Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Krishnamurthy Subramanian

অর্থনীতির ঝিমুনির জন্য দায়ী ব্যাঙ্কই: কৃষ্ণমূর্তি

মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বললেও অনেকে মনে করাচ্ছেন, কেন্দ্র তা কমানোর পথই নিয়েছে।

কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন। —ফাইল চিত্র

কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

দেশের অর্থনীতির ঝিমুনির দায় ব্যাঙ্কগুলির উপরেই চাপালেন কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন। সেই সঙ্গে বললেন, এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে বৃদ্ধিতে গতি ফেরাতে ব্যাঙ্কের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে ভারতকে। বিশ্ব মানের ব্যাঙ্ক তৈরির জন্য জোর দিতে হবে মানসিকতা বদলে। হয়ে উঠতে হবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের মতো। যারা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও সফল।

রবিবার বন্ধন ব্যাঙ্কের পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত স্মারক বক্তৃতায় কৃষ্ণমূর্তি বলেন, ব্যাঙ্কিং শিল্পের হাত ধরেই ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। অথচ অতীতে অবিবেচকের মতো ঢালাও ঋণ দিয়ে উল্টে অর্থনীতির সর্বনাশ করেছে ব্যাঙ্কগুলি। হিসেবের খাতায় চেপেছে পাহাড়প্রমাণ অনুৎপাদক সম্পদ। যে কারণে এখন প্রয়োজন থাকলেও ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি আর নিতে চাইছে না তারা। অথচ ধারের অভাবে ধুঁকছে শিল্প। আর্থিক কর্মকাণ্ড ধাক্কা খাচ্ছে। যা বৃদ্ধির চাকাকে বসিয়ে দিয়েছে।

এই প্রেক্ষিতে আরও বেশি ঋণ দেওয়ার দরজা খুলতে দেশে ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা। তাঁর মতে, ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়লে প্রতিযোগিতাও বাড়বে। ফলে যখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে, তখন গ্রাহক টানতে সকলেই সুদের হার কমানোর পথে বেশি করে হাঁটবে। যার সুবিধা পাবে শিল্প এবং সাধারণ মানুষ। বাড়বে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড, চাহিদাও।

মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বললেও অনেকে মনে করাচ্ছেন, কেন্দ্র তা কমানোর পথই নিয়েছে। জোর দিচ্ছে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তির উপরে। ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে চারটি বড় ব্যাঙ্ক তৈরি করতে চাইছে তারা। কৃষ্ণমূর্তি যদিও এ দিন রাষ্ট্রায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাঙ্কের কথা আলাদা করে তোলেননি। বরং বলেছেন, ভারতের থেকে কম জনসংখ্যার অনেক দেশেই ব্যাঙ্কের সংখ্যা এখানকার চেয়ে বেশি। যেমন, আমেরিকার জনসংখ্যাই ভারতের এক তৃতীয়াংশ। অথচ সেখানে ব্যাঙ্ক রয়েছে ভারতের প্রায় ২০ গুণ। পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও, ভারতের একমাত্র স্টেট ব্যাঙ্কই বিশ্বের প্রথম ১০০টি ব্যাঙ্কের তালিকায় রয়েছে। তা-ও ৫৫ নম্বরের। অথচ অনেক ছোট অর্থনীতির দেশ হয়েও সুইডেন, সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়ামের মতো দেশের একাধিক ব্যাঙ্ক সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছে।

এই প্রসঙ্গেই সুব্রহ্মণ্যনের মতে, করোনা অনেক কিছু খারাপ করলেও, ব্যাঙ্কগুলিকে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সুবিধা করে দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যত তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে, ততই সুযোগ তৈরি হচ্ছে তথ্য বিশ্লেষণের। যার হাত ধরে শুধু ব্যাঙ্কে ঋণদান বাড়ানোই নয়, স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপির সংখ্যা কমানো সম্ভব। আর সেটা করতে পারলে ব্যাঙ্কগুলির ঝুঁকি নেওয়ার মনের জোর বাড়বে। আখেরে লাভ কুড়োবে অর্থনীতি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy