প্রতীকী ছবি।
জরুরি নয় এমন সব পণ্যের অনলাইন কেনাকাটায় সোমবারই ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তা কী করে কার্যকর হবে, সে ব্যাপারে তৈরি হয়েছিল কিছুটা ধোঁয়াশা। মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় সেই ধন্দ কাটাতে এ নিয়ে নির্দেশ জারি করল রাজ্য। জানাল, অত্যাবশ্যক নয় এমন জিনিসপত্র অনলাইনে বিক্রির সুযোগ খুলে দেওয়া হচ্ছে ঠিকই, তবে তা হবে হোম ডেলিভারি পদ্ধতিতে। অর্থাৎ ক্রেতা কিনতে চাইলে, তাঁকে সেগুলি বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। দোকানে বিক্রি করা যাবে না। এমনকি পণ্য পৌঁছতে যাবেন যিনি, তাঁকেও বাধ্যতামূলক ভাবে সমস্ত সুরক্ষা বিধি মানতে হবে। মানে, নিশ্চিত করতে হবে তিনি মাস্ক পড়ে যাচ্ছেন, দূরত্ব বিধি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি মানছেন। তবে একাংশের বক্তব্য, পণ্য পৌঁছতে ডেলিভারি ভ্যান বা কর্মীর বিশেষ কোনও পাস লাগবে কি না, সেই খুঁটিনাটি জানাও জরুরি।
রাজ্যের নির্দেশে অনলাইনে হোম ডেলিভারি পদ্ধতিতে এই সব পণ্য বিক্রির পাশাপাশি জিনিসপত্রগুলি সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য কাজ বা জোগান শৃঙ্খলের অন্য সব অংশকেও প্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর ফলে এ বার অত্যাবশ্যক হোক বা না-হোক, কোনও পণ্য পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
রাজ্যের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের (সিডব্লিউবিটিএ) প্রেসিডেন্ট সুশীল পোদ্দার ও পূর্বাঞ্চলে রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) অন্যতম কর্তা পুলকিত বেদ। তবে তাঁদের বক্তব্য, পণ্য পৌঁছতে ডেলিভারি ভ্যান ও কর্মীদের জন্য কোনও বিশেষ পাস নিতে হবে কি না, সে সব আরও স্পষ্ট হলে ভাল হয়। সংশ্লিষ্ট মহলের আশা, দ্রুত জরুরি সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়েই প্রশাসনিক ছাড়পত্র মিলবে। ফলে সতর্কতা মেনেও সুষ্ঠু ভাবে এই প্রক্রিয়া চালু করা যাবে।
রাজ্যের নির্দেশ
• অত্যাবশ্যক নয় এমন পণ্যের বিক্রিতে সায়।
• হোম ডেলিভারি পদ্ধতিতেই তা করা যাবে।
• সায় পণ্য সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় কাজকর্মে।
• পণ্য সরবরাহকারীদের মাস্ক পরতে হবে। মানতে হবে সব রকম সুরক্ষাবিধি।
পুলকিত জানান, বহু ক্রেতা ওয়াশিং মেশিন বা এসি খারাপ হওয়ায় সরাসরি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। লকডাউনে বড় ফ্রিজের চাহিদাও বেড়েছে। দোকান না-খুলে দোকানের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে বরাত নিয়ে ক্রেতাকে পণ্যগুলি পৌঁছতে পারবেন কি না, সেটাই তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন। সুশীলের বক্তব্য, দোকান বন্ধ রেখেও গুদাম বা দোকানের মজুত ভান্ডার থেকে সরাসরি ক্রেতার কাছে ল্যাপটপ-কম্পিউটার ও কেব্ল-ব্রডব্যান্ড পরিষেবার যন্ত্রাংশ, কৃষি যন্ত্রের জোগান দেওয়ার দরজা খুললে, ক্রেতাদের সঙ্গে ছোট ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এ দিন রাজ্য অন্তত সেই ছাড়পত্র দেওয়ায় খুশি তাঁরা।
স্ন্যাপডিল বলেছে, তারা আরও বেশি পণ্য জোগানের পরিষেবা চালু করবে। তবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, রাত পর্যন্ত কিছু জানায়নি অ্যামাজ়ন, ফ্লিপকার্ট।
প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, অনলাইন পরিষেবা চালু হলে কেনাকাটা বাড়বে। ফলে কিছুটা সচল হবে অর্থনীতি। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বড় ই-কমার্স সংস্থাগুলির হোম-ডেলিভারি পদ্ধতি এমনিতেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য দোকানগুলিও তা শুরু করলে এক দিকে তাদের বিক্রি বাড়বে। অন্য দিকে, পণ্য ক্রেতাকে পৌঁছে দিতে লোকবল বাড়াতে হবে। ফলে চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।
প্রশাসনের অনেকে মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার। ভিড় ঠেকাতে নানা পদক্ষেপও করা হচ্ছে। মানুষকেও বারবার তা মেনে চলার আর্জি জানাচ্ছে প্রশাসন। এখন জিনিসপত্র বাড়িতে বসেই পাওয়ার সুযোগ থাকলে বাজার-হাটে ভিড় তুলনায় কম হবে। ফলে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে লকডাউন বিধি অনেকটাই কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy