গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
করোনার জেরে ক্রমেই জাঁকিয়ে বসছে মন্দার আতঙ্ক। সেই আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির ধুম লগ্নিকারীদের মধ্যে। তার জেরে বুধবারও ধস নামল শেয়ার বাজারে। সেনসেক্স নেমে গেল ২৮ হাজারের ঘরে। সর্বনিম্ন পতন হয়েছিল ১৯০০ পয়েন্টেরও বেশি। নিফটি ছুঁয়েছে তিন বছরের সর্বনিম্ন সূচক। সর্বনিম্ন পতন ৫৬০ পয়েন্ট। ১০ শতাংশ পতনের মুখ দেখেছে ব্যাঙ্ক নিফটি। অদূর ভবিষ্যতে বাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো কোনও সঙ্কেত নেই, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে। শুধুমাত্র ইন্দাসইন্ড ব্যাঙ্কের শেয়ারই ৩২ শতাংশ নেমেছে। এসবিআই কার্ড, এইচডিএফসি ও এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, কোটাক মহিন্দ্রা, আইসিআইসিআই, বন্ধন— সব ব্যাঙ্কের শেয়ারেই বড়সড় পতন। শুধুমাত্র ইয়েস ব্যাঙ্ক ও আরবিএল ব্যাঙ্কের শেয়ার কিছুটা উপরে। ব্যাঙ্কিং ছাড়া টপ লুজারের তালিকায় ভারতী এয়ারটেল, বাজাজ ফাইনান্স, বাজাজ ফিনসার্ভ, গ্রাসিম, জেএসডব্লিউ স্টিল, হিরো মোটোকর্প, ভারত পেট্রোলিয়ামের শেয়ারে পতন ৬ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। উত্থানের তালিকায় জি এন্টারটেনমেন্ট, আইটিসি, ইয়েস ব্যাঙ্ক, টিসিএস-এর মতো হাতে গোণা কয়েকটি শেয়ার।
অথচ বুধবারের সকালটা এমন ছিল না। বাজার খুলেছিল গতকালের চেয়েও উপরে। এক সময় ৫০০ পয়েন্টেরও বেশি উপরে উঠেছিল সেনসেক্স। ঊর্ধ্বমুখী ছিল নিফটিও। কিন্তু কিছুটা বেলা গড়াতেই পড়তে থাকে বাজার। হু হু করে নামতে নামতে একসময় ১৯৬৬.০৪ পয়েন্ট নেমে সূচক পৌঁছে যায় ২৮৬১৩.০৫ পয়েন্টে। নিফটির সর্বনিম্ন পতন ছিল ৫৬০ পয়েন্ট। তখন সূচক নেমে গিয়েছিল ৮৪০৭.০৫ পয়েন্টে। যা গত তিন বছরে সর্বনিম্ন। তবে বাজার বন্ধের আগে ক্ষতে প্রলেপের মতো কিছুটা ওঠে বাজার। বন্ধের সময় সেনসেক্স ২৮৮৬৯.৫১ পয়েন্টে। পতন ১৭০৯.৫৮ পয়েন্ট বা ৫.৫৯ শতাংশ। অন্য দিকে নিফটি বন্ধ হয়েছে ৮৪৬৮.৮০ পয়েন্টে। পতন হয়েছে ৫.৪৬ শতাংশ বা ৪৯৮.২৫ পয়েন্ট।
আরও পড়ুন: ছেলের করোনা, নবান্নে আমলার সহকর্মীদের থাকতে বলা হল বাড়িতে
মঙ্গলবার ৩০ হাজার ৫০০ পয়েন্টের উপরে বন্ধ হওয়ার পরেই সংশয় তৈরি হয়েছিল, ৩০ হাজারের ‘সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট’ও ভাঙতে চলেছে সেনসেক্স। বুধবার সেটাও ছাড়িয়ে নেমে গিয়েছে ২৮ হাজারের ঘরে। নিফটির সূচকও নেমে এসেছে ৮ হাজারের ঘরে। বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিফটির সূচক ৭০০০-এরও নীচে নেমে যেতে পারে। চিনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত নিফটি সেনসেক্স ও নিফটি উভয় সূচকেরই পতন হয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
ব্যাঙ্কিং-এ সবচেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রেও শেয়ার বিক্রির হুড়োহুড়ি। এনএসই-র ১১টি সেক্টরেই নিম্নমুখী। নিফটির প্রাইভেট ব্যাঙ্কের সূচক নেমেছে ৮ শতাংশেরও বেশি। ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, রিয়েল এস্টেট, অটোর মতো সেক্টরেও ৪ থেকে ৭ শতাংশ নীচে। সবচেয়ে বেশি ভুগেছে মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ। নিফটি মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ দুই ক্ষেত্রেই পতন ৬ শতাংশের বেশি। নিফটির ৫০টি শেয়ারের মধ্যে ৪৫টিই গতকালের তুলনায় কমে কেনাবেচা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বকেয়া নিয়ে টেলিকম সংস্থাগুলির পক্ষেই সওয়াল! সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে কেন্দ্র
করোনা ভাইরাসের গ্রাসে সারা বিশ্বেই শেয়ার বাজার ভয়াবহ ধসের মুখে। তার জেরে মঙ্গলবারই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে শেয়ার বাজার পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ফিলিপিন্স। লগ্নিকারী মহলে অনেকেই বলছেন, ভারতের বাজারেও পতন রুখতে সেই রকম কোনও পদক্ষেপ করা জরুরি। বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশও এই মতের পক্ষে। তাঁরা বলছেন, এখনই পদক্ষেপ না করলে ছোট ও মাঝারি লগ্নিকারীরা টাকা খোয়াতে খোয়াতে বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। তার প্রভাব হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy