প্রতীকী চিত্র
কলকাতার পথঘাট থেকে তার ছুটি নেওয়ার পালা। ঐতিহ্যবাহী ট্রামে চেপে ঠাকুর দেখার আনন্দ আর পাওয়া যাবে না এ বছর। প্রত্যেক বারের মতো এ বারেও সরকার পূজা পরিক্রমার আয়োজন করলেও বাদ পড়েছে ট্রাম। এ বছর শুধু সরকারি বাস ও লঞ্চে চড়েই হবে পুজো পরিক্রমা— এমনটাই জানিয়েছে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। যানজট মোকাবিলা থেকে রেহাই পেতেই এমন সিদ্ধান্ত দফতরের। গত বছরই প্রথম এসি ট্রামে ঠাকুর দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরিবহণ দফতর। এ বছর ঠাকুর দেখার জন্য বাস ও লঞ্চ সহযোগে আপনি কী ভাবে কোন প্যাকেজ বেছে নিতে পারেন, তার হালহদিশ রইল এই প্রতিবেদনে।
বনেদি বাড়ির পূজা পরিক্রমা
পরিবহণ দফতরের সিদ্ধান্ত, ভলভো বাসে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুরনো পুজোগুলি ঘোরানো হবে পুজোর চার দিন। ধর্মতলা ট্রাম টার্মিনাস থেকে সকাল ৮টায় পরিক্রমা শুরু। ঘুরে দেখানো হবে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো, কুমোরটুলি পার্ক ও কুমোরটুলি সর্বজনীন, জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো, বলরাম মন্দির ও সারদা মায়ের বাড়ি। এর জন্য কয়েকটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। জনপ্রতি ভাড়া ২০০০ টাকা। ৫ থেকে ১০ বছরের শিশুদের জন্য দিতে হবে ১৫০০ টাকা ও ৫ বছরের কমবয়সীদের কোনো রকম ভাড়া লাগবে না বলে জানানো হয়েছে।প্যাকেজে থাকছে সকালের জলখাবার থেকে মধ্যাহ্ন ভোজন। তা ছাড়াও চা-কফি ও নানা ধরনের পানীয়ের ব্যবস্থাও থাকছে।
বিলাসবহুল বাসে পূজা পরিক্রমা
ধর্মতলা থেকে বারাসত, বিলাসবহুল বাসে ঠাকুর দেখতে দিতে হবে জনপ্রতি ২১০০ টাকা। বাস ছাড়বে সকাল ৯টায়। দক্ষিণ থেকে উত্তরে একে একে একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্ক, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, মুদিয়ালি, শিবমন্দির, মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, বাগবাজার পল্লি হয়ে বারাসতের জনপ্রিয় পুজোগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। অপর দিকে বারাসত থেকেও ছাড়বে বাস। সেখান থেকে এই পরিক্রমায় অংশ নিতে আপনাকে দিতে হবে জনপ্রতি ২০০০ টাকা। দুই ক্ষেত্রেই থাকবে জলখাবার ও দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা।
শহর থেকে দূরে গ্রাম বাংলার পূজা পরিক্রমা
শুধু শহর ও শহরতলি নয়। পরিবহণ দফতর আপনাকে নিয়ে যাবে পল্লি গ্রামের মণ্ডপগুলিতেও। কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে বসিরহাটের দু'টি নামকরা বনেদি বাড়ির পূজা ঘুরে দেখাবে বাস। সকাল ৮টায় এসপ্ল্যানেড বাস টার্মিনাস থেকে শুরু হবে যাত্রা। পথে থাকবে খাওয়ার ব্যবস্থা। ঘুরে দেখানো হবে গায়েন বাড়ি, সাহু বাড়ি, বল্লভ বাড়ি, রাধাকান্ত মন্দির। এর পরে আড়বালিয়া গ্রামে বসু পরিবার ও ভট্টাচার্য পরিবারের পুজো থাকছে তালিকায়। এ ছাড়া যাত্রাপথে আরও অনেক বনেদি বাড়ির পুজো দেখানো হবে বলে জানিয়েছে পরিবহণ দফতর। প্যাকেজটির ভাড়া পড়বে ২০০০ টাকা।
জলপথেও হবে প্রতিমা দর্শন
পূজা পরিক্রমা হবে জলপথেও। মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বেলা ১১টায় শুরু হবে যাত্রা। প্রথমে হাওড়া জেটি ঘুরিয়ে লঞ্চ পৌঁছবে আহিরীটোলা ঘাটে। সেখান থেকে এসি বাসে নিয়ে যাওয়া হবে আশপাশের সমস্ত বিশিষ্ট পুজো মণ্ডপগুলিতে। যাত্রাপথে থাকবে শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো, কুমোরটুলি পার্ক ও কুমোরটুলি সর্বজনীন, জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো দর্শনের সুযোগ। নিয়ে যাওয়া হবে বলরাম মন্দির ও সারদা মায়ের বাড়িও। শেষে বাগবাজার সর্বজনীন ঘুরিয়ে যাত্রীদের বাগবাজার ঘাট থেকে ফের তুলে দেওয়া হবে লঞ্চে। হাওড়া জেটির পাশ দিয়ে ঘুরিয়ে পুনরায় পৌঁছে দেওয়া হবে মিলেনিয়াম পার্কে। এই পুরো সফরের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৮০০ টাকা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy