—প্রতীকী চিত্র।
বর্ষা অনিয়মিত। ফলে রোজগার গিয়েছে কমে। অথচ খাদ্যপণ্যের দাম চড়েছে। এই জোড়া ধাক্কায় নতুন করে আঘাত লাগতে পারে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। ফের মাথা নামাতে পারে চাহিদা। আর তার জেরে আরও তলিয়ে যেতে পারে আয়। আশঙ্কার এমন বার্তা উঠে এসেছে মূল্যায়ন সংস্থা কেয়ার-এজ রেটিংস-এর রিপোর্টে।
সামনেই উৎসবের মরসুম। সাধারণত যখন চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই চাহিদা কেনাকাটায় বদলে গেলে রোজগার বাড়ে বহু মানুষের। কিন্তু মূল্যায়ন সংস্থাটির ইঙ্গিত, এ বছরে অনিয়মিত বর্ষা সব হিসাব ওলটপালট করে দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ছবিটা দুশ্চিন্তা বাড়ানোর মতো। আগামী দিনে চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নির্ভর করবে বৃষ্টির উপরেই।
কেয়ার-এজ বলছে, চাহিদা বাড়লে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও (জিডিপি) বাড়ে। আর এই চাহিদা বৃদ্ধির অনেকখানি নির্ভর করে দেশের বড় অংশ জুড়ে থাকা গ্রামীণ এলাকার উপর। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই এলাকা অতিমারিতে এক দফা ধাক্কা খেয়েছে। সে বারও আয় কমেছিল। নেমেছিল বিক্রিবাটা। ঝিমিয়ে পড়ে অর্থনীতি। তার থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি এবং অনিয়মিত বর্ষা তাতে আঘাত করল।
গ্রামীণ ক্ষেত্রে আয়ের প্রধান উৎস চাষ। যথেষ্ট পরিমাণ বর্ষা না হলে তাই সমস্যা হয় কৃষি উৎপাদনে। যার জেরে আয় কমে ধাক্কা খায় চাহিদা। রেটিং সংস্থাটি জানিয়েছে, “গ্রামীণ ক্ষেত্রে চাহিদায় ভাটা দেখা দিতে পারে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং আয় কমার জেরেই তা ঘটবে।’’
চলতি মরসুমে প্রথম থেকেই বর্ষা ছিল অনিশ্চিত। ফলে অনেক জায়গাতেই চাষের জন্য বীজ বপনের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এর জেরে কৃষিতে ফলন মার খেয়েছে। সামনেই শীতকাল। রবি ফসলের মরসুম। রেটিং সংস্থাটির বক্তব্য, সেই ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সেচের সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে গ্রামীণ ক্ষেত্রে জলাধারে গত ১০ বছরের মধ্যে গড় জলের মাত্রা সব থেকে নীচে নেমে এসেছে।
এ দিকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত মোদী সরকার। অতিমারির সময়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি বিশেষ করে গ্রামীণ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য যে সব প্রকল্প চালু করেছিল, মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনতে খরচ কমানোর লক্ষ্যে অধিকাংশই এখন তুলে নিচ্ছে। এর ফলেও গ্রামে মানুষের আয় কমেছে। এই সবেরই বিরূপ প্রভাব পড়েছে চাহিদায়।
কেয়ার-এজ জানিয়েছে যে, গ্রামে ইতিমধ্যেই কমেছে দু’তিন চাকার যান এবং ট্রাক্টর বিক্রি। ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন কমাও বিশেষত গ্রামীণ ক্ষেত্রে চাহিদা কমার ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তবে কিছু বিষয় ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করছে বলে মনে করছে তারা। যেমন, ২০২৩-২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাতে পারে। যা সাধারণ মানুষের হাতে খরচের জন্য অর্থের সংস্থান বাড়াবে। পাশাপাশি কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি বাড়াতে পারে মূলধনী খাতে খরচ। যা বেসরকারি লগ্নি টানতে সহায়ক হবে। এর ফলে কর্মসংস্থান বাড়লে তা চাহিদা বৃদ্ধির পথ চওড়া করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy