ধসের কবলে শেয়ার বাজার। চিনে হতাশ ব্রোকার। ছবি: এপি।
পতন ৬৯০। উত্থান ১২। বুধবার সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার লেনদেনের খতিয়ান।
এ দিন সাংহাই কম্পোজিট ইন্ডেক্স পড়ে যায় ৫.৯%। একই ভাবে সেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের মূল সূচক সেনঝেন কম্পোনেন্ট পড়ে যায় প্রায় ৩%। চিনা বাজারের ধসই এ দিন ছড়িয়ে পড়ে ভারত-সহ এশীয় বাজারে। গ্রিসের আর্থিক সঙ্কটের জেরে ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তায় থাকা বাজারকে আতঙ্ক গ্রাস করে। এশিয়ায় হংকং বাজারের সূচক পড়ে যায় ৮.৪৩%, গত ২০০৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। জাপানের নিক্কেই পড়েছে ৩.১৪%। এশীয় বাজারে পতনের ঢেউ সেনসেক্সকে টেনে নামায় ৪৮৪ পয়েন্ট। তবে গ্রিস আর্থিক সংস্কারের প্রস্তাব পেশ করলে তাদের সঙ্কট কাটার আশায় এ দিন মোটামুটি চাঙ্গা ছিল ইউরোপের বাজার। মার্কিন বাজার অবশ্য খোলার পরেই পড়েছে। তার পর নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ প্রযুক্তিগত কারণে থমকে যাওয়ায় বন্ধ থাকে লেনদেন।
গত প্রায় একুশ দিন ধরেই পড়ছে চিনা বাজার, যদিও তা কৃত্রিম ভাবে চাঙ্গা করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিল বাজার নিয়ন্ত্রক ও বেজিং সরকার। যেমন:
• ঋণে সুদ ও ব্যাঙ্কের নগদ জমার অনুপাত কমানো
• এই প্রথম সরকারি পেনশন তহবিল বাজারে লগ্নির অনুমতি দেওয়া
• আর্থিক সংস্থাকে শেয়ার বিক্রি করতে নিষেধ
• পিপ্লস ব্যাঙ্ক অব চায়নাকে সরকারি আর্থিক সংস্থা মারফত বাজারে নগদ জোগাতে নির্দেশ
তবে শেষ রক্ষা করতে পারেনি চিন। পতনের জেরে বাজার থেকে ইতিমধ্যেই ৩ লক্ষ কোটি ডলার শেয়ার-মূল্য মুছে যাওয়ার খবরেই এ দিন ভীত হন লগ্নিকারীরা। বুধবারের ধসের প্রকোপে কার্যত থমকে দাঁড়ায় চিনের প্রধান দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সাংহাই ও সেনঝেন। লগ্নিকারীদের আস্থা তলানিতে এসে ঠেকায় বাজারে শেয়ার বিক্রির হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পতন এড়াতে সাংহাই ও সেনঝেনে ১৪০০ সংস্থা লেনদেন বন্ধ করে দেয়, যা তাদের মোট নথিভুক্ত সংস্থার অর্ধেক। পাশাপাশি, উৎপাদন শিল্প, পরিবহণ, ইন্টারনেট পরিষেবা ইত্যাদি সংস্থার শেয়ার দর ১০ শতাংশেরও বেশি পড়ে যাওয়ায় তারাও লেনদেন বন্ধ করতে বাধ্য হয়। কারণ, পতনের সীমা দৈনিক ১০ শতাংশেই
বেঁধে দিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জ।
চিনা বাজারে এই ধসের প্রকোপ এড়াতে পারেনি মুম্বই শেয়ার বাজার। গ্রিসের সঙ্কট তাতে আরও ইন্ধন জোগায়। সেনসেক্স এক ধাক্কায় ৪৮৪ পয়েন্ট বা ১.৭২% পড়ে যায়, যা গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি। সূচক নামে ২৮ হাজারের নীচে। দাঁড়ায় ২৭,৬৮৭.৭২ পয়েন্টে। নিফটি-ও ১৪৭.৭৫ পয়েন্ট পড়ে থিতু হয় ৮৩৬৩.০৫ পয়েন্টে। বাজারে মন্দার জেরে ডলারে টাকার দামও ১৪ পয়সা পড়েছে, গত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ। এক ডলার হয়েছে ৬৩.৬০ টাকা।
অন্য দিকে, এ দিন চিনের প্রভাবেই ভারতে টাটা মোটরসের শেয়ার দর পড়েছে ৬ শতাংশের বেশি। দাঁড়িয়েছে শেয়ার পিছু ৪০৫.১৫ টাকায়। মুছে গিয়েছে সংস্থার প্রায় ৮,২০৭ কোটি টাকার শেয়ার-মূল্য। টাটা মোটরসের জাগুয়ার-ল্যান্ড রোভারের বৃহত্তম বাজারই হল চিন। সেই কারণেই এ দিন এতটা পতনের মুখ দেখেছে সংস্থাটি।
বন্ড ছাড়া পিছোতে পারে স্টেট ব্যাঙ্ক। বিশ্ব বাজারে অস্থিরতার জেরে বিদেশে বন্ড ছেড়ে ১৫০ কোটি ডলার তোলার প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে পারে স্টেট ব্যাঙ্ক। বুধবার ব্যাঙ্কের এক শীর্ষ কর্তা জানান, যতক্ষণ না স্থিরতা ফেরে, ততক্ষণ কোনও সংস্থাই নতুন করে বাজারে নামবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy