রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় বছরের শুরুতেই সিবিআই হানা দিয়েছিল বীরভূমের কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে। সিউড়ির ওই ব্যাঙ্কে বহু ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের খোঁজ মেলে। বছরের শেষের দিকে এসে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের জরিমানার মুখে পড়তে হল সেই ব্যাঙ্ককেই। সূত্রের দাবি, ব্যাঙ্কের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টের কেওয়াইসির পূর্ণাঙ্গ তথ্য না থাকায় ১.১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। গত ৩০ অক্টোবর ব্যাঙ্কটিকে একটি চিঠি পাঠিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্ক এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছে। যদিও দু’টি ঘটনার মধ্যে পারস্পরিক কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের। তবে এ নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি এই ব্যাঙ্কে তদন্তে এসে সিবিআই আধিকারিকেরা তিনশোর বেশি ‘ভুয়ো’ অ্যাকাউন্টের হদিস পান। দেখা যায়, সেই গ্রাহকেরা জানেনই না যে তাঁদের নামে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল! অনেকে লিখতে না জানলেও, অ্যাকাউন্ট খোলার নথিতেও তাঁদের সই ছিল! এই সমস্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই গরুপাচারের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও এ নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চাননি।
তবে এ বার জরিমানার কথা স্বীকার করে ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের দাবি, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে গ্রাহকদের কেওয়াইসি নিয়ে কিছু সমস্যা থাকলেও পরে তা মিটিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু ওই সময়ের জন্যই চাপানো হয়েছে জরিমানা। যদিও বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি বাবন দাস বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যাঙ্ক দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।’’
সিউড়ি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের বর্তমান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এখন তিনি ব্যাঙ্কের অন্যতম ডিরেক্টর। তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলের শেষ দিকে ব্যাঙ্কে যে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল, সেখানে সব ক্ষেত্রে কেওয়াইসির সমস্ত তথ্য নেওয়া হয়নি। নাবার্ড ত্রুটিগুলি শুধরে নিতে বলে। আমরা শুধরেও নিয়েছি।’’
সিপিএমের বীরভূমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট, তাঁরাই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানেন না। ফলে ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের নথি যে ঠিক নেই, তা তো স্পষ্ট। বাম আমলে কোনও ভুল হয়ে থাকলে সেই নামগুলি প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হোক।’’
ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজার তরুণ সরকারের কথায়, ‘‘এর আগে বর্ধমানের সমবায় ব্যাঙ্ক এবং কাঁথির সমবায় ব্যাঙ্ককেও জরিমানা করা হয়েছিল। একই কারণে দেশের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে আড়াই কোটি এবং একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ককে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের জরিমানার পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। আমরা আর্থিক ভাবে ভাল জায়গায় আছি।’’ গ্রাহকদের উপরে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy