ম্যাকাউট
রাজ্য জুড়ে ২০০টিরও বেশি কলেজের অনুমোদনকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট), পশ্চিমবঙ্গ। এখানকার সব পাঠ্যক্রমই অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এ আই সি টি ই)এবং ইউজিসি অনুমোদিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব পড়ুয়াদের ও অনুমোদিত কলেজগুলির ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে একগুচ্ছ আধুনিক পাঠ্যক্রম চালু করেছে। ২০১৮ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও পঠন-পাঠন সংক্রান্ত কাজকর্ম শুরু হয়েছে নদিয়া জেলার হরিণঘাটায় ৪০ একরের বিস্তৃত সবুজ ক্যাম্পাসে। সিটি অফিস রয়েছে সল্টলেকে।
প্রথমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল ওয়্স্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি। পরে ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধনী) আইনে এই নাম বদলে করা হয় মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি, ওয়েস্ট বেঙ্গল।
আগাগোড়াই দ্বিমুখী ভূমিকা পালন করে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথমত, ২০০টিরও বেশি কলেজকে অনুমোদন দেয় ও তা নবীকরণ করে এই প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিতে পরিকাঠামো এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা সমেত মানবসম্পদ পর্যাপ্ত কি না, তা খতিয়ে দেখে তবেই সেগুলিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর জন্য কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ডিজিটাল পদ্ধতিতে এবং সাধারণ ভাবে কলেজে গিয়ে পরিদর্শন করে তবেই সিদ্ধান্ত নেন। দ্বীতীয়ত, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তি, ম্যানেজমেন্ট, ফলিত বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মতো বিষয়ে নিজস্ব পাঠ্যক্রম রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই সব ক্ষেত্রে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ধরনের পাঠ্যক্রম চালু করায় এক অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে ম্যাকাউট। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবসময়েই এই সব পাঠ্যক্রম আরও আধুনিক করে তুলতে সংযোজন ও পরিবর্তন আনছেন। তাঁদের মতে, চিরাচরিত বহু বিষয়ই সময়ের সঙ্গে কিছুটা গুরুত্ব হারিয়েছে। চাকরির বাজারের চাহিদাও ক্রমে বদলাচ্ছে। এই সব মাথায় রেখেই নতুন ধরনের বিষয়ের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ তৈরি করতে চাইছে ম্যাকাউট।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রতি সেমেস্টারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সারা রাজ্যে পরীক্ষা দেয় প্রায় দেড় লক্ষ পড়ুয়া। পরীক্ষার সাড়ে ৬ লক্ষ উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে এবং ফল প্রকাশ করা হয় দ্রুত। ম্যাকাউট ও তার অনুমোদিত কলেজগুলির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা।
গত দুটি শিক্ষাবর্ষের সূচনালগ্নেই ভয়াবহ আকার নিতে শুরু করে করোনা অতিমারী। দীর্ঘ লকডাউনের জেরে ছেদ পড়ে চিরাচরিত শিক্ষা পদ্ধতিতে। তবে তার জন্য থমকে যায়নি ম্যাকাউট। বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অনুমোদিত কলেজগুলি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে অনলাইনে পাঠদানের বিপুল কর্মযজ্ঞে নেমে পড়েছিল। ছাত্রছাত্রীদের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নও করা হয় অনলাইনে। তাদের জ্ঞান বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ওয়েবিনার আয়োজন করতে শুরু করে ম্যাকাউট। ওয়েবিনার আয়োজনে সম্ভবত সারা দেশে শীর্ষে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।
ইতিমধ্যেই পাঠদানের সুবিধার জন্য ১১টি স্কুল অফ স্টাডিজ তৈরি করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়--
এগুলির অধীনেই শুরু হয়েছে নানা ধরনের পেশাদারি পাঠ্যক্রম। কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও তথ্যপ্রযুক্তিতে চিরাচরিত বি.টেক পাট্যক্রমের পাশাপাশি আনা হয়েছে নতুন নতুন বিষয়। যেমন: হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, মিডিয়া সায়েন্স, ডেটা সায়েন্স, স্ট্যাটিসটিক্স, বিজনেস অ্যানালিটিক্স, ফরেন্সিক সায়েন্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল হেলথকেয়ার ইত্যাদি। সম্প্রতি ইকনমিক্স, সাইকোলজি-র মতো সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম চালু করেছে ম্যাকাউট। বর্তমানে চাকরির বাজার অনেক ক্ষেত্রেই কৃত্রিম মেধা ভিত্তিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে তৈরি হচ্ছে। সেই কারণেই আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ইন্টারটেট অফ থিঙ্গস, রোবটিক্স, ব্লকচেন টেকনোলজি, ড্রোন টেকনোলজি, ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড রিয়েলিটির ওপর পাঠ্যক্রম এনেছে ম্যাকাউট।
সব মিলিয়ে রয়েছে স্নাতক স্তরে ৭৫টি, স্নাতকোত্তর স্তরে ১০০টি কোর্স। বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চালু হয়েছে আরও ১৬টি পাঠ্যক্রম। ৪১টি পিএইচডি প্রোগ্রামের সুযোগ নিতে পারেন গবেষকরা।
সম্প্রতি ম্যাকাউটের মুকুটে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। তিনটি কোর্সের জন্য ন্যাশনাল বোর্ড অফ অ্যাক্রেডিয়েশন-এর স্বীকৃতি পেয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রথম রাজ্য সরকারি কোনও বিশ্ববিদ্যালয় এনবিএ স্বীকৃতি পেল। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে আগামী তিন বছরের জন্য এই স্বীকৃতি পোয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যা্ন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) এবং ইনফর্মেশন টেকনোলজি (আইটি)-র বি.টেক. কোর্স। পাশাপাশি, আগামী ৬ বছরের জন্য এই স্বীকৃতি পেয়েছে বায়োটেকনোলজি-র এম. টেক. কোর্স।
হরিণঘাটার বিস্তৃত সবুজ ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার খরচও সকলের সাধ্যের মধ্যে। যে-সমস্ত সুযোগ-সুবিধা এখানে রয়েছে, সেগুলি হল-
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গেই কেরিয়ার গড়তে ম্যাকাউটকে বেছে নিতে পারে ছাত্রছাত্রীরা। ভিন্ রাজ্যে বা বিদেশে পাড়ি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। করোনার বিপদ এখনও পুরোপুরি কাটেনি বলে দূরে পড়তে যাওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকেও পড়ুয়াদের স্বাগত জানাচ্ছে ম্যাকাউট। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানও ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ও পেট্রাপোল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে। ঢাকা-কলকাতা বাস রুটেও রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
পড়ুয়াদের কর্মযোগ্য করে তুলতে ও তাদের ভবিষ্যতের ভিত গড়তে শিল্পের সঙ্গে নিয়মিত আদান-প্রদান করে ম্যাকাউট। তাদের প্রয়োজন বুঝেই ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ার তৈরি করে দিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় দায়বদ্ধ। বিভিন্ন শিল্প সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে সমঝোতাপত্রও স্বাক্ষর করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
সমসাময়িক ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে পঠন-পাঠনে এক নতুন যুগ নিয়ে আসতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ম্যাকাউটের সব কর্মী ও অধ্যাপক-অধ্যাপিকা। লক্ষ্য একটাই-- নবীন প্রজন্মের সার্বিক বিকাশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বরাবরই পথপ্রদর্শক। সেই অতীত গৌরবকে ধরে রাখতে হলে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন এই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ায় নিজেকে আরও বেশি করে যুক্ত করতে কৃতসংকল্প ম্যাকাউট।
এই প্রতিবেদনটি ‘ম্যাকাউট’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy