—প্রতীকী চিত্র।
আনাজের চড়া দামে পকেট পুড়ছে সাধারণ মানুষের। আশঙ্কা, এতেই হয়তো জুলাইয়ে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি ৭ শতাংশের কাছে চড়বে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী মহল থেকে আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, আমজনতাকে কিছুটা সুরাহা দিতে অবিলম্বে দেশে ডিজ়েলের দাম কমানো হোক। তাতে পরিবহণ খরচ কমায় কিছুটা নামতে পারে খাদ্যপণ্যের দাম। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি দাম না কমালে, কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক এবং রাজ্যগুলি যুক্তমূল্য কর ছেঁটে দেশবাসীর পাশে দাঁড়াক বলেও দাবি অনেকের।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশন্সের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘পণ্য পরিবহণের খরচ বেড়েছে ডিজ়েলের চড়া দামে। রাজ্যে এখন যার লিটার ৯০ টাকার বেশি। খাদ্যপণ্যের দরে এর প্রভাব পড়ছে বলে সতর্ক করেছিলাম। এখন দেশের বহু অঞ্চলে কম বৃষ্টি আনাজকে আরও দামি করেছে।’’ তাঁর বক্তব্য, এখন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি ডিজ়েলের দাম কমালে মানুষ বাঁচবে। চড়া তেলের কারণে খাদ্যপণ্য অন্তত ১৫-২০ শতাংশ বেড়েছে। রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘তেলের দাম কমলে পণ্যের দামে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেমন, রাজ্যে ডিম আসে অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ ভিন্ রাজ্য থেকে। প্রতিটির দামে শুধু পরিবহণ খাতের খরচ যোগ হয় ৩৫-৪০ পয়সা।’’ তবে গত ক’দিনে এ রাজ্যে বেশিরভাগ আনাজের দাম কিছুটা কমেছে, দাবি তাঁর। যদিও খুচরো বাজারে টোম্যাটো এখনও ১৮০-২০০ টাকা। স্বাভাবিকের থেকে বেশি অন্যান্যগুলিও।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের দাবি, “আনাজ, ডিম, মাছ, মাংসের বড় অংশ অন্য রাজ্য থেকে প্রধানত সড়ক পথে আসে। ডিজ়েলের দাম বাড়ায় পরিবহণ খাতে বাড়তি খরচ হচ্ছে। তার আঁচ পড়েছে পণ্যের দরে।’’ তাঁর অবশ্য ধারণা, খাদ্যপণ্যের এতটা দাম বৃদ্ধি বেআইনি মজুতের কারণে কি না, তদন্ত করে দেখা উচিত সরকারের।
বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত এবং পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের মতো বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের ব্যারেল ১২০ ডলারে উঠেছিল। ফলে দেশে তেলের দর চড়েছিল। এখন তা ৮৫-৮৬ ডলার। কিছু দিন আগে ৭০-৭৫ ডলার ছিল। তাঁদের দাবি, ‘‘বিশ্ব বাজারে সস্তা অশোধিত তেলের সুবিধা দেশবাসী পাননি। এর আগেও অশোধিত তেল যখন নেমেছে সরকার শুল্ক বাড়িয়েছে। ফলে পেট্রল-ডিজ়েল কমেনি। পরবর্তীকালে সেগুলির চড়া দাম মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলেছে।’’ তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা এড়ানো যাবে অবিলম্বে তেলের দাম কমলে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস একটু সস্তা হলে মানুষ স্বস্তি পাবেন। দাম না কমানো গেলে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি অন্তত কর কমাক। তাতেও সুরাহা মিলতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy