ফাইল চিত্র।
গত বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ধাক্কা খেয়েছিল পাটের উৎপাদন। তাই এ বছর স্বাভাবিক বর্ষার পূর্বাভাস থাকায় এবং এপ্রিলে মরসুমের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায়, সেই ফাঁড়া কাটে। উৎপাদন বাড়বে বলে আশায় বুক বাঁধেন পাটচাষি থেকে শুরু করে চটশিল্প, সব পক্ষই। ১৫%-২৫% বেশি জমিতে চাষ শুরু হয়। কিন্তু দু’মাস যেতে না-যেতেই এ বারও উৎপাদন মার খাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। কারণ, মে মাসে হওয়া আমপান এবং জুনে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, অসমে বেশি বৃষ্টি।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পাট উৎপাদন ধাক্কা খেলে প্রথমত, চাষিদের আয় কমবে। দ্বিতীয়ত, বাজারে পাটের চাহিদা ও জোগানে আসবে বিস্তর ফারাক। তখন কাঁচা পাটের দাম বাড়বে। চটপণ্যের উৎপাদনে যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
চট শিল্পমহলের একাংশের দাবি, দু’মাসের লকডাউনে কারখানায় তালা ঝোলায় বিপুল ব্যবসা হারিয়েছে চটকলগুলি। কারখানা খোলার অনুমতি পাওয়ার পরেও অনেক জায়গায় ঠিক মতো কাজ করা যাচ্ছে না কর্মীর অভাবে। কারণ ভিন্ রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা ঘরে ফিরেছেন। এ বার পাট উৎপাদন ধাক্কা খেলে খাঁড়ার ঘা পড়তে পারে ব্যবসায়। চাষিরা তো ভুগবেনই, কাঁচামালের দাম বাড়লে চটকলগুলিও বিপদে পড়বে।
নিয়ম
• জমি থাকতে হবে শুকনো।
• পাট গাছের বয়স হতে হবে ১১০-১২০ দিন।
• তা লম্বায় হতে হবে কমপক্ষে ১০-১২ ফুট।
• এই সব পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাড়ে কাঁচা পাট তন্তুর উৎপাদন।
এ বছর সমস্যা
• স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় জল জমছে খেতে।
• গাছ লম্বায় বাড়তে পারছে না। কাটতে হচ্ছে সময়ের আগেই।
• ফলে বিঘে প্রতি উৎপাদন কমবে।
• মানও খারাপ হবে পাটের।
জুট কমিশনারের অফিসের রিপোর্ট বলেছিল, ২০২০-২১ মরসুমে দেশে কমপক্ষে ৭২ লক্ষ বেল (এক বেল ১৮০ কেজি পাট) পাট উৎপাদন হবে। লকডাউনে বস্তা-সহ সমস্ত পণ্য তৈরি বন্ধ থাকাতেও চটকল ও পাট ব্যবসায়ীদের কাছে প্রায় ২৫ লক্ষ বেল মজুত রয়েছে। ফলে কাঁচামালের সঙ্কট হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, গত দু’মাসে কিছুটা বেশি বৃষ্টির কারণে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব জায়গা থেকে চাষে ক্ষতির খবর আসছে।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কৌশিক ব্রহ্মচারী জানান, এ রাজ্যে পাট গাছের জন্য শুকনো মাটি, মেঘলা আকাশ ও স্বাভাবিক বৃষ্টি চাই। জুট কর্পোরেশনের মুর্শিদাবাদ জেলার ‘জুট-আইকেয়ার’ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত সাগর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, উন্নত মানের বেশি তন্তু পেতে পাট গাছের বয়স অন্তত ১১০-১২০ দিন হতে হয়। কিন্তু খেতে জল জমায় অনেককেই ৭০-৭৫ দিনেই তা কাটতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে এই প্রকল্পে যুক্ত প্রণয়কৃষ্ণ ভদ্রের মতে, বিঘেতে কমপক্ষে ৪ কুইন্টাল কাঁচা পাট পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনেক জমিতেই মিলবে বড়জোর ২.৫ কুইন্টাল।
জুনের শেষে রাজ্যে বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। তবে চট শিল্পের একাংশের মতে, ক্ষতি যা হওয়ার হয়েই গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy