ফাইল চিত্র।
ওমিক্রনের প্রভাব করোনার আগের দুই ঢেউয়ের মতো ততটা জোরদার না-হওয়ায় এ বার দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো যাবে বলে আশায় ছিল গাড়ি শিল্প। কিছু গাড়ির চাহিদা এবং জোগান মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছেওছিল। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ তাতে ফের জল ঢালল। গাড়ির ডিলারদের সংগঠন ফাডা শুক্রবার জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির বিক্রির পরিসংখ্যানে উঠে দাঁড়ানোর আগেই ফের ধাক্কা খাওয়ার ছবিটা স্পষ্ট। সামরিক সংঘাত না-থামা পর্যন্ত বিক্রির রেখচিত্রে উন্নতি হবে বলে মনে হয় না।
গত বছরের পাশাপাশি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির (তখনও ভারতে হানা দেয়নি করোনা) সঙ্গে তুলনা টেনে গত মাসে গাড়ি বিক্রির পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে ফাডা। সেখানেই পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, অনেক গাড়ির ব্যবসা অতিমারির আগের সময়ের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি এখনও। গত বছরের নিরিখে এ বার ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক ভাবে বিক্রি কমেছে ৯.২১%। আর ২০২০ সালের সঙ্গে তুলনা করলে সঙ্কোচনের হার ২০.৬৫%। সে ক্ষেত্রে যাত্রিবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি বিক্রি কমে গিয়েছে। দু’চাকা, তিন চাকা এবং বাণিজ্যিকের ক্ষেত্রে সেই হার পিলে চমকে দেওয়ার মতো। গত বছরের তুলনায় অবশ্য গত মাসে তিন চাকা এবং বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। তবে দু’চাকার ব্যবসা সঙ্কুচিত হয়েছে অনেকখানি।
অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও বেশ কিছু দিন ধরে গাড়ি তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেমিকনডাক্টরের অভাব। বহু ক্ষেত্রে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও তা মেটানো যাচ্ছে না শুধু এই যন্ত্রাংশের অভাবে প্রয়োজন মতো গাড়ি তৈরি করতে না-পারার জন্য। এ দিন ফাডা জানিয়েছে, যুদ্ধের প্রভাবে সেই সেমিকনডাক্টরের ঘাটতি আরও তীব্র হতে পারে। কারণ, রাশিয়া ও ইউক্রেন সেগুলি তৈরির অন্যতম মূল উপাদান যথাক্রমে প্যালাডিয়াম ধাতু ও নিয়ন গ্যাসের বড় জোগানদার। তার উপরে অশোধিত তেলের চড়া দামের জেরে দেশে জ্বালানি আরও দামি হলে গাড়ি বিক্রিতেও তার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা বিক্রেতাদের।
বিশ্বের মধ্যে ভারত দু’চাকার গাড়ির বৃহত্তম বাজার। এ দিন ফাডার প্রেসিডেন্ট ভিঙ্কেশ গুলাটি জানান, এই ধরনের গাড়ির ব্যবসায় পুনরুজ্জীবনের কোনও লক্ষণ নেই। একে দাম বেড়েছে। তার উপরে গ্রামাঞ্চলে চাহিদা কম। শহরাঞ্চলে বিক্রিও মার খাচ্ছে এখনও অনেক জায়গায় কর্পোরেট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়। এমনকি ভিঙ্কেশের মতে, যাত্রিবাহী গাড়ির বিক্রি সামান্য বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু চাহিদার তুলনায় জোগান যথেষ্ট নয়। সেটা বড় সমস্যা। আর বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে বিক্রি বৃদ্ধির কারণ খুব একটা উৎসাহজনক বলা যাবে না, কারণ সেটা হয়েছে গত বছরের তলিয়ে যাওয়া নিচু ভিতের উপর দাঁড়িয়ে।
ফাডার বার্তা, গাড়ি বাজারে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের প্রভাব দীর্ঘ হতে পারে। সেমিকনডাক্টরের জোগানে চাপ বাড়ছে। গুলাটির বক্তব্য, ভোট মিটলেই হয়তো দেশে জ্বালানির দামও বাড়াবে। যা বিশেষ করে পাঁচিল তুলতে পারে দু’চাকার গাড়ি বিক্রিতে। তাই যুদ্ধ না-থামা পর্যন্ত ভারতের গাড়ি বাজার সম্পর্কে পূর্বাভাস স্থিতিশীল থেকে বদলে নেতিবাচক করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy