ফাইল চিত্র।
ক্যালকাটা টেলিফোন্সে (ক্যাল-টেল) নতুন নিয়মে নিযুক্ত ঠিকাদারেরা সুষ্ঠু ভাবে কাজ করতে পারলে, তবেই পুরোনো ঠিকা কর্মীদের বকেয়া বেতন কিস্তিতে মেটানোর শর্ত দিয়েছিল বিএসএনএলের সদর দফতর। লক্ষ্য ছিল, বহু জায়গায় কর্মী-অফিসারদের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাশ টানা ও লাইন সারাই-সহ থমকে থাকা পরিষেবাগুলির পথ খুলে গ্রাহকদের ভোগান্তি কমানো। কিন্তু তার পরেও বেশ কিছু এলাকায় কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে পুরনো ঠিকা কর্মীদের বেতনের প্রথম কিস্তির টাকার একাংশ ফেরত যেতে বসে। এই অবস্থায় ক্যাল-টেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্থায়ী কর্মী-অফিসারদের ইউনিয়নের আর্জি মেনে ও বিএসএনএলের সদর দফতরের সায় মেলায় আপাতত সেই টাকার সবটাই মেটানো হবে। তবে তাঁদের বার্তা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলে পরের কিস্তি কবে মিলবে তার নিশ্চয়তা নেই। বরং পরিষেবার অভাবে গ্রাহক কমলে ও সংস্থার ব্যবসা মার খেলে ছোট এক্সচেঞ্জ বন্ধ হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের আশঙ্কা, এতে অন্যান্য ঠিকা কাজেও কর্মী সঙ্কোচন হতে পারে।
সময় বেঁধে ল্যান্ডলাইন-সহ বিভিন্ন তারযুক্ত পরিষেবার উন্নতির লক্ষ্যে দেশ জুড়ে ঠিকাদার নিয়োগের নতুন নিয়ম এনেছে বিএসএনএল। কিন্তু ক্যাল-টেলে পুরনো ঠিকা কর্মীদের একাংশের আন্দোলনে সর্বত্র তা চালু হয়নি। প্রচুর লাইন খারাপ হয়ে পড়ে। বারবার বলেও লাভ না-হওয়ার অভিযোগে পরিষেবা ছাড়ছেন বহু গ্রাহক। পুরনো ঠিকা কর্মীদের দাবি, তাঁদের প্রায় এক বছরের বেতন বকেয়া। তা না-মেলায় করোনা সঙ্কটে সমস্যা বেড়েছে। নতুন নিয়মে ঠিকা কর্মীর সংখ্যাও কমবে।
সম্প্রতি সব কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ক্যাল-টেলের সিজিএম বিশ্বজিৎ পাল-সহ কর্তারা। বিশ্বজিতবাবু জানান, প্রথম কিস্তির টাকা ফেরত না-নিতে সদর দফতরের সঙ্গে কথা বলার জন্য ইউনিয়নগুলিই তাঁদের আর্জি জানায়। সদর দফতর আপাতত তাতে সায় দিয়েছে। তবে তাঁর দাবি, ‘‘পুরনো ঠিকাদারেরা ঠিক বিল দিলে প্রথম কিস্তির টাকা সর্বত্র দিচ্ছি। কিন্তু অনেক বিলেই দেখা যাচ্ছে, ঠিকাদারদের আওতায় কাজ করা কর্মীদের পিএফ, ইএসআই ও জিএসটি-র টাকা জমা দেওয়ার হিসেব নেই। ফলে সমস্যা হচ্ছে।’’
এখনও অকেজো
• ল্যান্ডলাইন ৬০,০০০।
• ব্রডব্যান্ড ৯০০০।
ভুগছে ব্যবসা
• গত মাস ছয়েকে প্রায় এক লক্ষ গ্রাহক কমেছে।
• গ্রাহক কমায় ও ফোনের লাইন খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় কমছে আয়।
নতুন নিয়মে
• গ্রাহকদের অভিযোগ পাওয়ার পরে লাইন মেরামতের সময় বাঁধা হয়েছে।
• ঠিকাদারদের কাজ করতে হবে সেই সময় মেনে।
• সময় বাড়লে ঠিকাদারের কমিশন ছাঁটাই।
সারাই করতে হবে
• ১২ ঘণ্টার মধ্যে ল্যান্ডলাইন।
• ৮ ঘণ্টার মধ্যে সাধারণ ব্রডব্যান্ড।
• ৪ ঘণ্টায় বেশি মাসুলের ব্রডব্যান্ড।
• ৩ ঘণ্টার মধ্যে লিজ় লাইন।
গ্রাহকদের জন্য
• খারাপ লাইনের বিলে ছাড়ের আবেদন জানানো যাবে।
• সে জন্য আগে সংস্থার কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।
• ডকেট নম্বর-সহ ই-মেল করার ঠিকানা re•trebatectd@bs•l.co.i•
ঠিকাদার নিযুক্তির পুরনো নিয়মে ফিরে যাওয়া যে আর সম্ভাবনা নেই, তা বৈঠকে স্পষ্ট করা হয়েছে বলে জানান বিশ্বজিতবাবু। কাজ স্বাভাবিক না-হলে, পুরনো ঠিকা কর্মীদের পরের কিস্তির টাকা বা ক্যাল-টেল এলাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না বলেও দাবি কর্তাদের।
সংস্থা সূত্রের খবর, বৈঠকে ইউনিয়নগুলিকে জানানো হয়েছে, নতুন ঠিকাদার কাজ করতে না-পারলে সেখানে ক্যাল-টেলের স্থায়ী কর্মীরা করবেন। ফলে পুরনো ঠিকা কর্মীদের আর এক অংশ কাজের সুযোগ হারাতে পারেন। উপরন্তু পরিষেবা ব্যাহত হলে ও গ্রাহক সংখ্যা কমলে অনেক এক্সচেঞ্জের বহর কমার আশঙ্কা। ছোট এক্সচেঞ্জ হয় অন্যের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করার প্রক্রিয়া বছর দুয়েক আগেই শুরু হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জগুলিতে অন্য কাজে যুক্ত ঠিকা কর্মীদেরও তখন কতটা প্রয়োজন থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আর গ্রাহকদের প্রশ্ন, তাঁদের হয়রানি কমবে কবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy