পরে ছোট গাড়ি বিক্রিতে ভাটার টান আর বিলাসবহুল দামি গাড়ির বাজার বৃদ্ধি সমাজে বাড়তে থাকা আর্থিক বৈষম্যকেই তুলে ধরছে বলে ইঙ্গিত করেন বিশেষজ্ঞেরা। তেমনই বাণিজ্যিক গাড়ির ব্যবসা খারাপ হলে আর্থিক কর্মকাণ্ড শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। শিল্প সূত্রের দাবি, অন্য সময় বিক্রিবাটার হাল যেমনই থাকুক না কেন, উৎসব শুরু হলে সাধারণত ক্রেতাদের ঢল নামে গাড়ির বিপণিগুলিতে (শো-রুম)। এ বার সেপ্টেম্বরে সেই ছবিটা কার্যত উধাও।

ফাডার সভাপতি সি এস বিজ্ঞেশ্বর বলেন, ‘‘এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় ৮% বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সর্বত্রই প্রায় সব ধরনের গাড়ির চাহিদা মার খেয়েছে। ফলে সার্বিক বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।’’ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, সেপ্টেম্বরে গণেশ চতুর্থী এবং ওনাম ছিল। এই দু’টি পশ্চিম এবং দক্ষিণ ভারতের বড় উৎসব। তবু গাড়ি বিক্রির গতি বাড়েনি। ব্যতিক্রম শুধু ট্রাক্টর। তবে উৎসবের বাকি মরসুমেও বিক্রি কতটা বাড়বে, সন্দেহ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের অবশ্য বক্তব্য, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, বাড়তে থাকা খরচ এবং সেই তুলনায় অনেকের আয় বৃদ্ধি না হওয়া একাংশের গাড়ি কেনার ক্ষমতাই কেড়ে নিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা চাহিদাগুলি পূরণের পরে নতুন ক্রেতার ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

এ দিন ফাডা জানিয়েছে, বিক্রেতাদের বিপণিতে প্রায় ৭৯,০০০ কোটি টাকার গাড়ি মজুত হয়ে রয়েছে। এক একটির বিক্রি হতে ন্যূনতম ৮০-৮৫ দিন লেগে যাচ্ছে। এর থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে জোগানের থেকে চাহিদা কতখানি কম। সেই কারণে ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কগুলিকে গাড়ি বিক্রেতাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।

সংগঠনটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে বৃহত্তম গাড়ি তৈরির সংস্থা মারুতি সুজ়ুকি প্রায় ২৯,০০০ কম গাড়ি বিক্রি করেছে। হুন্ডাই এবং টাটার বিক্রিও কমে গিয়েছে যথাক্রমে প্রায় ১২,৫০০ এবং ৭৫০০। তবে মহীন্দ্রার বিক্রি একই জায়গায় রয়েছে। টয়োটার বেড়েছে মাত্র হাজার খানেক। বিজ্ঞেশ্বরের দাবি, ক্রেতা টানতে অক্টোবরের শুরু থেকেই বড় মাপের ছাড় দেওয়া শুরু করেছে বিক্রেতা সংস্থাগুলি। তবে এর হাত ধরে বিক্রি কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও, লাভের অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের নিরিখে বেশ কম হবে বলেই আশঙ্কা শিল্প মহলের।

অন্য বিষয়গুলি:

Car Sale
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE