পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘোষ পরিবারের জগদ্ধাত্রী
শুধু চন্দননগর আর ভদ্রেশ্বর নয়, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেই হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। সেই তালিকায় মেদিনীপুরের পুজো বিশেষ ভাবে নজর কাড়ে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘোষ পরিবারের পুজো যেমন। এখানে জেলার বাইরে থেকেও গিয়ে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা। এই উদযাপন ঠিক কবে শুরু হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য না থাকলেও অনুমান করা হয় প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো এই জগদ্ধাত্রী পুজো।
ঘোষ পরিবারের পূর্বপুরুষ দ্বারিকানাথ ঘোষ ছিলেন বড় জমিদার। তাঁরই উদ্যোগে প্রথম এই পুজো শুরু হয় আরামবাগে। পরে তা স্থানান্তরিত হয়ে উঠে আসে মেদিনীপুরের মীরবাজার এলাকায়। ঘোষ পরিবারের সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ থেকে ছয় পুরুষ ধরে মহা সমারোহে পালিত হয়ে আসছে এই পুজো। আজও বদলায়নি তার কোনও রীতিনীতি। বর্তমানে ৫ জন অংশীদারের হাতে এই পুজোর দায়িত্ব রয়েছে। প্রত্যেকের ভাগে এক এক বছর এই পুজো আয়োজনের ভার পড়ে।
এই পুজোর কয়েকটি বিশেষত্ব রয়েছে যা ভক্তদের আরও বেশি টেনে আনে এখানে। দেবীকে এখানে নৈবেদ্য হিসাবে নিবেদন করা হয় কাঁচা মাংস ও ছানা দিয়ে তৈরী এক বিশেষ মণ্ডা। পুজো শেষে সেগুলি প্রসাদ হিসাবে বিতরণ করে দেওয়া হয় গ্রামের বাকি পরিবার ও ভক্তদের মধ্যে। আরও এক অবাক করা বিষয় হল– এই পুজোয় বাজার থেকে কেনা কোনও ধূপ জ্বলে না। পুজোর আগে থেকেই গ্রামবাসীরা ও ঘোষ পরিবারের সদস্যরা মিলে বাড়িতেই তৈরি করেন সুগন্ধি ধূপ।
গ্রামের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন হয়ে গেলে সেই নিরঞ্জন করে দেওয়া প্রতিমা থেকে মাটি নিয়ে এসে এই জগদ্ধাত্রী মূর্তি তৈরি হয়। গত বছরের রেখে দেওয়া কাঠামোর উপরেই মাটির প্রলেপ দিয়ে বানানো হয় প্রতিমা। যে সব শিল্পী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, একমাত্র তাঁরাই এই মূর্তি গড়েন। তান্ত্রিক মতে, এই পুজো সম্পন্ন হয়। পুজোর সময়ে ছাগবলি ছাড়াও হয় নানা রকম সবজি বলি। পুজোর এক রাত্রের মধ্যেই বিসর্জন করে দেওয়া হয় প্রতিমা। হই হুল্লোড় করে গোটা গ্রামের মানুষ যান প্রতিমা নিরঞ্জনে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy