মধ্যপ্রদেশের সাতনার জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
বিহারের জাতভিত্তিক সমীক্ষা এবং তার রিপোর্টের নিরিখে সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অন্য অনগ্রসর সম্প্রদায় (ওবিসি) এবং তফসিলিদের কোটা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে ‘বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত’ বললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের সাতনায় কংগ্রেসের প্রচারসভায় তিনি বলেন, ‘‘বিহারের মহাগঠনবন্ধন সরকারের এই পদক্ষেপ জীবনধারায় পরিবর্তন আনবে। মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেসও জাতগণনার নীতি অনুসরণ করবে।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ আগেই জানিয়েছিলেন, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট এবং আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে ‘পাখির চোখ’ করতে চাইছে কংগ্রেস। বিহারে জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের মহাগঠবন্ধন সরকার গত ২ অক্টোবর জাতসমীক্ষা সংক্রান্ত প্রথম দফার রিপোর্ট প্রকাশ করার পরেই রাহুল ‘জিতনি আবাদি, উতনা হক’ (যে জনগোষ্ঠীর যত সংখ্যা, সংরক্ষণে তার তত অধিকার) স্লোগান দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় জাতসমীক্ষার দ্বিতীয় রিপোর্ট পেশ করা হয়। এর পর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার বিহার বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে সে রাজ্যে অনগ্রসর (ওবিসি) এবং অতি অনগ্রসরদের (ইবিসি) জন্য সংরক্ষণ ২৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করার জন্য পদক্ষেপ করেছে। পাশাপাশি, তফসিলি জাতির (এসসি) সংরক্ষণ ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে ওই বিলে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে তফসিলি জনজাতিভুক্তদের জন্য সাত শতাংশ সংরক্ষণ থাকলেও এক শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দুই শতাংশেই সীমাবদ্ধ রেখেছে বিহার সরকার।
জাত সমীক্ষার বিরোধীদের অভিযোগ, বিহার সরকারের এই পদক্ষেপ ‘বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক’। এই পদক্ষেপ সংবিধানের মৌলিক অধিকার এবং ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সমতা ও সাম্যের অধিকার) পরিপন্থী। কিন্তু বিহার সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাটনা হাই কোর্টে আবেদন জানানো হলেও স্থগিতাদেশ মেলেনি। মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এই পরিস্থিতিতে ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের প্রচারে ধারাবাহিক ভাবে জাতগণনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে কংগ্রেস।