ছবি: সংগৃহীত
দেশের বাজারে বিক্রিবাটায় প্রাণ নেই। কিছুটা ভরসা ছিল রফতানি। করোনাভাইরাসের দাপটে এ বার তাতেও দানা বেঁধেছে অনিশ্চয়তা। লোকসানের আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে এ রাজ্যের চর্মশিল্প মহল।
রফতানিকারী সংস্থা সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে চামড়ার ব্যাগ, জুতো, বেল্ট-সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পিভিসি সোলস, ডি-রিং, ছোট তালা, জিপার, লাইনিং-এর মতো উপকরণ প্রায় ৬০% জোগায় চিনের ছোট-মাঝারি বহু কারখানা। কিন্তু সেই জোগান আপাতত বন্ধ। কারণ, করোনা সংক্রমণে পড়শি মুলুকের অধিকাংশ জায়গায় সেগুলি তৈরির কারখানায় কাজ হচ্ছে না। এর ধাক্কা এসে পড়েছে রাজ্যে চর্মশিল্পে। তাদের দাবি, আরও কিছু দিন এই অবস্থা চললে রফতানি ব্যবসা বিপুল ধাক্কা খাবে।
কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টসের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজা জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশেই এই ছবি। চিনা উপকরণের অভাবে উৎপাদন কমছে। উৎপাদন কমলে, রফতানিও কমবে।
ভারতের চর্মপণ্য সব থেকে বেশি রফতানি হয় আমেরিকা, জার্মানি ও ব্রিটেনে। রাজ্য থেকে যায় চামড়ার ব্যাগ, জুতো, বেল্ট, পোশাক ইত্যাদি। শিল্পের দাবি, আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে টানাপড়েনের জেরে এমনিতেই চাপে ভারতের রফতানি। কারণ, জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস প্রকল্পের সুবিধা থেকে ভারতকে বাদ দিয়েছে ওয়াশিংটন। যে প্রকল্পে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চর্মপণ্য-সহ বেশ কিছু পণ্য বিনা শুল্কে সে দেশে রফতানির সুযোগ মিলত। তার সঙ্গে এ বার চিন্তা বাড়িয়েছে চিনের করোনাভাইরাস।
সূত্রের দাবি, পুরনো আমদানি দিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু তাতে টান পড়া শুরু হয়েছে। চিনের সংস্থাগুলি জানিয়েছে আপাতত কোনও জিনিস পাঠানো সম্ভব নয়। ফলে দেশে অনেক পণ্যই তৈরি করা যাচ্ছে না। যে কারণে রফতানি ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা।
জুনেজা জানান, চিনের উপকরণ না-পেলে জার্মানি থেকে কিনতে হবে চামড়ার পণ্যের উপকরণ। কথা চলছে দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের সঙ্গেও। কিন্তু সেগুলির দাম অনেক বেশি। ফলে পণ্য তৈরির খরচ বাড়বে। বাড়বে রফতানি পণ্যের দামও। তার উপরে আমেরিকায় শুল্ক ছাড়ের সুবিধা বন্ধ। এ ক্ষেত্রে বাড়তি দামও বিদেশের বাজারে চামড়ার জিনিস বিক্রির পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দ্রুত করোনার ফাঁড়া কাটার মন্ত্র জপেই তাই অনিশ্চয়তার দিন কাটাচ্ছে এ রাজ্যের চর্মপণ্য রফতানিকারী শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy