ছবি সংগৃহীত।
ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে ১১টা ৪০ মিনিটের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে মুম্বইয়ের চার্চ গেট স্টেশনে আসতে হয়েছিল খোদ প্রিন্স চার্লসকে। শোনা যায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিলাসরাও দেশমুখ অন্যান্য অনুষ্ঠানে পৌঁছতে দেরি করলেও, সময়ের খেলাপ করেননি শুধু তাঁদের নিমন্ত্রণ রক্ষার সময়। তবে ১৩০ বছরে এক দিনও গ্রাহকের কাছে খাবারের ডাব্বা পৌঁছতে দেরি না-করে সময়ানুবর্তীতার উদাহরণ হয়ে ওঠা সেই ডাব্বাওয়ালারা এ বার হাল ছাড়লেন। বাধ্য হয়েই। জানালেন, করোনার জেরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যবসা বন্ধ রাখছেন তাঁরা।
অণ্ণা হাজারের লোকপাল বিলের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার সময়ও বন্ধ হয়নি কাজ, বৃহস্পতিবার মুম্বই থেকে ফোনে গর্ব ভরেই বললেন ডাব্বাওয়ালাদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট উল্লাস মুকে ও সেক্রেটারি অরবিন্দ সওয়ান্ত। সমীক্ষা দেখিয়েছে, মুম্বইয়ের হাজার পাঁচেক ডাব্বাওয়ালার কাজের প্রতি নিষ্ঠা এতটাই যে, এ পর্যন্ত ১.৬ কোটি বার খাবার পৌঁছনো ও খালি ডাব্বা ফেরতের ক্ষেত্রে ভুল হয়েছিল এক বার। কিন্তু করোনা এ বার হাত-পা বেঁধেছে তাঁদের।
উল্লাস ও অরবিন্দ জানান, প্রায় দু’লক্ষ গ্রাহকের অধিকাংশই এখন বাড়ি থেকে কাজ করছেন। তার উপরে মহারাষ্ট্র সরকার ভিড় এড়াতে বলছে। তাঁদের কথায়, ‘‘ট্রেনে যাই। স্টেশনে ডাব্বা ভাগ করার জায়গায় ভিড় থাকে। কমপক্ষে ৫০-৬০ জনের। তার পর সাইকেলে সেগুলি বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছনো হয়। গোটা মুম্বইতেই আমাদের চলাফেরা। সরকার যখন বাড়তি সতর্কতা নিতে বলছে, তখন তা মেনে চলা উচিত।’’
মাসে গ্রাহকের থেকে ১০০০-১৬০০ টাকা নেন তাঁরা, দাবি উল্লাসদের। জানালেন, ভাইরাস রুখতে আপাতত স্কুল-কলেজ বন্ধ। অফিসও বাড়ি থেকে করায় বহু গ্রাহক ডাব্বার জোগান বন্ধ রাখতে বলছিলেন। তাই এই প্রথম সাময়িক ব্যবসা বন্ধ রাখার পথেই হাঁটলেন তাঁরা।
এতে রোজগার মার যাবে না?
অরবিন্দদের দাবি, ‘‘আমরা খুবই ছোট ব্যবসায়ী। গরিব। গ্রাহকদের কাছে আর্জি জানাব, যাতে এই ক’দিনের বেতন কাটা না-হয়। সকলের স্বার্থেই তো এই সিদ্ধান্ত। আশা করব, গ্রাহকেরা বুঝবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy