ফাইল চিত্র।
একেই অতিমারিতে রুজি-রুটি ধাক্কা খেয়েছে বহু মানুষের। তার উপরে রয়েছে জ্বালানি-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া মূল্যবৃদ্ধি। আমজনতার দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে এ বার মোবাইলের মাসুলও চড়তে শুরু করবে কি না, সেই জল্পনা দানা বাঁধছিল দেশ জুড়ে। বিশেষত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে টেলিকম সংস্থাগুলির ঘাড়ে বিপুল বকেয়া চাপার পরে। সেই জল্পনা মিলিয়েই সাধারণ প্রিপেড গ্রাহকদের ন্যূনতম মাসুল বৃদ্ধির পথে হাঁটল এয়ারটেল। আজ থেকে তা প্রায় ৬০% বাড়াচ্ছে তারা। ফলে মোবাইল ব্যবহারকারীদের একাংশের খরচ বাড়ছে। যদিও সংস্থাটির দাবি, নতুন মাসুলে কথা বলার সময় এবং ডেটার পরিমাণ বেশি পাবেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এ বার অন্য সংস্থাগুলিরও এই পথে হাঁটা হয়তো সময়ের অপেক্ষা।
এয়ারটেল জানিয়েছে, তাদের ২৮ দিনের ন্যূনতম প্রিপেড প্ল্যানটির মাসুল পড়বে ৭৯ টাকা। সংস্থা সূত্রের খবর, এত দিন তা ছিল ৪৯ টাকা। যার গ্রাহক সংখ্যা সংস্থাটির মোট গ্রাহকের প্রায় ১৪-১৫ শতাংশ। তাঁদের বেশিরভাগই বাড়তি খরচ করতে পারেন না বলে কম টাকার প্ল্যান কেনেন এবং ২জি ফোন ব্যবহার করেন। তবে সংস্থার দাবি, ৭৯ টাকায় কথা বলার সময় বাড়ছে চারগুণ। ডেটার পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে হচ্ছে ২০০ এমবি। উন্নত পরিষেবা মিলবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এক ধাক্কায় ন্যূনতম খরচ ৩০ টাকা বাড়লে অনেকেই সমস্যায় পড়তে বাধ্য। বিশেষত করোনাকালে মোবাইল যখন যোগাযোগের সব থেকে বড় ভরসা অতি সাধারণ রোজগেরে মানুষেরও।
জিয়ো বাজারে আসার পরে কম মাসুলে পরিষেবা দেওয়ার যুদ্ধে তাদের যে আখেরে বড়সড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, আগেই সেই দাবি করেছিল টেলিকম শিল্প। বলেছিল, তার খেসারত দিয়ে আয় ধাক্কা খেয়েছে। চাহিদা বাড়ার পরে পরিষেবার মান উন্নত করতে তাই পরিকাঠামো নির্মাণের পুঁজি জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে এয়ারটেলের কর্ণধার সুনীল মিত্তল এবং অন্যান্যরা দীর্ঘ দিন ধরেই মাসুল বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করছিলেন। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জারি হয়, কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের হিসেব অনুযায়ীই তাদের বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি মিটিয়ে দিতে হবে সংস্থাগুলিকে। এই শিল্পের উপদেষ্টারা স্পষ্ট জানান সংস্থাগুলিকে এ বার ব্যবসা চালাতে আয় বাড়ানোর পথ খুঁজতেই হবে। যার অন্যতম একটি যে মাসুল বৃদ্ধি, সেই ইঙ্গিতও ছিল।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এতে সংস্থার আয় বাড়বে। তাই অন্যরাও হয়তো এই পথে হাঁটবে। তবে জিয়োফোনের মাসুল হার কম হলেও সেটি কিনতে গ্রাহকের খরচ বেশি পড়ে। তাই এয়ারটেল ন্যূনতম মাসুল বাড়ালেও গ্রাহক হারানোর আশঙ্কা কম।
সম্প্রতি এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া কর্পোরেট গ্রাহকদের জন্য নতুন প্ল্যান এনেছে। এয়ারটেল যেমন সে ক্ষেত্রেও ন্যূনতম মাসুল হারটি তুলে দিয়েছে বলে খবর। তবে ভোডাফোনের দাবি, তাদের প্ল্যানের মাসুল বাড়েনি। উভয়েরই বক্তব্য, বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সবগুলিতেই। যদিও বাজারে জল্পনা ভোডাফোন আইডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে। সূত্রের খবর, তারা ডটকে বলেছে, গ্রাহক মাসুল উল্লেখযোগ্য ভাবে না-বাড়লে লগ্নিকারীরা সংস্থায় পুঁজি ঢালতে চাইছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy