সারা বছর খুসকির সমস্যায় জেরবার থাকেন অনেকেই। শীত আসতে চলেছে। তার মধ্যে উৎসবের মরসুম। খুসকি নিয়ে বিব্রত হতে কেই বা চায়! চুল আঁচড়ানোর সময়ে চিরুনি তো বটেই, খুসকির হাত থেকে রেহাই পায় না জামাকাপড় বা বালিশও। দেখতে খারাপ লাগার পাশাপাশি খুসকির জেরে ব্যাহত হয় চুলের স্বাস্থ্যও।
শ্যাম্পুতে খুসকি হয়তো দূর হবে, কিন্তু আপনার চুলও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই শ্যাম্পুর বদলে ব্যবহার করুন কিছু সহজলভ্য জিনিস। এতে খুসকি দূর হবে। চুলও ভাল থাকবে।
যে কোনও ছত্রাকজনিত সমস্যায় টি ট্রি অয়েল খুব কার্যকর। খুসকি দূর করতেও এই তেলের জুড়ি মেলা ভার। যে কোনও বড় দোকান বা শপিং মলে পেয়ে যাবেন এই তেল। সম পরিমাণে নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন টি ট্রি অয়েল। তার পর স্ক্যাল্পে খুব ভাল করে মালিশ করুন। স্ক্যাল্পে সরাসরি টি ট্রি অয়েল না দেওয়াই ভাল। মালিশ করার কিছুক্ষণ পরে খুব ভাল করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিন থেকে চার বার এই তেলের মিশ্রণ মালিশ করুন। খুসকির সমস্যা কমবে। নারকেল তেলের বদলে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন শ্যাম্পুর সঙ্গেও।
আরও পড়ুন: উৎসবে চাই জেল্লা, এই সব্জিতেই চমক ফেরান ত্বকের
নারকেল তেল:
চুলের যত্নে নারকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। স্নানের অন্তত আধ ঘণ্টা আগে আদি ও অকৃত্রিম নারকেল তেল মাথায় মালিশ করুন। তার পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার খুব ভাল করে নারকেল তেল দিন মাথায়।
শ্যাম্পুর বদলে ব্যবহার করুন টি ট্রি অয়েল।
পেঁয়াজের রস:
পেঁয়াজ চুলের সমস্যা দূর করতে খুব কার্যকর। পেঁয়াজে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল যৌগ খুসকি দূর করে। মাঝারি মাপের পেঁয়াজ অর্ধেক করুন। তার থেকে রস বার করে ছেঁকে নিন। স্ক্যাল্পে খুব ভাল করে লাগিয়ে রাখুন অন্তত এক ঘণ্টা। তার পর অল্প শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। মাঝে মাঝেই পেঁয়াজের দাম খুব বেড়ে যায়। না হলে শীতকালে সপ্তাহে দু’বার এই চুলের জন্য এই যত্ন নেওয়া জরুরি।
অ্যালোভেরা জেল:
ভারতীয় আয়ুর্বেদের ঘৃতকুমারী এখন ‘অ্যালোভেরা’ নামেই পরিচিত বেশি। ত্বক ও চুলের অজস্র সমস্যার একটাই সমাধান- এই ওষধি। বাড়িতে একটু বড় টবে বসাতে পারেন ঘৃতকুমারী। খুব বেশি যত্নআত্তিও দরকার হয় না। বাড়িতে না থাকলেও অসুবিধে নেই। এখন অনেক বড় সংস্থার অ্যালোভেরা জেল বাজারে পাওয়া যায়। স্নানের এক ঘণ্টা আগে ঘৃতকুমারী রস বা অ্যালোভেরা জেল স্ক্যাল্পে বৃত্তাকারে মালিশ করুন। তারপর হাল্কা শ্যাম্পু দিয়ে খুব ভাল করে মাথা ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দু’বার আপনার চুলকে দিন ঘৃতকুমারীর স্পর্শ। খুসকি দূর হবে। সেই সঙ্গে চুলের জেল্লাও বাড়বে।
লেমনগ্রাস অয়েল:
যে কোনও শপিং মলে বা দোকানেই পেয়ে যাবেন এই তেল। মিলবে অনলাইনেও। সপ্তাহে দু’বার শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে মালিশ করতে হবে। তার পর শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে মাথা ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরসুমে রোগা হতে প্রোটিন শেক? বিপদ এড়াতে কী কী মানতেই হবে
ইউক্যালিপটাস অয়েল:
অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে খুসকি দূর করতেও বেশ উপকারী ইউক্যালিপটাস অয়েল। তিন ফোঁটা নারকেল তেলের সঙ্গে তিন ফোঁটা ইউক্যালিপটাস অয়েল মেশান। তার পর স্নানের আধ ঘণ্টা থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট আগে এই মিশ্রণ স্ক্যাল্পে মালিশ করুন। ঠান্ডা জল দিয়ে মাথা ভাল করে ধুয়ে নিন।
পেঁয়াজে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল যৌগ খুসকি দূর করে।
রসুন:
রসুনের কয়েকটি কোয়ার খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর চাটুতে হাফ কাপ অলিভ অয়েলের সঙ্গে ওই রসুনের কোয়া গরম করুন। পাঁচ মিনিট হাল্কা বা মাঝারি আঁচে রাখুন মিশ্রণটিকে। এর পর সেটি স্ক্যাল্পে মালিশ করুন। শেষে জল দিয়ে খুব ভাল করে চুল ধুয়ে নিন। রসুনের গন্ধে আপত্তি থাকলে শ্যাম্পুও করে নিতে পারেন। শীতের মরসুমে সপ্তাহে দু’বার এ ভাবে যত্ন নিন চুলের।
নিমতেল:
ছত্রাকজনিত সমস্যায় নিমের গুণাগুণ সর্বজনবিদিত। দু’ফোঁটা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন দু’ফোঁটা নিমতেল। স্ক্যাল্পে মালিশ করে আধ ঘণ্টা রেখে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার এই ঘষামাজা চায় আপনার চুল।
বেকিং সোডা:
তিন চামচ বেকিং সোডা নিয়ে সরাসরি দিন ভেজা চুল ও স্ক্যাল্পে। মিনিট দু’য়েক রেখে খুব ভাল করে মাথা ধুয়ে নিন।
আরও পড়ুন: বাড়িতেই তুলসী-অরিগ্যানো, কোন ভেষজ গাছের যত্ন কী ভাবে
শুষ্ক এবং তেলতেলে, দুই রকমের চুলেই খুসকির সমস্যা দেখা যায়। ঘরোয়া উপকরণগুলি ব্যবহারে খুসকির সমস্যা দূর না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মেডিকেটেড সামগ্রী ব্যবহার করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy