একাত্তরের সেই গেরিলা বাহিনী।
বীরত্বপূর্ণ অবদানকে মেনে নিয়ে গেরিলা বাহিনীর ২৩৬৭ জনকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ফিরিয়ে দিল বাংলাদেশের হাইকোর্ট। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা ও সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দিল বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি আবু তাহের মহঃ সাইফুর রহমানের বেঞ্চ।
২০১৩ সালের ২২ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া গেরিলা বাহিনীর ২,৩৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক। তার পরের বছরই, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর কোনও কারণ দর্শানো ছাড়াই ওই গেজেট বাতিল করে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।
এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টি (ন্যাপ), কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ (সিপিবি) এবং ছাত্র ইউনিয়নের সেই যৌথ গেরিলা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ও বর্তমানে ঐক্যবদ্ধ ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ডিসেম্বর মাসেই রিট আবেদন করা হয়। সেই মামলার রায়েই আজ খারিজ হয়ে গেল গেরিলাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল করা ২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তি।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, “গেরিলা বাহিনীর ২৩৬৭ জনের তালিকা সম্বলিত গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপনকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রাপ্য সম্মান, মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” আবেদনকারী পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, “মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার এবং স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার-সহ প্রতিটি সরকার এই বিশেষ গেরিলা বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।”
পঙ্কজবাবু সংবাদমাধ্যমকে জানান, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র-যুবকেরা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেন। একাত্তরের মে মাসে কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়ন ‘সশস্ত্র সংগ্রামে নিজ উদ্যোগে পরিপূর্ণ অংশগ্রহণের’ সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত সিপিবির দ্বিতীয় কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রতিবেদন অনুসারে- কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৭ হাজার তরুণ মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেন। এর মধ্যে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন প্রায় ১২ হাজার, বিশেষ গেরিলা বাহিনীতে ছিলেন প্রায় পাঁচ হাজার। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন এই গেরিলারা।
আরও পড়ুন:
যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিষয়ে নতুন আইন আনছে সরকার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy