ফাইল চিত্র।
সেনসেক্স ৬০ হাজার পেরিয়েও ক্নান্ত নয়। ৮ অক্টোবর ওই ঘরে ঢোকার পরে মাত্র চারটি লেনদেনের মধ্যেই সূচকটি পৌঁছে যায় ৬১ হাজারে। নবমীর দিন বাজারের এমন উত্থান লগ্নিকারীদের পুজোর আনন্দকে বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। একই সপ্তাহে নিফ্টি প্রথম বার পা রেখেছে ১৮ হাজারের ঘরে। সপ্তাহ শেষে থামে ১৮,৩৩৯ অঙ্কে। সেনসেক্স এবং নিফ্টি, দুই শেয়ার সূচকই এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে উচ্চতার নতুন শিখরে। ১ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে শেয়ার বাজার কিছুটা সংশোধন দেখেছিল। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সেনসেক্স পড়ে মোট ১২৮২ পয়েন্ট। কিন্তু তার পরেই পতনে দাঁড়ি। পরের দু’টি সপ্তাহে মোট উত্থান যথাক্রমে ১২৯৩ এবং ১২৪৭ পয়েন্ট। বাজারের এই লাগাতার উত্থানের সুফল শুধু শেয়ারে লগ্নিকারীরা নয়, ভোগ করছেন মিউচুয়াল ফান্ডের কয়েক
কোটি গ্রাহকও।
তবে এত উত্থানের পরেও উদ্বেগ থাকছেই। আর সেটা মূলত তেলের অস্বাভাবিক চড়া দাম নিয়ে। অবিলম্বে দাম না-কমলে মূল্যবৃদ্ধিকে তা ঠেলে উপরে তুলবে। যা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তায় পাঁচিল তুলতে পারে।
চলতি সপ্তাহে অবশ্য শেয়ার বাজারের নজর থাকবে একগুচ্ছ সংস্থার লাভ-ক্ষতির হিসাবে। গত সপ্তাহে চলতি অর্থবর্ষের জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফল প্রকাশ করেছে কয়েকটি নামী সংস্থা। যাদের বেশির ভাগই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বার হিসাবের খাতায় চোখে পড়ার মতো উন্নতি করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। চলতি সপ্তাহে যে সব সংস্থা ফল প্রকাশ করবে তার মধ্যে আছে নেস্লে, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, হ্যাভেল্স, এশিয়ান পেন্টস, জেএসডব্লিউ স্টিল, রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি লাইফ ইত্যাদি বড় মাপের সংস্থা। লগ্নিকারীদের আশা সামগ্রিক ভাবে এ বার বিভিন্ন সংস্থার হিসাবের খাতা দেখে আরও উৎসাহ পাবে শেয়ার সূচক।
যে সব কারণ গত সপ্তাহে শেয়ার বাজারকে উত্থানে সাহায্য করেছে সেগুলি হল—
* অগস্টে দেশের শিল্পোৎপাদনের ১১.৯% হারে বৃদ্ধি।
* সেপ্টেম্বরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৩৫ শতাংশে নেমে আসা, যা পাঁচ মাসের মধ্যে সব থেকে কম।
* প্রথম সারির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির উন্নত ফল এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার কথা শোনানো।
* দেশে টাকার জোগান এবং শেয়ার বাজারে লগ্নি বহাল থাকা।
* ভাল বর্ষা প্রাপ্তি এবং কৃষিতে ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা।
* (উপরের বিষয়গুলিতে ভর করে) অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে এবং তার হাত ধরে শেয়ার বাজারের দৌড় বহাল থাকবে, লগ্নিকারীদের মনে আরও দৃঢ় ভাবে চেপে বসা এই বিশ্বাস।
কিন্তু মনে রাখতে হবে, শিল্পোৎপাদন এতটা ভাল দেখালেও তা হয়েছে গত বছরের অগস্টে উৎপাদনের অতি নিচু ভিতের তুলনায়। অর্থাৎ এই বৃদ্ধি নিয়ে উচ্ছ্বসিত হওয়ার তেমন কারণ নেই। মূল্যবৃদ্ধির হারের মাথা নামানো আপাতদৃষ্টিতে খুশি হওয়ার বিষয়। কিন্তু এখানেও স্বস্তির জায়গা কম, আশঙ্কার বেশি। কারণ, ভোজ্য এবং জ্বালানি তেলের বিপুল দাম। যে ভাবে সেই দাম বাড়ছে, তাতে মূল্যবৃদ্ধি হার কত দিন নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নিয়ে সংশয় আছে যথেষ্ট।
এক সপ্তাহ আগে ২৯% বৃদ্ধির তথ্য পেশ করেছিল টিসিএস। গত সপ্তাহে ভাল ফলাফল উপহার দিয়েছে ইনফোসিস, উইপ্রো, এইচসিএল টেক, মাইন্ডট্রি। ইনফোসিস এবং উইপ্রোর নিট লাভ বেড়েছে যথাক্রমে ১১.৮% এবং ১৭.৯৬%। ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও আশার কথা শুনিয়েছে এই দুই সংস্থা। শেয়ার পিছু ১৫ টাকা অন্তর্বর্তীকালীন ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইনফোসিস। অন্য দিকে, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১৮%। আগামী এক মাস শেয়ার বাজারের গতিপ্রকৃতির অনেকটাই নির্ধারণ করবে প্রকাশিত হতে থাকা সংস্থার আর্থিক ফল।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy