কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (বাঁ দিকে) এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। — ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটপর্বের মাঝে বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ায় ফাটল আরও চওড়া হওয়ার ইঙ্গিত মিলল। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব মঙ্গলবার জাতগণনার প্রশ্ন তুলে সরাসরি নিশানা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। পরিস্থিতি দেখে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের পূর্বাভাস, লোকসভা ভোটের আগে আবার অকংগ্রেস তৃতীয় ফ্রন্টের দিকে ঝুঁকতে পারেন প্রয়াত মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্র।
সোমবার মধ্যপ্রদেশের সাতনায় কংগ্রেসের প্রচারসভায় রাহুল জাতগণনাকে ‘এক্স-রে’-র সঙ্গে তুলনা করে বলেছিলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস বিহারের মতোই জাতগণনার নীতি অনুসরণ করবে। অনগ্রসরদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করে তাঁদের প্রকৃত সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’’ রাহুলের সেই মন্তব্যকে খোঁচা দিয়ে মঙ্গলবার অখিলেশের মন্তব্য, ‘‘এক্স-রে-র মতো পুরনো পদ্ধতি কেন? এখন তো এমআরআই, সিটি স্ক্যানের মতো নতুন প্রযুক্তি বেরিয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া, কংগ্রেস তো দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় ছিল। তখন তারা এক্স-রে করায়নি কেন?’’
আগামী ১৭ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশে এক দফায় ২৩০টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন। সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, কংগ্রেস তাদের ছ’টি আসন দেওয়ার কথা বলেও প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করেছে। শেষ পর্যন্ত ১৮টি কেন্দ্রে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি। এই পরিস্থিতিতে ভোটের আগে দু’দলের তরজার সুর ক্রমশ চড়ছে। গত মাসে মধ্যপ্রদেশে প্রচারে গিয়ে অখিলেশ কংগ্রেসের জাতগণনার দাবিকে ‘মিরাকল’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, “এখন সকলে বুঝতে পারছে, অনগ্রসর শ্রেণির ভোট না পেলে সফল হওয়া যাবে না। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা করিয়েও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।’’
জবাবে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, বিধানসভা নির্বাচন নয়, আগামী লোকসভা ভোটের লক্ষ্যেই গড়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, অখিলেশরা বুঝতে পারছেন, জাতপাতের রাজনীতি করে তাঁরা কংগ্রেসের যে ভোটে ভাগ বসিয়েছিলেন, এখন কংগ্রেস ফের সেই ভোট ফিরে পেতে চাইছে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি আগেই যাদব ছাড়া অখিলেশের অন্যান্য অনগ্রসর (ওবিসি) গোষ্ঠীগুলির ভোটে ভাগ বসিয়েছে। এ বার জাতগণনার দাবি তুলে কংগ্রেসও ওবিসি ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে চাইছে দেখে সুর চড়াচ্ছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান।