প্রতীকী ছবি।
বেকারত্বের হার কমার পরিসংখ্যানেও দুশ্চিন্তার কাঁটা!
উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ২৬ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার কমল আগের সাত দিনের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বিন্দু। দাঁড়াল ২১.০৫ শতাংশে। যেখানে ১৯ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে ওই হার ছিল ২৬ শতাংশের উপরে। পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, বেকারত্বের ছোবল কমেছে গ্রাম, শহর দুই অঞ্চলেই। বেশি কমেছে গ্রামে। দেশ জোড়া লকডাউন শুরুর পর থেকেও শেষ সপ্তাহের বেকারত্বের হারই সব থেকে কম।
লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই বহু কর্মী কাজ হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ বিভিন্ন কর্মী ইউনিয়নের। দাবি, সংস্থার কাজ বন্ধ হতেই বিদায় করা হয়েছে বহু ঠিকা কর্মীকে। কাজ নেই যাঁরা ‘দিন আনা-দিন খাওয়া’ শ্রমিক, তাঁদের। কাজ হারানোর আশঙ্কায় অস্বস্তিতে সংগঠিত শিল্পের কর্মীরাও। তাই এই অবস্থায় এক সপ্তাহের মধ্যে বেকারত্বের হার এক লাফে এতখানি কমায় অবাক অনেকে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দুশ্চিন্তার কাঁটা লুকিয়ে আপাত স্বস্তির এই পরিসংখ্যানেও। কারণ—
প্রথমত, দেশের ‘করোনামুক্ত’ অঞ্চলগুলিতে ২০ এপ্রিলের পরে ধাপে ধাপে আর্থিক কর্মকাণ্ড চালুর লক্ষ্যে কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে কেন্দ্র। ফসল কাটা-সহ সামান্য হলেও কাজকর্ম শুরু হয়েছে কিছু জায়গায়। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে। বেকারত্বের শেষ পরিসংখ্যানে তার ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু কারখানা বন্ধ থাকায় যাঁরা এতদিন কাজ নেই বলছিলেন, এ বার তা খোলার আশায় সেই কাজ ফের শুরুর অপেক্ষায় অনেকেই। ফলে এঁদের একাংশ হয়তো নিজেকে এখন কর্মহীন ভাবছেন না। কিন্তু কারখানার ঝাঁপ ওঠার পরে তাঁরা কাজ ফিরে না-পেলে পরিসংখ্যান আরও খারাপ হতে পারে। বিশেষত শহর ও সংলগ্ন অঞ্চলে।
আরও পড়ুন: কম জরুরি পণ্য বাড়ি পৌঁছতে হবে সুরক্ষা বিধি মেনে
আরও পড়ুন: ক্ষতিপূরণ চাইব চিনের থেকে, হুঙ্কার ট্রাম্পের
দ্বিতীয়ত, লকডাউন শুরুর পর থেকে উদ্বেগজনক ভাবে কমছে কাজ সন্ধানীদের সংখ্যাও। লকডাউনের আগে জনতা কার্ফু ঘোষণার দিন (২২ মার্চ) শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে কর্মক্ষমদের মধ্যে বাজারে কাজ করছিলেন কিংবা তা খুঁজছিলেন ৪২.৬% জন। ২৬ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে তা নেমেছে ৩৫.৪ শতাংশে। অর্থাৎ, লকডাউনের সময়ে কাজ খোঁজাও ছেড়েছেন অনেকে। যা হালে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে পরিযায়ী ও ঠিকা কর্মীদের মধ্যে। কাজ খোয়ানোর পরে এই কঠিন সময়ে তা ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে বাড়িমুখো হতে চেয়েছেন তাঁরা। যাতে অন্তত মাথার উপরে ছাদ এবং রেশনের দৌলতে দু’বেলা খাবারটুকু জোটে। তাই প্রশ্ন, অনেকে কাজ খোঁজা ছেড়ে দিচ্ছেন বলেই কি কমছে বেকারত্বের হার? যাঁরা কাজ খুঁজছেনই না, তাঁরা আর নিজেদের কর্মহীন বলবেন কী ভাবে? শিল্পের পক্ষেও এই খবর ভাল নয়।
তৃতীয়ত, লকডাউন শুরুর আগে বেকারত্ব যেখানে ৮.৪১% ছিল, সেখানে তার পরের পাঁচ সপ্তাহে তা ২১ শতাংশের নীচে নামেনি। অনেকের আশঙ্কা, কাজ হারানোর আসল ধাক্কা টের পাওয়া যাবে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের পরে। কল-কারখানার চাকা ফের ঘুরতে শুরু করলে। তখন স্পষ্ট হবে আসলে কাজ খোয়াচ্ছেন কত জন।
তাই করোনা-সঙ্কট সামলে যখন অর্থনীতিকে খাদ থেকে টেনে তোলা যাবে, তখন কাজ যাবে কত কম জনের, তার উপরেই নির্ভর করবে আগামী দিনের ছবি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy