উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে করাচি বন্দরে চিনা ডুবোজাহাজ এবং যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি। ছবি: সংগৃহীত।
চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি) নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। এ বার ভারতকে চাপে রাখতে নতুন কৌশল নিচ্ছে ‘চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)। সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচিতে মোতায়েন করা হয়েছে চিনা নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ এবং ডুবোজাহাজ।
সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, ভারতীয় জলসীমার অদূরে সিন্ধু প্রদেশের রাজধানীর উপকূলে নতুন নৌঘাঁটি নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে বেজিং। তাদের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে নয়াদিল্লির উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। এনডিটিভি প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, উপগ্রহচিত্রে করাচি বন্দরে চিনা টাইপ-০৩৯ ডুবোজাহাজ এবং টাইপ-৫২ডি ডেস্ট্রয়ার গোত্রের যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।
কূটনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, ভারতকে চাপে রাখার জন্য চিনের ‘বৃহত্তর কৌশলে’রই একটি অংশ পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে এই সাম্প্রতিক তৎপরতা। গোটা অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য মেনে নেওয়া, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) নিয়ে নিজেদের সুবিধাজনক শর্ত ভারতকে মানতে বাধ্য করা এবং বেজিং-বিরোধী মার্কিন অক্ষ থেকে ভারতকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যে ইসলামাবাদকে ব্যবহার করছে চিন।
কয়েক বছর আগে পাকিস্তানি নৌবাহিনীর হাতে যুদ্ধজাহাজ বিধ্বংসী আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র সিএম-৩০২ তুলে দিয়েছে চিন। সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ২০০৬ সালে ভারতীয় নৌসেনার হাতে ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র আসার পর থেকে সমুদ্রে পাকিস্তানের উপর ভারতীয় নৌসেনার যে আধিপত্য তৈরি হয়েছিল, তা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি করাচি উপকূলে পাক নৌসেনার সঙ্গে ‘সি গার্ডিয়ান-৩’ যৌথ মহড়া শুরু করেছে চিনা নৌবাহিনী। ওই নৌবহর সেই মহড়ায় অংশ নিয়েছে বলেও প্রকাশিত খবরে দাবি।
প্রসঙ্গত, এর আগে ইরান সীমান্ত লাগোয়া পাক প্রদেশে বালুচিস্তানের গ্বদর বন্দরে এবং ভারতের আর এক প্রতিবেশী মায়ানমারের কোকো দ্বীপে নৌঘাঁটি তৈরির অভিযোগ উঠেছে চিনের বিরুদ্ধে। গত তিন বছরে একাধিক বার শ্রীলঙ্কার বন্দরে যাতায়াত করেছে চিনা সামরিক নজরদারি জাহাজ। পূর্ব আফ্রিকার ছোট্ট দেশ জিবুতি লাগোয়া আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবাহী জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ পথ বাব এল-মানদেব প্রণালীর অদূরেও পাকাপাকি নৌঘাঁটি বানিয়ে যুদ্ধজাহাজ এবং ডুবোজাহাজ মোতায়েন করেছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জনপিংয়ের সরকার।