ফাইল চিত্র।
জনজীবনে শহর এবং গ্রামীণ সমবায় ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা বাড়াতে পদক্ষেপ করল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ঋণনীতি পর্যালোচনায় তাদের জন্য ঘোষণা হল একগুচ্ছ। এক দিকে মানুষকে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির গৃহঋণ দেওয়ার সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানো হল। অন্য দিকে গ্রামীণ সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে সায় দেওয়া হল আবাসন প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে। শহুরে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে তারা।
এই সমবায় ব্যাঙ্ক, সমবায় সংস্থার মাধ্যমে উন্নয়নকে নিচু তলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে গত বছর কেন্দ্র সমবায় মন্ত্রক তৈরি করে। দায়িত্ব দেওয়া হয় অমিত শাহকে। তিনি গুজরাতে আমদাবাদের সমবায় ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পর থেকেই সমবায় ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে ঝাঁপিয়েছে কেন্দ্র। বাজেটে ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এখন নেটে কেন্দ্র ও নাবার্ডের মাধ্যমে দেশের সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্ক-সংস্থাকে যুক্ত করার কাজ চলছে। গত সপ্তাহে সমবায় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের জেম পোর্টাল মারফত পণ্য কেনার ছাড়পত্রও দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সরকারি কর্তাদের মতে, আজ শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঘোষণাও সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে ব্যাঙ্কিং শিল্পের মূল স্রোতে নিয়ে আসার পাশাপাশি তাদের আয় বৃদ্ধির পথ করে দেওয়ার চেষ্টা। তাই ধার দেওয়ার পরিসর বাড়ানো হল।
আরবিআইয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, এখন শহুরে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ফ্ল্যাট-বাড়ি তৈরি বা কেনার জন্য আগের তুলনায় ১০০% বেশি ঋণ মিলবে। গ্রামীণ সমবায় ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে তা বাড়ানো হয়েছে ২৫০%। এত দিন তারা শুধু সমবায় সদস্যদের গৃহঋণ দিতে পারত। এ বার বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি হতে চলা আবাসন প্রকল্পের জন্য নির্মাণ সংস্থাকেও দিতে পারবে। সেই পুঁজি হতে হবে মোট যে ঋণ দেয়, তার ৫ শতাংশের মধ্যে।
এ দিন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেন, বিশেষত গ্রামে আবাসনের সমস্যা মেটাতে সমবায় ব্যাঙ্কগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তা মাথায় রেখেই গৃহঋণে তাদের যোগদান বাড়াতে এই পদক্ষেপ।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঋণগ্রহীতারা তো এতে উপকৃত হবেনই। লাভবান হবে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিও। সেই সঙ্গে সুবিধা হবে আবাসন শিল্পের। তবে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সমীর ঘোষ বলেন, “ঋণ আদায়ের ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণও জরুরি। অতীতে ধার শোধ না হওয়ায় অনেক সমবায় ব্যাঙ্ক সমস্যায় পড়েছে।’’
এখন শহুরে সমবায় ব্যাঙ্কের মোট আমানত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে হলে তারা সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণ দিতে পারে। আমানত ১০০ কোটি টাকার বেশি হলে ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। যা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৬০ লক্ষ এবং ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা। এখন গ্রামীণ সমবায় ব্যাঙ্কের নিট সম্পদ ১০০ কোটি টাকার মধ্যে হলে গৃহঋণ দিতে পারে সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ কোটি টাকা আর ১০০ কোটি টাকার বেশি হলে ৩০ লক্ষ। তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৫০ লক্ষ এবং ৭৫ লক্ষ টাকা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy