এ হল পুরো রথ দেখা আর কলা বেচা! শরৎ রোদ্দুর দেখা দিতে না দিতেই বাঙালি মনে আনচান করাটা স্বাভাবিক। এই সময় মন আর পা দুই-এর তলাতেই যেন সরষে চলে আসে। কিন্তু সেই মনের কোণে যদি চলতে থাকে প্রযুক্তির উঁকিঝুকি? তা হলে? এক কাজ করা যেতে পারে, এমন কোনও জায়গায় যাওয়া যাক না, যেখানে বেড়ানোও হবে, আবার নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে একটা ‘ডেট’ও করে নেওয়া যাবে।
যাঁদের কাছে এখন ভ্রমণ বা বেড়ানো বলতে আর শুধু কয়েকটা দর্শনীয় স্থান নয়; তাঁদের কাছে বেড়ানোর অর্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযুক্তির গতিশীল বিশ্বে নিজেকে ডুবিয়ে নেওয়া। প্রযুক্তির পীঠস্থানে বেড়াতে যাওয়া বা টেক ট্যুরিজম সদ্য নতুন এক প্রবণতা হিসাবে দেখা দিচ্ছে।
লোকজন তাই ছুটিতে পাড়ি দিচ্ছেন সুদূর আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি-জাদুঘর দেখতে। এমন কয়েকটা জায়গা থাকল পুজোর ছুটিতে আপনার বেড়াতে যাওয়ার জন্য।
বেঙ্গালুরু, ভারত
কর্ণাটক রাজ্যের এই শহর এমনিতেই ‘ভারতের সিলিকন ভ্যালি’ হিসাবে পরিচিত। তার কারণ এই শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য স্টার্টআপের অফিস, প্রযুক্তি-পার্ক এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান। চন্দ্রযান ৩-এর চাঁদের মাটিতে পা ফেলার সঙ্গে সঙ্গে এই শহর বিশেষ করে ইসরো-তে এক চক্কর লাগানোর ইচ্ছে কার না হয়! এখানে যেতে অনলাইনে ‘ভিসিটর পাস’ বা দর্শনার্থীর ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা যায়। তা ছাড়া ‘বিশ্বেশ্বরায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিকাল মিউজিয়াম’ আছেই।
কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরুর যাতায়াতের বিমান ভাড়া ১২ হাজার টাকার কাছাকাছি পড়বে। অল্প বয়স্কদের জন্য সায়েন্স মিউজিয়াম ছাড়াও আকর্ষণের কমতি নেই এই শহরে।
সিলিকন ভ্যালি, আমেরিকা
বাজেট একটু বাড়িয়ে নিলেই দিব্যি আসল সব প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনের কেন্দ্রস্থল, সিলিকন ভ্যালি ঘুরে আসা যেতে পারে। কলকাতা থেকে সান ফ্রান্সিসকোর যাওয়া-আসার বিমান ভাড়া ১ লাখের কমে পাওয়া গেলেও, আগেই বলে রাখা ভাল যে, ভিসা পেতে একটু বেগ পেতে হবে।
তবে অ্যাপেল-এর হেড অফিস থেকে নাসার অমিস রিসার্চ সেন্টার, প্রযুক্তির প্রেমীদের পাগল করে দেয়। অ্যাপল ফ্যান না হলেও ক্ষতি নেই, ‘স্পেসশিপ’ ক্যাম্পাস ছাড়াও গুগলপ্লেক্সের মতো ভুবনখ্যাত সদর দফতর ঘুরে দেখতে পারেন। তা ছাড়া, ‘কম্পিউটার হিস্ট্রি মিউজিয়াম’ প্রযুক্তির বিবর্তনের ইতিহাস সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেয়। ঘুরে দেখুন সেটিও। জীবনের স্বাদে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
সিওল, দক্ষিণ কোরিয়া
এই পুজোয় সান ফ্রান্সিসকো যেতে না পারলে দক্ষিণ কোরিয়া ঘুরে আসতেই পারেন। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওল, তার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রাণবন্ত মেজাজের জন্য বিখ্যাত। বলাই বাহুল্য, প্রযুক্তি পর্যটনে লোকের বেশ নজর কাড়ছে। বিমানের ভাড়ায় তেমন বেশি না। এখন টিকিট কাটলেও কলকাতা থেকে সিওল যাতায়াতের বিমান ভাড়া ৬০ হাজারের মধ্যেই হয়ে যাবে।
পুরো শহরটাই আধুনিকতায় মোড়া। ডংডেমুন ডিজাইন প্লাজা, যেখানে ডিজাইন এবং উদ্ভাবনের উপর ‘ইন্টারেকটিভ’ প্রদর্শনী করে। মানে, আপনি নিজে ‘ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি’র মাধ্যমে পাবেন নতুন প্রযুক্তির আস্বাদ। তার সহজ যেমন, থ্রি-ডি চশমা ব্যবহার করে বাস্তবে যা নেই, তাকে ধরে বেঁধে আপনার সামনে ছবি আকারে ফুটিয়ে তুলবে। এমনকী অনুভবও করাবে। এ রকম আরও আছে।
তা ছাড়া একটি নামী সংস্থা তাদের ‘ডি'লাইট প্রদর্শনী’ নিজেদের সাম্প্রতিক উদ্ভাবনগুলোকে নিজের থেকে দেখতে দেয়। ফাটাফাটি অভিজ্ঞতা হবে এখানেও।
টোকিয়ো, জাপান
আজকের দিনে উদ্ভাবন বা প্রযুক্তির জন্য অনেক শহর আগিয়ে এলেও টোকিয়োকে কখনও সিংহাসনচ্যুত করা যাবে না। টেক উৎসাহীদের ভবিষ্যতের এক ঝলক দেখানোর জন্য জাপানের এই শহর সবসময় একটি মনোমুগ্ধকর গন্তব্য হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
টোকিয়োর আকিহাবারা অঞ্চলে, যাকে ‘ইলেকট্রিক টাউন’ বলা হয়, আপনি অত্যাধুনিক গ্যাজেট থেকে রোবটের জগতে ডুব দিতে পারেন। চাইলে চলে যেতে পারেন মিরাইকানের (ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ এমার্জিং সায়েন্স অ্যান্ড ইনোভেশন) মিউজিয়ামে। আর অবশ্যই টোকিয়ো ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না, রোবট-রেস্তোরাঁয় একবার ঢুঁ না মেরে। যেখানে রোবট পরিবেশন করে খাবার।
কলকাতা থেকে টোকিয়োর রিটার্ন বিমান ভাড়া চল্লিশ হাজারের মধ্যেই হয়ে যাবে। এমনকি ভিসার খরচও তেমন বেশি না।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy