‘‘পুজোর খাওয়াদাওয়ায় বাঙালিয়ানার ছাপ না থাকলে কি চলে?’’
পুজো মানেই একরাশ আনন্দ। সারা বছর বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন জায়গায় থাকা মানুষগুলোর অন্তত কয়েক দিনের জন্য বাড়ি ফেরা। আমার কাছে পুজো মানেই আগমনী গান আর ঢাকের আওয়াজে ঘুম ভাঙা। আর এ সবের মধ্যেই অন্যতম হল খাওয়াদাওয়া। যতই আমরা সারা বছর বিরিয়ানি, মোগলাই, বা অন্যান্য বিদেশি খাবারে মজে থাকি না কেন, পুজোর খাওয়াদাওয়ায় বাঙালিয়ানার ছাপ না থাকলে কি চলে?
আমি একজন আপাদমস্তক ভেতো বাঙালি। পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, বাঙালি খাবার কোথায় পাওয়া যেতে পারে, তার খোঁজ আমি ঠিক বার করে নিই। এমনকি লন্ডনে গিয়েও আমার ছেলে ঋষির সঙ্গে কব্জি ডুবিয়ে বাঙালি খাবার খেয়েছি। পেটপুজোর সুবাদে বেশ কিছু বাঙালি বন্ধুও জুটিয়ে ফেলেছি সেখানে।
এ বার আসি পুজোর ভুরিভোজে। দুর্গা মায়ের ভোগ হিসেবে কী রান্না হবে, তা আমার মা ঠিক করেন। কিন্তু আমাদের যাবতীয় খাদ্যতালিকা রূপায়ণের দায়িত্ব থাকে আমার উপর। আমার ঠাম্মা, দিদা ভীষণ ভাল রান্না করতেন। ছোটবেলা থেকেই ওঁদের রান্না খুব ভালবাসতাম। আমার রান্নায় সেই স্বাদ আনার চেষ্টা করি।
এই বছর পুজোয় খাওয়াদাওয়ার তালিকায় থাকছে ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচুশাক, ভেটকির কাঁটার চচ্চড়ি। এই মাছগুলো যে বাঙালির কত প্রিয়, তা নিশ্চয়ই আলাদা করে বলে দিতে হবে না! এর সঙ্গে নবমীতে তো পোলাও আর খাসির মাংস হতেই হবে। আবার চিংড়ির মালাইকারি ছাড়াও পুজোর খাওয়াদাওয়া জমে না। অবশ্য অষ্টমীতে এখনও মায়ের হাতের খিচুড়ির অপূর্ব স্বাদেই আমরা ডুবে থাকি। সঙ্গে পাঁচ রকমের ভাজা, ছানার ডালনা, নারকেলের দুধ দিয়ে পটলের দোলমা। আহা! ভাবলেই ভাল লাগে!
এ ছাড়া পাটিসাপটা, সিমাইয়ের পায়েস, আর বিভিন্ন রকমের নাড়ু তো আছেই। শুভ দিনে মিষ্টমুখ ছাড়া কি চলে?
বাঙালদের প্রিয় একটি খাবার ভেটকি মাছের কাঁটা চচ্চড়ি কী ভাবে তৈরি করতে হয়, সেই পদ্ধতি বলছি।
কী কী লাগবে: ভেটকি মাছের বড় কাঁটা আলাদা করে নিতে হবে। এছাড়াও নুন, হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো, পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, আদা বাটা, টম্যাটো পেস্ট, কাঁচালঙ্কা, জিরে গুঁড়ো, ৩/৪ কাপ ফোটানো জল, ধনেপাতা, ভাজার জন্য তেল।
কী ভাবে বানাবেন: ভেটকি মাছের বড় কাঁটা নুন, হলুদ, এবং লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে ম্যারিনেট করে আধ ঘন্টা রেখে দিতে হবে। তারপর তেলে সেই ম্যারিনেট করা কাঁটাগুলো ভেজে নিতে হবে। ভাল মতো ভাজা হয়ে গেলে কাঁটাগুলো পাশে রেখে ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, আদা বাটা ভাল করে কষে নিতে হবে। তার মধ্যে টম্যাটো পেস্ট করে দিলে খুব ভাল হয়। এর পর মাঝখান থেকে চিরে কাঁচালঙ্কা দিয়ে দিতে পারেন স্বাদের জন্য। শেষে জিরে গুঁড়ো দিয়ে মশলাটাকে ভাল করে কষতে দিতে হবে। যখন তেলটা ছেড়ে যাবে, বুঝবেন ভাল মতো কষা হয়ে গেছে। কষা হয়ে গেলে তিন থেকে চার কাপ ফোটানো জল এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। তার পর এর মধ্যে সেই ভেজে রাখা কাঁটাগুলো দিয়ে দেবেন। যেহেতু কাঁটা, সে কারণে একটু নরম করার জন্য বেশি ক্ষণ ফোটাতে হবে। যখন বুঝবেন হালকা সেদ্ধ হয়ে এসেছে, উপর থেকে ধনেপাতা ছড়িয়ে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy