২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Obesity

ভারতে বেড়েই চলেছে ওবেসিটি আক্রান্তের সংখ্যা! প্রতি চার জনের মধ্যেই আক্রান্ত অন্তত ১

কোনও ব্যাক্তির ওবেসিটি আছে কি না তা তাঁর বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) এর ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। কারও বিএমআই যদি ৩০-এর বেশি হয়, তা হলে তাঁর ওবেসিটি আছে বলে বিবেচিত হয়।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো
শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:২৭
Share: Save:

বর্তমানে যেন বেড়েই চলেছে ওবেসিটি বা স্থূলতার সমস্যা। ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫-১৬ সালে ভারতে পাঁচ জনের মধ্যে এক জনের এই সমস্যা থাকলেও ২০১৯-২১ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি চার জনের মধ্যে এক জনে।

কোনও ব্যাক্তির স্থূলতা আছে কি না, তা তাঁর বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) এর ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। কারও বিএমআই যদি ৩০-এর বেশি হয়, তা হলে তাঁর ওবেসিটি আছে বলে বিবেচিত হয়। বিএমআই ২৫ থেকে ২৯.৯-এর মধ্যে থাকলে এক জন ব্যক্তির ওজন বেশি বলে ধরে নেওয়া হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে স্থূলতার বিশ্বব্যাপী প্রকোপ প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। ওবেসিটি এক সময়ে ধনী দেশগুলিতে বেশি দেখা গেলেও বর্তমানে নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলিতেও এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ (জিবিডি)-এর সমীক্ষা অনুসারে ওবেসিটির কারণে ২০১৯ সালে ৫০ লক্ষ ২০ হাজার (৫০.০২ মিলিয়ন) মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে। যা আদপে সেই বছর এইচআইভি বা এডস-এর কারণে মৃত রোগীর সংখ্যার প্রায় ছয় গুণ। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে যত জন মারা গিয়েছেন, তার প্রায় আট শতাংশই ওবেসিটির কারণে। যেখানে ১৯৯০ সালে এই সংখ্যাটি ছিল মাত্র চার শতাংশ।

১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে ওবেসিটিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের মধ্যে তা ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বয়স এবং ওবেসিটির মধ্যে একটি সরাসরি সম্পর্ক ছিল - এবং তা পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এক। বয়সের সঙ্গে রোগা পুরুষ ও মহিলাদের অনুপাত কমেছে।

পরিসংখ্যান বলছে, ১৫-১৯ বছর বয়সী ৪১ শতাংশ কিশোরই রোগা ছিল। কিন্তু ৪০-৪৯ বছর বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে মাত্র আট শতাংশ রোগা। একই ভাবে, ১৫-১৯ বছর বয়সী যুবকদের মাত্র সাত শতাংশ ওবেসিটির শিকার, তবে ৪০-৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩২ শতাংশ পুরুষেরই ওজন বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রেও ছবিটা এক।

ওবেসিটির ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চলেও পার্থক্য দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলে রোগা পুরুষের সংখ্যা অনুপাত তুলনায় বেশি, ১৮ শতাংশ। সেখানে শহরাঞ্চলে মাত্র ১৩ শতাংশ। তুলনামূলক ভাবে, শহরাঞ্চলে ৩০ শতাংশ পুরুষের ওজন বেশি। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় মাত্র ১৯ শতাংশ পুরুষের ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি।

সমীক্ষা অনুযায়ী, পারিবারিক আয়ের সঙ্গে ওবেসিটি বৃদ্ধির বিষয়টি যেন সমানুপাতিক। অর্থাৎ পরিবারের সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে সদস্যদের ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্য বলছে, নিম্ন আয়ের পরিবারে রোগা মহিলার অনুপাত ২৮ শতাংশ। কিন্তু উচ্চ আয় সম্পন্ন পরিবারে সেই অনুপাত ১০ শতাংশে নেমে আসে।

আবার রাজ্যভিত্তিক বিশ্লেষণের দিকে তাকালেও এক বৈষম্য লক্ষ করা যায়। যেমন, বিহারে রোগা পুরুষদের অনুপাত সবচেয়ে বেশি, ২২ শতাংশ। তার পরে মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাত ২১ শতাংশ করে। ওবেসিটি আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে দিল্লি, ৩৮শতাংশ নিয়ে। তামিলনাড়ুতে তা ৩৭ শতাংশ এবং কেরালায় ৩৬ শতাংশ।

মহিলাদের ক্ষেত্রে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, রোগা মহিলাদের সর্বাধিক অনুপাত ঝাড়খণ্ড এবং বিহারে ২৬ শতাংশ। তারপরে গুজরাত এবং দাদরা-নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ প্রত্যেকটিতে ২৫ শতাংশ। অতিরিক্ত ওজনের মহিলার পরিসংখ্যানে পুদুচেরি ৪৬ শতাংশ, চণ্ডীগড় ৪৪ শতাংশ, নয়াদিল্লি, তামিলনাড়ু এবং পঞ্জাব প্রত্যেকটিতে ৪১ শতাংশ, এবং কেরালা এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

Obesity Obesity Control
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy