অমিত মিত্র
জিএসটি পরিষদের শেষ বৈঠকের পরে সাত মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ধাক্কা দিয়েছে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। সরকারের আয় মাথা নামানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে ফের। এই অবস্থায় রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, জিএসটি আইন অনুযায়ী প্রতি ত্রৈমাসিকে অন্তত একটি করে বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে দু’টি ত্রৈমাসিকে পার হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে উচ্চবাচ্য নেই কেন? এই নিয়ে বিতর্ক যখন মাথাচাড়া দিয়েছে, ঠিক তখনই জিএসটি পরিষদের বৈঠকের কথা জানাল কেন্দ্র। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র পরিষদের বৈঠক ডাকার দাবি তুলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লেখেন। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, তার পরেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
শনিবার অর্থ মন্ত্রক জানায়, আগামী ২৮ মে সকাল ১১টায় বৈদ্যুতিন মাধ্যমে আয়োজিত হতে চলেছে জিএসটি পরিষদের ৪৩তম বৈঠক। নয়াদিল্লি থেকে সভাপতিত্ব করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। যোগ দেবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অর্থমন্ত্রী এবং অফিসারেরা।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন, করোনা চিকিৎসার ওষুধ, চিকিৎসার যন্ত্রপাতি, অক্সিজেনের উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করা হোক। মোদী উত্তর না-দিলেও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি কার্যত খারিজ করে দিয়েছিলেন নির্মলা। এর পরেই অমিতবাবু নির্মলাকে চিঠি লিখে দাবি করেন, অবিলম্বে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হোক। দীর্ঘ সময় ধরে পরিষদের বৈঠক না-ডেকে কেন্দ্র সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে জিএসটি চালু হয়েছিল। সেই সময় ঠিক হয়, আগামী পাঁচ বছর রাজ্যগুলির করের ঘাটতি মিটিয়ে দেওয়া হবে জিএসটি-র সেসের টাকা থেকে। পাশাপাশি, প্রতি তিন মাসে একবার করে জিএসটি পরিষদের বৈঠক বসবে। এর পরে গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করে কেন্দ্র। অর্থনীতির দরজা কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জিএসটি-র পাশাপাশি কমে সেস সংগ্রহও। এই অবস্থায় রাজ্যগুলির ঘাটতি কী ভাবে মেটানো যাবে, তা চূড়ান্ত করতে গত বছরের ৫ অক্টোবর পরিষদের বৈঠক বসেছিল। রাজ্যগুলি ওই ঘটতি খাতে কী ভাবে ঋণ পাবে, অনেক বিতর্কের শেষে তা চূড়ান্ত হয় ১২ অক্টোবরে। কিন্তু তার পর থেকে সাত মাস আর কোনও বৈঠক হয়নি। এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্য স্থানীয় বিধিনিষেধ চালু করেছে। সারা দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ডে যে ফের ধাক্কা লাগবে, তা প্রায় অবশ্যম্ভাবী। এই অবস্থায় মুখোমুখি হতে চলেছেন কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের প্রাপ্য জিএসটি ক্ষতিপূরণের ঘাটতি উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছতে পারে। কারণ, আগে কষা হিসেবের মধ্যে অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবকে ধরা হয়নি। এই নিয়ে জিএসটি পরিষদের বৈঠক উত্তপ্ত হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy