—প্রতীকী চিত্র।
প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় বাতিল করার জেরে গত চার বছরে রেল যে বিপুল লাভ ঘরে তুলেছে, সেই তথ্য সামনে আসতেই নির্বাচনী চর্চায় উঠে এল ফের সেই আর্থিক সুবিধা ফেরানোর দাবি। আর তার সঙ্গে বিরোধী শিবিরের তুরুপের তাস হল তা আবার চালু করার প্রতিশ্রুতিও। ২০১৬ সালে ভারতীয় রেলের তরফে আবেদন করা হয়েছিল, কেউ স্বেচ্ছায় ছাড় না নিলে সুবিধে হবে তাদের। তবে ওই আবেদনে তেমন একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীকালে দেশে কোভিড হানার পরে লকডাউনের আবহে আর্থিক লোকসানের যুক্তি তুলে ধরেই ২০২০ সালে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় রেল।
এর আগে সংসদের উভয় কক্ষে রেলে সফররত প্রবীণ মানুষদের ছাড় আবার চালু করার দাবি উঠলেও তাতে আমল দেয়নি কেন্দ্র। বরং লোকসানের দোহাই দিয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের যুক্তি ছিল, আর্থিক বোঝা বেড়ে যাওয়া আটকাতে তা ফিরিয়ে আনা যাবে না। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ বার ভোটে সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির অন্যতম গলার কাঁটা। কারণ, ওই খাতে রেলের বিপুল আয়ের তথ্য প্রকাশের পরে জোরালো হয়েছে রোজগারহীন বহু বয়স্ক মানুষের স্বার্থে ছাড় ফিরিয়ে আনার দাবি। দূরপাল্লার সংরক্ষিত ট্রেনের টিকিটে ছাড় না-পাওয়া যাত্রীদের অসুবিধার কথা তুলে ধরে তাকে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার করেছে কংগ্রেস। সাধারণ মানুষের আস্থা জিতে নেওয়ার তাগিদে নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে যোগ করেছে ওই প্রসঙ্গ। তাদের প্রতিশ্রুতি, ভোটে জিতে ফের ক্ষমতায় এলে ট্রেনের টিকিটে ছাড় ফিরিয়ে আনা হবে।
সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে মধ্যপ্রদেশের সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর গৌড় প্রবীণ যাত্রীদের ছাড় বাতিলের কারণে রেলের কত আয় হয়েছে, সেই তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। রেল জানিয়েছে, গত ২০২০ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের ২০ মার্চ পর্যন্ত এর থেকে তাদের রোজগারের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৫৮৭৫ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, রেলে সফররত মহিলা যাত্রীদের ক্ষেত্রে ৫৮ বছর বা তার বেশি বয়স হলে টিকিটে ৫০% এবং পুরুষ যাত্রীদের ৬০ বছর বা তার বেশি বয়স হলে টিকিটের মূল্যের উপর ৪০% ছাড় মিলত। ওই ছাড় বন্ধ করা ছাড়াও যাত্রী ভাড়া খাতে আয় বাড়াতে রেল রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্তের মতো একাধিক ট্রেনে টিকিটের উপর ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ চালু করেছে রেল। অর্থাৎ ওই সব ট্রেনে নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকিট বিক্রির পরে তার চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নির্দিষ্ট হারে টিকিটের দামও বাড়িয়ে দেওয়া হয় এখন। ঠিক বিমান টিকিটের মতো। ওই খাতেও রেলের আয় বেড়েছে। ফলে সেই জায়গা থেকেও প্রবীণদের ছাড় ফিরিয়ে আনার দাবি গুরুত্ব পাচ্ছে। বহু বয়স্ক মানুষ বসে আছেন আবার সেই সুবিধা পাওয়ার অপেক্ষায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের অবশ্য বক্তব্য, যাত্রী ভাড়া খাতে ৫৫% টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। মাত্র ৪৫% টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। তাই, ছাড় ফেরালে ভারতীয় রেলের ক্ষতি
বোঝা বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy