দুর্গাপুজো আমার কাছে কোনও আলাদা মানে রাখে না। আমেদাবাদে বড় হয়েছি। তখন ছোটবেলায় একটু বাবা-মায়ের সাথে প্যান্ডেলে যাওয়া, নতুন জামা পরা, এ গুলো ছিল। তার পর যখন অনেকটাই বড় হলাম এবং মুম্বইয়ে এসে চুটিয়ে মডেলিংয়ের কাজ করতাম, তার পরে ধীরে ধীরে ছবিতে যাওয়া এবং এই যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা, বাংলায় এসে কাজ করা, এই যে হিরো হয়ে উঠলাম— এই পুরো সময়টার মধ্যে আমার জীবনে কোথাও কোনও দুর্গা পুজো ছিল না।
ভিড়, হইচই, মানুষের চেঁচামেচি, উল্লাস আমাকে কোনও দিন টানে না। আমি খুব একটা সামাজিক জীব নই। আমি বরঞ্চ একা থাকতে, মানে নিজের মতো থাকতে, ছোট্ট পরিসরে বাঁচতে ভালবাসি। কোথাও হয়তো গেলাম, সেখানে হয়তো একটু গান গাইলাম, কোথাও গিয়ে ছবি তুললাম—এ সবই বেশি ইচ্ছে করে। সুতরাং দুর্গা পুজোয় সে ভাবে কিছু নেই আমার মধ্যে। আগেও যে ছিল, তেমন নয়। কলকাতায় যখন যাই, যখন বন্ধুদের মধ্যে আড্ডা হয়।
সবাই গান গায় এখন! ফলত, তখন না, আড্ডায় বসে আমি নিজেকে একটু গুটিয়ে নিই। কারণ, মুম্বইয়ে বন্ধুদের মধ্যে গান গাইলাম, লোকে বলল, বেশ ভাল তো, তুই এত ভাল গান গাইতে পারিস, জানতাম না তো!
তো কলকাতায় গিয়ে দেখি, সবাই তো সবই পারে, সবই করে, তখন আর নিজের আলাদা করে গান গাওয়ার ইচ্ছেটা আর থাকে না।
এখন যেমন আমার জীবনে মীরা আসার পর, আমার মেয়ে, ওকে দু-একবার মুম্বইয়ে চেষ্টা করেছিলাম প্যান্ডেলে নিয়ে যাওয়ার। দুর্গাপুজো কী, কিংবা সেটা নিয়ে ওর যদি কোনও সূত্র তৈরি হয়! দেখি যে, ওরও কোনও আগ্রহ নেই। বরং ও কারওয়া-তে গর্বা নাচ যেটা হয়, সেই খানে দেখেছি, পারফর্ম করতে অনেক বেশি উৎসাহ পায়। ফলত, আমার পরবর্তী যে প্রজন্ম, আমার মেয়ে, তারও কোনও উৎসাহ না থাকায়, তাকে নিয়ে যে বেরবো, ঠাকুর দেখব, বা প্যান্ডেলে যাব, এই বিষয়টা আমার একদমই নেই।
আমি খেতে খুব ভালবাসি। তবে আমিষ, নিরামিষ নয়। এক দিন এটাই ছিল। এখন দেখছি, একটু যেন স্বাদ বদল হয়েছে। আগে শুক্তো খেতাম না। মা রান্না করত। তা’ও খেতাম না। কিন্তু এখন মায়ের হাতের শুক্তো খেতে আমার খুব ভাল লাগে।
এবারও আমি অবশ্যই পুজোয় কলকাতায় থাকব না। খুব যে থেকেছি বলেও মনে হয় না। ছবির কাজ ছাড়া মুম্বইতেই থাকব। তবে হ্যাঁ, একটা জিনিস আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি গান ভালবাসি। এই লেখাটার আগেও আমি গুনগুন করে গান গাইছিলাম। একটা প্যাসেজ দিয়ে হাঁটছিলাম একটা জায়গায়।
তা হঠাৎ করে একটা বাচ্চা ছেলে, বছর কুড়ি বয়স, বড়জোর, আমাকে বলল, ‘রেট্রো?’ জিজ্ঞেস করল আমাকে। আমি খুব অবাক হলাম! আমি গাইছিলাম কুমার শানুর একটা গান। তো আমি ভাবলাম, কুমার শানুর গান রেট্রো হয়ে গেল!
দুর্গাপুজোয় মুম্বইয়ে থাকলে শানদা বা অভিজিৎদার পুজোতে আমি যাই। গান বাজনা হয়। শুনি। দুর্গাপুজোর কথা বলতে গেলে, এটাই আমার মনে আসে। আমাদের যারা পছন্দের গায়ক, তাঁদের মধ্যে যাঁরা পুজো করেন, আমাকে ডাকেন, সেই জমায়েতে আমি যাওয়ার চেষ্টা করি।
একটা কথা বলি, ওই দুর্গাপুজো মানেই বাঙালির একটা বিরাট ব্যাপার, এইটা কিন্তু আমার মধ্যে আমি পাই না। আর এই যে আমি ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় করছি, সেই সূত্রে বলি, আমার মনে হয়, উনিও দুর্গাপুজোয় থাকতেন কখনও, কখনও, কিন্তু সেটা নিজের মতো করেই থাকতেন। যদি কোনও রহস্য তৈরি হত দুর্গাপুজো নিয়ে, আমার ধারণা তখন তিনি অবশ্যই তার মধ্যে চলে যেতেন। হাতের কাছেই এমন উদাহরণ আছে, 'জয়বাবা ফেলুনাথ'-এ!
'কহানি' ছবিটা যখন করেছিলাম, তখন কলকাতায় ছিলাম। তখন দেখেছিলাম, দুর্গাপুজোয় মানে, আলোড়ন! ব্যস, এটুকুই। এর বেশি দুর্গাপুজো নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy