প্রতীকী ছবি।
কলকাতার দুর্গাপুজো সব সময়েই একটি প্রাণবন্ত স্পন্দনশীল চিত্র। এবং এই স্পন্দনের সঙ্গে যখন বনেদি বাড়ির ঐতিহ্য, ইতিহাস আর সম্পর্কগুলি জুড়ে যায়, তখন ছবিটা শুধু খিচুড়ি আর লাবড়ার রোমান্টিকতায় আটকে থাকে না— বরং সেখানে অনেক বেশি রং এবং গভীরতা চলে আসে ফ্রেমের মধ্যে।
খিচুড়ির কথা উঠলে যেটা প্রথমেই বলার, যে কলকাতার বনেদি বাড়ির ভোগের তালিকা একদমই খিচুড়িতে থেমে থাকে না। বরং, খিচুড়ি একটা সুবিশাল তালিকার একটি পরিচিত নাম মাত্র। অনেক বনেদি বাড়ির পুজোয়, এই মহোৎসবের সময়টা শুধু বিগত বছরের স্মারক হিসেবে ধরা দেয় না, বরং এই সময়টিই তাদের কাছে নিজেদের বাড়িতে ফেরার উত্সবের প্রতীক। তা এমন আনন্দের সময়ে খাদ্যরসিক বাঙালির হেঁশেলে শুধু খিচুড়ি স্থান পাবে, এমনও কি সম্ভব? আর উত্সব ও বাঙালি একসঙ্গে এলে যে মিষ্টান্নর প্রভূত ছড়াছড়ি হবে, এ তো বলাই বাহুল্য। মিষ্টি মানে সেখানে পায়েসের তো একটা আলাদা স্থান থাকবেই। দেখে নেওয়া যাক, বিভিন্ন বনেদি বাড়ির পায়েসের আখ্যান।
রাজা রামব্রহ্ম রায়চৌধুরীর স্বপ্নে ১৬৮৫ সালে যেই দুর্গা পুজোর উৎপত্তি, সেই শিবপুর রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো আজও বহাল তবিয়তে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতিকে ধরে রেখেছে শহরের আধুনিক পুজোর মানচিত্রে। মা দুর্গার সামনে রাখা বিভিন্ন খাদ্যের মধ্যে নিরামিষ আমিষ নির্বিশেষে অন্যতম হচ্ছে কলার বড়ার পায়েস। চালের পয়েসে ডোবানো কল আর নাড়কোলের এই অভূতপূর্ব মিষ্টান্নটি স্বাভাবিক কারণেই বছরের পর বছর ধরে প্রতিদিন ভোগ হিসেবে দেবীর সামনে দেওয়া হয় পুজোর সময়ে।
রান্নার সময়
১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট
রান্নার ধরণ
মিষ্টান্ন
উপকরণ
কলার বড়ার জন্যে:
পায়েসের জন্যে:
প্রণালী
কলার বড়ার জন্যে:
১. গুঁড়ো করা নারকেল আর গুড় নিয়ে আঁচ দিয়ে ৭-৮ মিনিট ধরে পাত্রে নাড়ুন, তারপর নামিয়ে নিয়ে ঠান্ডা হতে রেখে দিন।
২. একটি বাটিতে কলামাখা নিয়ে তার মধ্যে নারকেল-গুড়ের মিশেল আর ময়দা দিন। ভাল করে নাড়ুন, হাল্কা জল দিন একটি গাঢ় ব্যাটারের মতো মিশ্রণ তৈরি হওয়া পর্যন্ত।
৩. ভাজার জন্য তেল গরম করুন। তারপর সাবধানে ব্যাটারটিকে একটু একটু করে তেলের মধ্যে নামান, ভাজুন যতক্ষণ পর্যন্ত একটি খয়েরি সোনালি রং না হয়। রং এলে নামিয়ে রেখে দিন।
কলার বড়ার পায়েস:
১. কিশমিশকে জলে ভিজিয়ে রাখুন।
২. চালকে ১৫ মিনিটের জন্য জলে ভিজিয়ে রেখে তারপর জলটা ফেলে দিয়ে শুকনো করে রাখুন।
৩. দুধটা একটি পাত্রে মাঝারি আঁচে ঢেলে তেজপাতা আর এলাচ গুঁড়ো যোগ করে ১৫-২০ মিনিটের জন্য রাঁধুন।
৪. দুধের মধ্যে চাল দিয়ে দিন, মাঝারি আঁচে রেখে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না চালটা সিদ্ধ হচ্ছে।
৫. কাজু আর কিশমিশ যোগ করে দুধটি নাড়তে থাকুন। ৮-১০ মিনিট ধরে রেখে দিন যতক্ষণ না মিশ্রণটি আরও গাঢ় হয়ে উঠেছে।
৬. এ বার কলার বড়া দিয়ে ঢেকে দিয়ে দু’মিনিটের জন্য রেখে দিন।
৭. আঁচ বন্ধ করে দিয়ে গ্রেট করা গুড় দিয়ে দিন, তারপর নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না গুড়টি সম্পূর্ণভাবে দুধে মিশে যায়। ঠান্ডা হতে দিন। পরিবেশন করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy