পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) নিয়ে নিজেদের প্রথম অডিট রিপোর্টে তার জটিলতার সমস্যার দিকে আঙুল তুলল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেলারেল (সিএজি)। একই সঙ্গে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থায় গলদের জেরে কাঁচামালে মেটানো করের টাকা (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) ফেরত চাওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি হচ্ছে বলেও চিহ্নিত করল তারা। তাদের মতে, এই সমস্ত ফাঁকফোকর মেরামত করলে, তবেই সহজ-সরল হবে নতুন পরোক্ষ করের এই ব্যবস্থা।
জিএসটি চালুর পর থেকেই তার জটিলতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে শিল্প। বিশেষত ছোট-মাঝারি শিল্প। অভিযোগ উঠেছে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট আটকে থাকা নিয়ে। শিল্পের দাবি, এতে অসুবিধা হচ্ছে লগ্নিতে। সেই সমস্যার কথা প্রতিফলিত হয়েছে লোকসভায় পেশ করা সিএজি-র রিপোর্টে।
কথা ছিল, জোগানদার করের টাকা মেটালে সঙ্গে সঙ্গে কাঁচামালে করের টাকা ফেরত পাবেন তা ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদনকারী। তার জন্যই তৈরি হয়েছিল ইনভয়েস ম্যাচিংয়ের প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রযুক্তিগত সমস্যায় তা রূপায়িত করতে না পারায় প্রক্রিয়া আটকে গিয়েছে। ফলে দেরি হচ্ছে টাকা ফেরত পেতেও। যে সমস্যার দ্রুত সমাধান জরুরি বলে মনে করে সিএজি। তাদের মতে, প্রথমত এই কর চালুর আগে সব ত্রুটি খুঁজে বার করার জন্য আরও পরীক্ষা জরুরি ছিল। আর দ্বিতীয়ত, তথ্যপ্রযুক্তির যে মেরুদণ্ডের উপরে পুরো জিএসটি আদায় ও রিটার্ন প্রক্রিয়া দাঁড়িয়ে (জিএসটিএন), তার সমস্ত ত্রুটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।
খামতি কোথায়
চালুর দু’বছর পরেও পুরোদস্তুর সরল হয়নি কর ব্যবস্থা
• বিল মিলিয়ে (ইনভয়েস ম্যাচিং) কাঁচামালে মেটানো করের টাকা (ইনপুট ট্যাক্স) ফেরত পাওয়ার বন্দোবস্ত এখনও হয়নি।
• রিটার্নের পদ্ধতি জটিল হওয়া এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই ফিরিয়ে নিতে হয়েছে ইনভয়েস ম্যাচিং। ঝুঁকি থেকে গিয়েছে ভুয়ো ইনপুট ট্যাক্সের দাবিরও।
• চালুর পর থেকে যে ভাবে বার বার এই করে বদল হয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব স্পষ্ট। আগে ভাল করে ত্রুটি পরীক্ষা করে তবে উচিত ছিল চালু করা।
আদায়ে ঘাটতি
• ২০১৭-১৮ সালে কেন্দ্রের পরোক্ষ কর আদায় বৃদ্ধি ২০১৬-১৭ সালের বৃদ্ধির হারের তুলনায় বেশ কম। বিশেষত পণ্য ও পরিষেবা থেকে কেন্দ্রের কর আদায় কমেছে ১০%।
জমায় সমস্যা
• সময়ে কর দিলেও বৈদ্যুতিক ক্যাশ লেজার আপডেটে দেরি। অসুবিধা রয়েছে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে কর জমার ক্ষেত্রেও।
সম্মিলিত জিএসটিতে অসুবিধা
• এই টাকা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কী ভাবে ভাগ হবে, অনেক ক্ষেত্রে তার ‘সেটল্মেন্ট রিপোর্ট’ তৈরি হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা জিএসটিআর-৩বি ফর্মেও।
• এই সমস্ত কারণে ভাগ না হয়ে পড়ে আছে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার সম্মিলিত জিএসটি। আর ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮-র জুলাইয়ের মধ্যে ৭৭৬ কোটি আটকে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে।
ক্লেমে জালিয়াতি
• কাঁচামালে মেটানো করের টাকা ফেরতের দাবি জানানোয় চোখে পড়ছে বড় অঙ্কের জালিয়াতির ঘটনাও।
• তা আটকাতে আরও সজাগ হওয়া উচিত তথ্যপ্রযুক্তির বাঁধন।
জিএসটির মতো কর ব্যবস্থা যে দেশে চালু করা গিয়েছে, তাকে সাফল্য হিসেবে অগ্রাহ্য করেনি সিএজি। কিন্তু উল্লেখ করেছে সম্মিলিত জিএসটি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ভাগে দেরি নিয়ে সমস্যার কথা। কর জমায় অসুবিধা থেকে ক্লেমে জালিয়াতি, কোথায় মেরামতি জরুরি তা চিহ্নিতও করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy