সম্প্রতি অশোধিত তেলের দাম কমার পরে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দর কমানোর দাবি উঠলেও সরকার কানে তোলেনি। প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব বাজারে ঊর্ধ্বগামী অশোধিত তেলের দর চিন্তা বাড়াচ্ছে ভারতেও। তেল রফতানিকারীদের সংগঠন ওপেক ও তার সহযোগীরা দিনে আরও ১১.৬ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল উৎপাদন কমানোর কথা ঘোষণা করেছে রবিবার। আশঙ্কা ছিল এর জেরে দাম বাড়বে তার। যা সত্যি করে সোমবার দেখা গেল এক সময়ে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম উঠেছে ব্যারেলে ৮৬ ডলারে। যা ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ তো বটেই। গত প্রায় এক বছরে এক দিনে এত বেশি বাড়েনি দাম। ডব্লিউটিআই-ও পৌঁছেছে ৮০ ডলারের কাছাকাছি। অথচ কয়েক দিন আগেও এই দুই জ্বালানির দাম ছিল যথাক্রমে ব্যারেলে ৭১ এবং ৬৬ ডলার।
উৎপাদন ছাঁটার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ভারতের মতো তেল আমদানি নির্ভর দেশে। এ দিন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, গত অর্থবর্ষের এপ্রিল-ফেব্রুয়ারিতে ২১.১৬ কোটি টন তেল আমদানি করেছে দেশ। ২০২১-২২ সালে যা ছিল ২১.২৪ কোটি টন। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, দাম এ ভাবে চড়তে থাকলে তা শুধু আমদানি খাতে ব্যয়ই বাড়বে না। এর ফলে পণ্য সরবরাহ খরচ বাড়লে তার প্রভাব পড়বে জিনিসের দামে। ফের মাথাচাড়া দেবে মূল্যবৃদ্ধি। সুদ বাড়িয়ে যাতে রাশ টানার চেষ্টা করছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। জিনিসের দাম বাড়লে আরও দুর্ভোগে পড়বেন মানুষ, ধাক্কা খাবে চাহিদা। সব মিলিয়ে প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।
তেল শিল্পের বক্তব্য, আশা ছিল ব্যারেলে দাম ৭৩-৭৪ ডলার থাকলে আগামী কিছু দিনে দেশে তেলের দাম কমানোর পথে হাঁটবে সংস্থাগুলি। কিন্তু বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বাড়লে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশও বলছে, সম্প্রতি অশোধিত তেলের দাম কমার পরে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দর কমানোর দাবি উঠলেও সরকার কানে তোলেনি। বিরোধীদেরও বরাবরের অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে দাম চড়লে দেশে জ্বালানি যত দ্রুত দামি হয়, উল্টোটা হলে তেমন ভাবে সস্তা হয় না। ফলে এখন বিশ্ব বাজারে দাম বাড়লে ভারতে কী হয়, তা দেখার। বিশেষ করে গোল্ডম্যান স্যাক্সের রিপোর্ট যখন জানাচ্ছে, উৎপাদন কমলে চলতি বছরে অশোধিত তেল ব্যারেলে ৯৫ ডলারে পৌঁছতে পারে। পরের বছর হতে পারে ১০০ ডলার।
তার উপরে অভিযোগ উঠেছিল, বিশ্ব বাজারে চড়া দামের সুবিধা নিতে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের বিক্রি কাটছাঁট করে রফতানি বাড়াচ্ছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়, নায়ারা এনার্জির মতো বহু বেসরকারি তেল সংস্থা। তাতে রাশ টানতে গত বছর থেকে তেলের মুনাফায় বাড়তি কর (উইন্ডফল ট্যাক্স) বসিয়েছে কেন্দ্র। যদিও এ দিন পরে জহরবাবুর দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির রফতানির পরিমাণ জানাচ্ছে না সরকার। তবে অন্য অংশ বলছে, রবিবারই তেল রফতানিতে রাশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। সেই পদক্ষেপে দেশে জোগান বাড়লে হয়তো দাম বাড়াতে হবে না সংস্থাগুলিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy