—প্রতীকী চিত্র।
ভোট পর্ব পার করে কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। জোট সরকার হলেও বৃহত্তম শরিক বিজেপি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলি নিজেদের হাতে রাখায় বাজারের উদ্বেগ কমেছে। লগ্নিকারীদের বিশ্বাস, এর ফলে আর্থিক সংস্কারের কর্মসূচি বিঘ্নিত হবে না। ফলে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন দুই সূচক বিপুল ধাক্কা খেলেও ইতিমধ্যে তা সামলে উঠেছে। গত সপ্তাহের শেষে নতুন শিখরে পা রেখেছে সেনসেক্স এবং নিফ্টি। তবে এর পরবর্তী ধাপে লগ্নিকারীদের চোখ রাখতে হবে অর্থনীতির বিভিন্ন উপাদানের দিকে। আর প্রস্তুতি শুরু করতে হবে আয়কর রিটার্ন জমার।
বাজারের নজর এ বার ঘুরতে শুরু করেছে অর্থনীতিতে। মে মাসের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৮৩% থেকে ৪.৭৫ শতাংশে নামার খবরে বৃহস্পতিবার তেতে ওঠে সূচক। উস্কে দেয় সুদ কমার জল্পনা। ফলে শেয়ারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি, ঋণপত্রের ইল্ড নেমে আসে ৬.৯৮ শতাংশে। আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভও ইঙ্গিত দিয়েছে, চলতি বছরে অন্তত এক বার সুদ কমানো হবে। খাদ্যপণ্যের দাম তেমন মাথা না নামালেও বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেনসেক্স যথাক্রমে ২০৪ ও ১৮২ পয়েন্ট বাড়ে। ৭৬,৯৯৩ অঙ্কে পৌঁছে তৈরি করেছে নতুন নজির। একই দিনে নিফ্টিও পৌঁছেছে নতুন শিখরে (২৩,৪৬৬)। প্রধান দুই সূচকের তুলনায় গত সপ্তাহে আরও দ্রুত হারে বেড়েছে মাঝারি এবং ছোট শেয়ারের সূচক। বৃহস্পতিবার বিএসই মিডক্যাপ বেড়েছে ৩৫৮ পয়েন্ট। বিএসই স্মলক্যাপ ৪৪৬। শুক্রবার তা বেড়েছে যথাক্রমে ৫৩৭ এবং ৫২১ অঙ্ক। সামগ্রিক ভাবে বাজার এতটা বাড়ায় শেয়ারভিত্তিক ফান্ডগুলির ন্যাভ আকর্ষণীয় জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। গত সপ্তাহের প্রত্যেক দিন বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার কিনেছে।
এ দিকে, অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ভাল-মন্দ মেশানো খবর আসছে। এপ্রিলে শিল্পবৃদ্ধির হার মার্চের ৫.৪% থেকে নেমেছে ৫ শতাংশে। যা তিন মাসের সর্বনিম্ন। জুনের প্রথম সপ্তাহের শেষে ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার ৪৩১ কোটি ডলার বেড়ে ৬৫,৫৮২ কোটি ডলারে পৌঁছে রেকর্ড গড়েছে। আবার ভারতীয় মুদ্রার নিরিখে ডলার বেশ চড়া (৮৩.৫৬ টাকা)। যা বাণিজ্য ঘাটতি চওড়া হওয়ার অন্যতম কারণ। মে মাসে পণ্য আমদানির পরিমাণ যেখানে ৬১৯১ কোটি ডলার, সেখানে রফতানির অঙ্ক ছিল ৩৮১৩ কোটি। অর্থাৎ, ঘাটতি ২৩৭৮ কোটি। আগামী দিনে যে সমস্ত দিকে বাজারের নজর থাকবে, তার মধ্যে রয়েছে বাজেট, বর্ষার গতিপ্রকৃতি, মূল্যবৃদ্ধি এবং এপ্রিল-জুনে সংস্থাগুলির ফল।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম যাত্রিবাহী গাড়ি সংস্থা হুন্ডাই মোটরস ইন্ডিয়া বাজারে প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছেড়ে প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে। তা হতে চলেছে ভারতের বৃহত্তম আইপিও। এখন যে তকমা রয়েছে এলআইসির (২২,০০০ কোটি টাকা)। ইতিমধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রক সেবির কাছে আবেদন জমা করেছে হুন্ডাই।
এ দিকে জুনের অর্ধেক কেটে গিয়েছে। এ বার যত দ্রুত সম্ভব সেরে ফেলতে হবে আয়কর রিটার্নের কাজ। ব্যক্তিগত আয়করদাতাদের নানা সূত্রে আয়, লগ্নি, উৎসে কাটা করের মতো তথ্য তোলা হয়েছে তাঁদের অ্যানুয়াল ইনকাম স্টেটমেন্ট (এআইএস), ট্যাক্সপেয়ার ইনফরমেশন সামারি এবং অ্যানুয়াল ট্যাক্স স্টেটমেন্টে। এই সব তথ্য পাওয়া যাবে আয়কর দফতরের পোর্টালে নিজের প্যান ব্যবহার করে। যার ভিত্তিতে দাখিল করতে হবে রিটার্ন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অবশ্য পোর্টালের তথ্য নির্ভুল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, এআইএস-এ একই আয় কিছু ক্ষেত্রে দু’বার দেখানো হয়েছে। এমন ঘটলে তা সংশোধনের জন্য পোর্টালের মাধ্যমেই আবেদন জানাতে হবে। রিটার্ন দাখিল করতে হবে তথ্য সংশোধনের পর। এই কারণে রিটার্নের কাজ দ্রুত শুরু করা উচিত। প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে, নতুন কর কাঠামোকেই কিন্তু এ বার মূল কাঠামো হিসেবে ধরা হবে। পুরনো কাঠামোয় থাকতে চাইলে শুরুতেই ফর্মে তা বাছতে হবে। না হলে ধরা হবে নতুন কাঠামোয় রিটার্ন জমা দিতে চান। তখন পুরনো কাঠামোর ছাড়ের সুবিধা মিলবে
না। রিটার্ন অবশ্যই ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে হবে। না হলে এক দিকে যেমন জরিমানা বসতে পারে, তেমনই পুরনো কাঠামোয় প্রযোজ্য বিভিন্ন ছাড় থেকে বঞ্চিত হবেন।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy