গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মণিপুরে গোষ্ঠীহিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংখ্যাগুরু মেইতেইদের ন’টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। গত ছ’মাসের হিংসা পর্বে এই সংগঠনগুলি প্রত্যক্ষ ভাবে সশস্ত্র হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে অভিযোগ। তাই বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) অনুযায়ী আগামী পাঁচ বছরের জন্য সংগঠনগুলিকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করা হয়েছে।
‘নিষিদ্ধ’ ঘোষিত সংগঠনগুলির মধ্যে রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র রাজনৈতিক শাখা ‘রেভেলিউশনারি পিপলস ফ্রন্ট’ (আরপিএফ), ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ (ইউএনএলএফ)-এর সশস্ত্র শাখা মণিপুর পিপলস আর্মি (এমপিএ), ‘পিপলস রেভোলিউশনারি পার্টি অফ কাংলেইপাক’ (প্রিপাক)-এর সশস্ত্র শাখা ‘রেড আর্মি’ এবং ‘কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি’ (কেসিপি)-র সশস্ত্র শাখা ‘কাংলেইপাক রেড আর্মি’।
কট্টরপন্থী মেইতেই সংগঠন ‘কাংলেই ইয়াওল কানবা লুপ’ (কেওয়াইকেএল), মেইতেই সমন্বয় কমিটি (কোর কম) এবং ‘অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যালিস্ট ইউনিটি কাংলেইপাক’(এএসইউকে)-ও রয়েছে এই তালিকায়। চিনা মদতপ্রাপ্ত ককু-জ়ো জঙ্গিগোষ্ঠী কুকি ন্যাশনাল আর্মি, কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট, ইউনাইটেড কুকি লিবারেশন ফ্রন্ট মণিপুরে সাম্প্রতিক গোষ্ঠীহিংসায় জড়িত বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক।
মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসা পর্বে মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী পিডিএফ-এর ‘ভূমিকা’ নিয়েও অভিযোগ উঠেছে আগেই। প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।