প্রতীকী ছবি।
ঋণের কিস্তিতে স্থগিতাদেশ (মোরাটোরিয়াম) চলার সময়ে সুদের উপরে সুদ বসানোর মামলায় গত সপ্তাহে কিছুটা সুর নরম করেছিল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় বলেছিল, আটটি ক্ষেত্রে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণে তা গুনতে হবে না। এক সপ্তাহ পরেই এ নিয়ে কিছুটা কঠোর মনোভাব নিল মোদী সরকার। নতুন হলফনামায় তারা জানাল, আগেই আত্মনির্ভর ভারত ও গরিব কল্যাণ যোজনায় বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা চাপ ফেলেছে রাজকোষে। তার উপরে ঋণে মোরাটোরিয়ামে সুদের উপর সুদে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে বাড়তি সুরাহা দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তা দেওয়া হলে সমস্যায় পড়বে ব্যাঙ্কিং শিল্প, ধাক্কা লাগবে আর্থিক শৃঙ্খলা তথা অর্থনীতিতে। কেন্দ্রের আর্জি, ভবিষ্যতে যেন সুদে ছাড় নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট শিল্প ক্ষেত্রের আলাদা আবেদন না-শোনে সুপ্রিম কোর্ট।
একই মামলায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত বকেয়া ঋণকে অনুৎপাদক সম্পদ চিহ্নিত করা যাবে না বলে যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তা আদতে ক্ষতি করবে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের। সেই নিষেধাজ্ঞা তোলা হোক। সেই সঙ্গে শীর্ষ ব্যাঙ্কের মত, মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ বাড়ালে ঋণ শোধে অনীহা দেখা দেবে। ধাক্কা খাবে আমানতকারী ও ব্যাঙ্কিং শিল্প।
উল্লেখ্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিযুক্ত কে ভি কামাথ কমিটি ২৬টি শিল্পকে ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। কেন্দ্র জানিয়েছিল আট ধরনের ঋণের মোরাটোরিয়ামে সুদের উপরে সুদে সুরাহার কথা। গত সোমবার এই হলফনামায় অখুশি শীর্ষ আদালত বলে, কেন্দ্রের জবাবে ব্যাখ্যার অভাব আছে। সব বিরোধের সমাধানও করা যায়নি। যেমন অতিমারিতে বিপর্যস্ত আবাসন ও বিদ্যুৎ শিল্পের সমস্যার কথা ভাবা হয়নি। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে কামাথ কমিটির রিপোর্ট এবং মোরাটোরিয়াম নিয়ে জারি হওয়া সমস্ত বিজ্ঞপ্তিও পেশ করতে নির্দেশ দেয় তারা।
কেন্দ্রের হলফনামা (গত সপ্তাহের)
২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে মোরাটোরিয়াম নিলে দিতে হবে না সুদের উপরে সুদ।
এ জন্য আট শ্রেণিকে চিহ্নিত করা হয়েছে— ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প, শিক্ষা, গৃহ, দীর্ঘমেয়াদি ভোগ্যপণ্য, গাড়ি, ব্যক্তিগত, কেনাকাটার জন্য নেওয়া ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের ধার।
সুদে ছাড়ের খরচের দায়িত্ব কেন্দ্রের।
সরকারের বক্তব্য (এ সপ্তাহের)
ইতিমধ্যেই যা যা প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে, তার বাইরে কেন্দ্রের পক্ষে কোনও ভাবে ঋণগ্রহীতাদের সাহায্য করা সম্ভব নয়।
তা দেওয়া হলে আর্থিক শৃঙ্খলা ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সমস্যায় পড়তে পারে।
আগামী দিনে শীর্ষ আদালত যেন নতুন করে কোনও শিল্পের আর্জি না-শোনে।
আদালতে আরবিআই
মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ ছ’মাসের বেশি বাড়ালে ঋণ শোধে গা-ছাড়া মনোভাব দেখা দিতে পারে।
যা ক্ষতি করবে ব্যাঙ্কিং শিল্প তথা অর্থনীতির।
মোরাটোরিয়াম চালিয়ে গেলে ঋণগ্রহীতার লাভের সম্ভাবনাও কম।
অনুৎপাদক সম্পদ ঘোষণা স্থগিতের নির্দেশ অবিলম্বে তোলা না-হলে ধাক্কা খাবে ব্যাঙ্কিং শিল্প।
প্রভাব পড়বে শীর্ষ ব্যাঙ্কের নজরদারির ক্ষমতায়।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইতিমধ্যেই ঋণগ্রহীতাদের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। সুবিধা বুধে ঋণ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা তৈরির ক্ষমতা ছাড়া হয়েছে ঋণদাতা ও গ্রহীতার উপরে।
তার উত্তরে অর্থ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব পঙ্কজ জৈন আদালতকে জানান, এক মাসের মধ্যে সুদ-সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ক্ষতিপূরণের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাবে ব্যাঙ্কগুলি। কেন্দ্রের বক্তব্য, কামাথ কমিটির সুপারিশ মোটামুটি ভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গ্রহণ করেছে। সেখানে স্পষ্ট যে, অতিমারির প্রভাব নানা ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাত্রায় পড়েছে। ফলে সব ক্ষেত্রের জন্য একই সমাধান খাটবে না। ক্ষতি বিচার করে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy