জার্মান বিমানে বাংলাদেশি পণ্য পরিবহণ ক্রমশ দুরূহ হয়ে উঠছে। —ফাইল চিত্র।
যুক্তি কারণ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয় না। হলে সবটাই হেঁয়ালি। জার্মানির চ্যান্সেলার অ্যাঞ্জেলা মারকেল বিলক্ষণ জানেন। এগারো বছর ধরে দেশ সামলাচ্ছেন। অভিজ্ঞতায় ঘাটতি নেই। ঝড় ঝাপটায় সাফল্য দেখিয়েছেন। ইউরোপের অর্থনীতিতে এখনও বৃহত্তম জার্মানি। বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিবিড়। সেই বাংলাদেশকে বিপদে ফেললেন। বাংলাদেশের পণ্য পরিবহণে আচমকা নিষেধাজ্ঞা। এতে দেশটার কত বড় ক্ষতি একবার ভাবারও দরকার হল না। আগে একই কাজ করেছে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া। এবার জার্মানি। বলা হচ্ছে, নিরাপত্তার অভাব। কিন্তু সেটা কোথায়? পণ্য পরিবহণ নিশ্ছিদ্র। জার্মানির এয়ারলাইন্স লুফথানসার প্রতিনিধিরা খুঁটিয়ে দেখেছেন সব কিছু। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানির কার্গো হাউস পরিদর্শনের পর জানিয়েছেন, সব ঠিক আছে। আধুনিকীকরণের ব্যবস্থাও পাকা। যেখানে পণ্য প্যাকেট পরীক্ষা হয় সেই স্ক্যানার পয়েন্টে পর্যবেক্ষণে ফাঁক নেই। সদ্য তৈরি, পণ্য রাখার স্পেশাল কেজে বিশেষ অনুমতি ছাড়া বিমানবন্দরে কর্তা ব্যক্তিরাও ঢুকতে পারেন না।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ব্রিটিশ সংস্থা রেডলাইন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু করেছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকছে। গাফিলতির ভয় নেই। সবটাই মেশিনের নতুন ব্যবস্থা। সবকিছু আরও সক্রিয়। সব দেশে যা আছে বাংলাদেশেও তাই। ইউরোপের কোনও দেশেরই অভিযোগের জায়গা নেই।
বছরে বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে শুধু পোশাক রফতানি হয় ৩০০ কোটি ডলারের। সেটা আটকানো মানে অর্থনীতির ওপর বিশাল চাপ। বাংলাদেশে পোশাক শিল্পই অগ্রগণ্য। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অন্ন সংস্থান সেখানেই। তাদের কী হবে! তারা একবারেই অন্ধকারে। সবজি, ফল রফতানি হয় বছরে হাজার কোটি টাকার। সে সব সংরক্ষণের সুযোগ নেই। পচে নষ্ট হবে।
বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করে নিজেদের বাজার তৈরি করতে চাওয়াটাও তো অনৈতিক। চাইলে তারা প্রতিযোগিতায় নামুক। দাম আর গুণগত মানে বাংলাদেশকে টেক্কা দিক। সেটাও তো পারছে না। উল্টে নানান অজুহাতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বন্ধ করছে। পাঁচ বছরে মধ্যম আয়ের দেশ হতে চায় বাংলাদেশ। অর্থনীতি এগোচ্ছে সেই লক্ষ্যেই। বিপদে ফেলছে তিনটি দেশ। সন্ত্রাসবাদী উৎপাত অগ্রগতি থামাতে পারছে না। শিল্পায়ন হচ্ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কৃষিপণ্য যাচ্ছে বিদেশে। এ সময় বিশ্বের বাজার নষ্ট করার মানে। ব্রিটেন, জার্মানি ছাড়া ইউরোপের অন্য কোনও দেশের তো আপত্তি নেই। বাংলাদেশের রফতানি ব্যবস্থায় এ দুটি দেশের বাধা কোথায়? অস্ট্রেলিয়ারই বা আটকাচ্ছে কোনখানে?
আমেরিকাতেও বাংলাদেশের পণ্য যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। নিরাপত্তার শিথিলতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। বরং তারা বাংলাদেশকে জানিয়েছে, কোনও অসুবিধে হলে আমরা আছি। সন্ত্রাস দমনেও সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। আমেরিকার মনোভাবে জার্মানি খানিকটা নরম হচ্ছে অবশ্য। বলছে, বাংলাদেশের বিষয়টা বিবেচনা করছি। তাদের মনে রাখা দরকার, একটা দিনের ক্ষতিও কিন্তু অনেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy