ছোট থেকেই আঁকতে খুব ভালবাসতাম। আমার কাছে লক্ষ্মীপুজো মানে, নিজে হাতে আলপনা দেওয়াটাই ছিল আমার খুব পছন্দের একটা দায়িত্ব। এমনকি এখনও এই অভ্যাসটা হারিয়ে যেতে দিইনি। শুধু লক্ষ্মীপুজো বলে নয়, বাড়ির যে কোনও অনুষ্ঠান বা পুজোর দিনে আলপনাটা নিজে হাতেই দিই। তবে খুব বেশি প্রচার করি না। এই বছরের লক্ষ্মীপুজোতে আমি কলকাতায় নেই যদিও। ভেবেছিলাম, একেবারে পুজোটা কলকাতায় কাটিয়েই ছুটি কাটাতে বাইরে কোথাও যাব। এই মুহূর্তে কলকাতার বাইরে রয়েছি আমি। তবে এই বছর লক্ষ্মীপুজো নিয়ে একটা পরিকল্পনা ছিল আমার। কিন্তু একটা বিশেষ কারণে তা আর বাস্তবায়ন হয়ে ওঠেনি। ভাবছেন, কী সেই বিশেষ কারণ? না, এই মুহূর্তে সেটা টপ সিক্রেট!
তবে আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হয়। আমাদের বাড়ি আবার খাঁটি বাঙাল। নাড়ু ছাড়া যেন পুজো অসম্পূর্ণ! পুজোর জন্য যে নাড়ু আর মোয়া বানানো হয়, তা এক মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। যদিও আমার দাদু গত হওয়ার পর থেকে এই বিষয়টা একটু কমে গিয়েছে। এ ছাড়া ছোট থেকে বড়মাকেও দেখেছি নিষ্ঠাভরে পুজোর দায়িত্ব সামলাতে, নাড়ু বানাতে। ছোট থেকে আমার যৌথ পরিবারে বড় হওয়া। যে কোনও উৎসবে বাড়ির আমেজটাই অন্যরকম ছিল। নতুন করে অনুষ্ঠানের দরকার হত না আমাদের। কেউ সামান্য টিভি কিনলেও একসঙ্গে বসে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা চলত। এখন আর থাকা হয় না সেখানে। দেখা যাক পরের বছর কী হয়!
এমনিতেও এই বছর পুজোর আমেজটা একটু অন্যরকম। মানুষের মন-মেজাজও ভাল নেই তেমন। তাই পরের বছরের অপেক্ষাতেই রয়েছি ভাল ভাবে পুজো করার জন্য। না, অভিমান নিয়ে কথাটা লিখছি না যে এই বছরটা কেন এমন! আসলে মানুষের থিতু হতেও তো একটু সময় লাগে। আশপাশের পরিবেশ স্বাভাবিক ছন্দে না ফেরা পর্যন্ত খুব একটা হই হট্টগোল করতে মন চাইছে না। আমার কাছে মাতৃপুজোর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের আশেপাশের মানুষের ভাল থাকা। এই তো সবে শুরু, সারা বছর পড়ে রয়েছে উৎসবের জন্য। এমন একটা পরিবেশ চাইছি, যেখানে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠার আগে মানুষকে যেন অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে না হয়।
এই বছর মায়ের থেকেও এটাই চাইব। আলাদা করে আমার নিজের জন্য চাওয়ার কিছু নেই। মা যা দিয়েছেন আমাকে, তা অনেক। যদি কিছু চাইতেই হয় নিজের জন্য, তাহলে আমি চাইব মায়ের থেকে যা পেয়েছি, তা যেন সৎ ভাবে, সঠিক জায়গায় কাজে লাগাতে পারি। আর সেইগুলো নিয়েই যেন জীবনে খুশি থাকতে পারি এবং অন্যদের খুশি রাখতে পারি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy