প্রতীকী ছবি।
অস্থির বাজারে সঞ্চয়ের টাকা কোথায় লগ্নি করবেন, এই প্রশ্নে ধন্দে মানুষ। জিনিসের দাম লাফিয়ে বাড়লেও, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে সুদ স্থির। খুচরো ও পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি যখন যথাক্রমে ৬.৯৫% ও ১৪.৫৫%, তখন পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাঙ্ক জমায় সর্বাধিক সুদ ৫.৭৫%। প্রবীণরা পাচ্ছেন বড়জোর ৬.৫০%। অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে প্রকৃত আয় শূন্যেরও নীচে। তা আরও কম করদাতাদের। ৮%-৯% হারে রাখা পুরনো জমা মেয়াদ শেষে হাতে আসার পরে অনেকেই বুঝতে পারছেন না সেই টাকা ফের কোথায় লগ্নি করবেন। বিকল্প হিসেবে বহু মানুষ মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকছেন। কিন্তু যাঁদের লগ্নি থেকে নিয়মিত স্থির আয় প্রয়োজন, তাঁরা সব টাকা ফান্ডে রাখতে নারাজ।
আশা ছিল, এপ্রিলে ডাকঘরের বিভিন্ন প্রকল্প এবং ব্যাঙ্কের জমায় সুদ বাড়বে। তার জন্য জমিও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। স্টেট ব্যাঙ্ক ঋণে ১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে, কিন্তু জমায় নয়। অল্প কিছু এনবিএফসি (ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা) আমানতে সুদ বাড়িয়েছে। তবে সেগুলিতে আস্থা নেই সকলের।
তার উপরে অস্থির শেয়ার বাজার। এই পরিস্থিতিতে শেয়ারে লগ্নি করতেও তেমন ভরসা পাচ্ছেন না মানুষ। এটা ঠিক, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি সত্ত্বেও ভারতের বাজার তলিয়ে যাচ্ছে না দেশের ফান্ডগুলির মোটা লগ্নির কারণে। কিন্তু সেখানে অস্থিরতা বহাল থাকলে ফান্ডের লগ্নিও কমবে। ফলে সব মিলিয়ে লাভজনক লগ্নির জায়গা কমছে। বিপাকে মানুষ।
উল্টে পণ্যের দাম আরও বাড়লে ও সঞ্চয়ের সুদ না বাড়লে, তা ভুয়ো অর্থ লগ্নি সংস্থা গজিয়ে ওঠার পথ করে দেবে। যারা চড়া রিটার্নের লোভ দেখিয়ে টাকা তোলে। একাংশ বাড়তি রোজগারের টানে সেই ফাঁদে পা ফেললে সর্বস্ব খোয়াবেন। কলকাতাতে এমন গোটা দুই ফান্ডের হদিশও মিলেছে, যারা ইতিমধ্যেই হাতিয়েছে মানুষের কয়েক হাজার কোটি টাকা।
চড়া হারে মূল্যবৃদ্ধি এবং সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বেড়েই চলেছে বন্ড ইল্ড। ৩ জানুয়ারি ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ড ইল্ড ছিল ৬.৪৬%। গত শুক্রবার হয়েছে ৭.১৭%। ফলে বন্ডের লগ্নিতে উৎসাহ বাড়ছে। উঁচু হারে করদাতাদের একাংশ ভারত বন্ড ইটিএফ-এ মোটা টাকা ঢালছেন। এই বন্ড ফান্ডের ইল্ড ৭.৩৪%। ব্যাঙ্ক সুদের তুলনায় ১০ বছর মেয়াদি এই ফান্ডের ইল্ড অনেকটা বেশি হওয়ায় আকর্ষণ বাড়ছে ইটিএফের। যার তহবিল লগ্নি হয় ‘AAA’ (উঁচু) রেটিংয়ের সরকারি সংস্থার বন্ডে। তাই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে থাকে। শেয়ার বাজারে কেনাবেচা হয় ফান্ডটির ইউনিট। বন্ডে লগ্নি হওয়ায় তিন বছর ধরে রেখে বিক্রি করে লাভ হলে তাতে মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের সুবিধা মেলে। এতে মূলধনী লাভ কমে আসে। কর কম দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে করের হারও কম (২০%)। তবে এখান থেকে নিয়মিত আয় সম্ভব নয়।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy