প্রতীকী ছবি।
গত বছর করোনার ছড়িয়ে পড়া রুখতে যে ভাবে দীর্ঘ দিন লকডাউন করে সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি রাখতে হয়েছিল, তাতে জ্বালানির চাহিদা যে কমবে সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ, কল-কারখানা, ব্যবসাপত্তর, চলাফেরা, ঘোরা-বেড়ানো থমকে যাওয়ায় সেগুলি কেনার তেমন লোকই ছিল না বাজারে। কিন্তু সেই সঙ্কোচন যে দু’দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে যাবে, তা শুক্রবার তেল মন্ত্রকের তথ্য প্রকাশ না-পাওয়া পর্যন্ত আন্দাজ করা কঠিন ছিল। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০-২১ সালের সব ধরনের জ্বালানির (পেট্রল, ডিজেল, এলপিজি, ন্যাপথা, এটিএফ, লুব্রিক্যান্ট ও গ্রিজ়, বিটুমেন ইত্যাদি) বিক্রি ২০১৯-২০ সালের চেয়ে ৯.১% কমেছে। সঙ্কোচনের এই হার ১৯৯৮-৯৯ সালের পরে সর্বাধিক।
অর্থনীতির চাকায় গতি আনতে তৎপর সরকার, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই গতি আসার লক্ষণ স্পষ্ট বলে দাবিও করছে কেন্দ্র। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, লকডাউনের মতো বাধানিষেধ শিথিলের পরেও যে আর্থিক কর্মকাণ্ড খুব একটা বাড়েনি, জ্বালানির বিক্রি এতটা কমাই তার প্রমাণ। তবে অনেকেই দুষছেন পেট্রল-ডিজেলের দামকেও। দেশে যা গত অর্থবর্ষের বেশিরভাগ সময়টা জুড়েই নাগাড়ে বেড়ে নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিল। ফলে অনেকেই সুবিধা বা ইচ্ছে থাকলেও হয়তো তেলের ব্যবহার এড়িয়ে গিয়েছেন, দাবি তাঁদের। বস্তুত, গাড়ি শিল্প সূত্রের খবর, দু’চাকার গাড়ি বিক্রি কমার অন্যতম কারণও তেলের চড়া দর। গাড়ি বিক্রি বাড়লে তেলের চাহিদাও কিছুটা বাড়ত।
এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সংক্রমণ বাড়ছে দেশ জুড়ে। বহু রাজ্যে আংশিক লকডাউন জারি হয়েছে। ফলে আগামী দিনে ফের জ্বালানির চাহিদা কমবে কি না, সেই আশঙ্কা দানা বাঁধছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মধ্যে।
তেলের চড়া দরের জেরে নাভিশ্বাস ওঠার অভিযোগ তুলেছিল পরিবহণ ক্ষেত্র। তেল মন্ত্রক জানাচ্ছে, এই ক্ষেত্রের মূল জ্বালানি ডিজেলের চাহিদা কমাই মূলত সার্বিক জ্বালানির চাহিদাকে টেনে নামানোর জন্য দায়ী। সব মিলিয়ে ২০১৯-২০ সালে সারা দেশে জ্বালানির চাহিদা ছিল ২১.৪১ কোটি টন। ২০২০-২১ সালে তা নামে ১৯.৪৬ কোটিতে।
লকডাউন ওঠার পরে কাজকর্ম শুরু হওয়ায় ধীরে ধীরে কিছুটা হলেও জ্বালানির চাহিদা তৈরি হয়। তবে তা যে যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। গত বছরের মার্চের তুলনায় এ বারের মার্চে তা কিছুটা বাড়লেও সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, গত বছর লকডাউন শুরু হওয়ায় মার্চে বিক্রি কমেছিল। ফলে সেই নিচু ভিতের তুলনায় এ বারের বিক্রির বৃদ্ধি খুব উল্লেখযোগ্য কিছু নয়।
গোটা বছরের হিসেবে বিমানে জ্বালানির চাহিদাও কমেছে ৫৩%। ন্যাপথার বিক্রি প্রায় একই রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র রান্নার গ্যাসের বিক্রি বেড়েছে, ৪.৭%।
এখন সংক্রমণ ফের দ্রুত ছড়ানোয় নতুন করে শঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে জ্বালানির চাহিদা নিয়ে। যদিও পূর্ণ লকডাউন হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। আর রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আশ্বাস, অর্থনীতির অগ্রগতি বজায় রাখতে সব রকম ভাবে চেষ্টা চালানো হবে। আশ্বাসেই আপাতত ভরসা রাখতে চাইছে সংশ্লিষ্ট মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy