কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশের পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বেহাল দশা তো রয়েইছে, তার উপরে সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনে আর্থিক কর্মকাণ্ড আরও একবার থমকে যাওয়ার মুখে। এই দোলাচলের মধ্যে দাঁড়িয়ে দেশের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন শনিবার সমাবর্তন ভাষণে সেই প্রসঙ্গে কিছু ব্যাখ্যা দেবেন বা দিক নির্দেশ করবেন বলে আশায় ছিলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-কলকাতার (আইআইএমসি) পড়ুয়াদের অনেকে। কিন্তু এ দিন বার দু’য়েক অতিমারি থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া ছাড়া সে নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করলেন না ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ওই প্রাক্তনী। বরং জোর দিলেন অনুজদের ভবিষ্যতে পেশাদার পথে হাঁটতে কী দর্শন অনুসরণ করা উচিত, তার উপরেই। যা শুনে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টার থেকে আরও কিছু প্রত্যাশা থাকে। তা না-মেলায় কার্যত হতাশ তাঁরা।
২২ বছর আগে আইআইএমসি-তে পড়তে আসা সুব্বু (এই নামেই তাঁর পরিচিতি বেশি ছিল) এ দিন সেখানকার পড়ুয়া তথা হবু ম্যানেজারদের কাজের জগতে চলার পথে একগুচ্ছ পরামর্শ দিতে গিয়ে বিভিন্ন শ্লোকের উদ্ধৃতি, অর্থনীতিবিদ জন ন্যাশের তত্ত্ব, ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড় থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদাহরণও তুলে ধরেন। দাবি করেন, করোনা পরিস্থিতির শিক্ষা আগামী দিনে কাজে লাগবে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে পড়লে কোন যুক্তিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তার দিশা পাওয়ার আশায় ছিলেন অনেকে, তা মেটেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘উনি এমবিএ পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা ও জীবনের শিক্ষা নিয়ে বলেছেন। সে দিক থেকে এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে দেশ ও বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতির কিছু ব্যাখ্যাও দেবেন, সেই আশা করেছিলাম। তা মিলল না।’’
করোনা মোকাবিলায় সারা দেশে পরিকাঠামো নির্মাণে পিএম কেয়ার্স তহবিলের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার কিছু অন্তত মন্তব্য শোনার অপেক্ষায় ছিলেন এ বছর উত্তীর্ণ দীক্ষান্ত যাদবও। কিন্তু কৃষ্ণমূর্তি করোনার থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বললেও তার কার্যত কোনও ব্যাখ্যা দেননি। তা নিয়ে আশাহত দীক্ষান্ত। তবে তিনি আরও বেশি হতাশ অনলাইনে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর্দায় দেশের অন্যতম সেরা এই ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের বানান ভুল থাকায়। করোনার জন্য এ বার অনলাইনে হয়েছে আইআইএমসি-র সমাবর্তন।
শিক্ষকদের একাংশ-সহ সংশ্লিষ্ট মহলেরও দাবি, সমাবর্তন ভাষণে সাধারণত বিশেষজ্ঞ বা সমাজে উল্লেখযোগ্য জায়গা পাওয়া ব্যক্তিরা পড়ুয়াদের নতুন পথে হাঁটতে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও বাস্তবে নিরিখে পরামর্শ বা বার্তা দেন। আর সেই ব্যক্তি যদি দেশের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা হন, তা হলে অতিমারির মতো অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে হবু পেশাদারেরা তাঁর থেকে সেই প্রসঙ্গে কিছু ব্যাখ্যা আশা করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। যার অভাব এ দিন অনুভূত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy